চাঁপাইনবাবগঞ্জে চাঞ্চল্যকর দুই কিশোর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় হত্যার রহস্য উদঘাটনের কথা জানিয়েছে পুলিশ। জয় বাংলা স্লোগান নয়, দুই কিশোর গ্রুপের বিরোধের জেরেই ঘটেছে হত্যাকাণ্ড। দুই কিশোর হত্যার ঘটনায় হত্যাকাণ্ডে জড়িত অন্যতম প্রধান দুই আসামিকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
রোববার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয় মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান পুলিশ সুপার রেজাউল করিম।
পুলিশ সুপার জানান, গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর রাতে নাচোল উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের মল্লিকপুর হাটে বিজয় দিবসের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নাচানাচিকে কেন্দ্র করে কিশোর তামিমসহ কয়েকজন কিশোরের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে এই মারামারি পার্শ্ববর্তী টিনশেডের মাছবাজারে গিয়ে সংঘটিত হয়। এ সময় গ্রেফতার শাহীন নিজেকে রক্ষা করতে গিয়ে তার পকেটে থাকা আপেল কাটা একটি ছুরি দিয়ে অন্ধকারে এলোপাতাড়ি আঘাত করতে থাকলে ঘটনাস্থলেই মাসুদ ও রায়হান নামে ২ কিশোর নিহত এবং অপর ৪ জন আহত হয়। এরপর থেকে অভিযুক্তরা গা-ঢাকা দেয়।
এ ঘটনায় পরদিন ১৮ ডিসেম্বর নিহত মাসুদের পিতা এজাবুল হক বাদী হয়ে ১০ জনকে আসামি করে নাচোল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে মামলাটি জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল ঢাকা জেলার সাভার থেকে হত্যা মামলার ১নং আসামি শাহীন রেজা (২২) এবং ৭নং আসামি সামাদ আলীকে (৩০) ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা থেকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ সুপার আরও জানান, গ্রেফতারকৃত শাহীনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনাস্থলের পাশে ময়লার স্তূপ থেকে এলাকাবাসীর উপস্থিতিতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকুটি উদ্ধার করে। এ মামলায় এখন পর্যন্ত ৪ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে গ্রেফতারকৃত শাহীন রোজা।
পুলিশ সুপার জানান, হত্যাকাণ্ডের আধঘণ্টার মধ্যে একটি নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হত্যাকাণ্ডটিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে ফেসবুকসহ সামাজিকমাধ্যমে প্রোপাগান্ডা ছড়ায়। জয় বাংলা স্লোগান দেয়ালে লেখাকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ডের দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। এ হত্যাকাণ্ডে কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি বলে জানান এসপি।