ঢাকা ০৪:১৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ২৬ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
মৃত্যুর দুই দিন পর জহুর আলীর মরদেহ হস্তান্তর করল বিএসএফ বোরহানউদ্দিনে‘তারুণ্যের ভাবনায় আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত পবিপ্রবির রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য হলেন বিখ্যাত আইটি বিশেষজ্ঞ শরফুদ্দিন দক্ষিণ মুগদা থানা ৭১ নং ওয়ার্ড যুবদলের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত নির্বাচিত সরকার ছাড়া কোনো সংস্কারের বৈধতা আমরা দিতে পারব না: ফখরুল জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে যে পদক্ষেপের কথা জানালেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম কুমিল্লায় কিশোর গ্যাংয়ের ৭ সদস্য গ্রেফতার কোনো দল-গোষ্ঠী-ব্যক্তিকে সহযোগিতা করতে মাঠে নামিনি: সিইসি আনিসুল হক আরেক মামলায় গ্রেফতার চান্দিনায় মারুতির পেছনে বাসের ধাক্কায় শিশুর মৃত্যু,অন্তঃসত্ত্বা মা সহ আহত ৩

ভাটারা আ.লীগের অবস্থান, নেতা বললেন ‘জীবন বাজি রেখে রাজপথে আছি থাকব’

রাজধানীর ভাটারা থানার কুড়িলে প্রায় ২০০ কর্মী নিয়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থান করেছেন ভাটারা থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. ইসহাক মিয়া।

শুক্রবার জুমার নামাজের পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অবস্থান করেন তারা। রাজপথে অবস্থান করলেও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বলে পাওয়া গেল ভিন্ন চিত্র। কিছুটা আশঙ্কা ও সংশয় নিয়েই অবস্থান করছিলেন অনেকে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘোষিত ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচিতে প্রগতি সরণি এলাকা থেকে রামপুরা পর্যন্ত প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে এই সড়কে ব্যাপক সহিংসতার খবর পাওয়া যায়। এই সড়কের কুড়িল থেকে নর্দ্দা (জগন্নাথপুর) পর্যন্ত সড়কের পূর্ব পাশ ১৭ নম্বর ওয়ার্ড।

ভাটারা থানা আওয়ামী লীগের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা কার্যনির্বাহী সদস্য এল রহমান হালীম যুগান্তরকে বলেন, গত ১৮ জুলাই ভয়ঙ্কর একটা পরিস্থিতির মুখোমুখি হই আমরা। এই ওয়ার্ডের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা এই আন্দোলনের সবচেয়ে উত্তপ্ত অংশটির মুখোমুখি হয়েছিল সেদিন। যার দরুণ নেতাকর্মীদের মধ্যে কিছুটা সংশয় তৈরি হয়। এর মূল কারণ কমিটি গঠনের সময় রাজপথের লড়াকু এবং ত্যাগী কর্মীদের কোনো মূল্যায়ন না করা। টাকার বিনিময়ে কমিটি দেওয়া হয়। যার কারণে ত্যাগী নেতাকর্মীরা রাগ করে সাংগঠনিক কাজে আসে না। ১৮ জুলাইয়ের পর থেকে চিন্তায় রাতে ঠিকমতো ঘুমাতে পারি না। অনৈক্যের সুযোগে এই সরকারের পতন হলে আমাদের কী হবে- এই চিন্তা থেকে ঘুমের ব্যাঘাত হচ্ছে না বরং আমি চিন্তা করি দেশটাকে নিয়ে যে নেত্রীর সব ভাবনা সেই জননেত্রীর কিছু হলে আমি বাঁচব না।

১৮ জুলাইয়ের পর কর্মীদের মনোভাব নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, কিছু কিছু কর্মীর মধ্যে ভীতি কাজ করছে। অসুস্থের অজুহাত, ঢাকায় বাইরে থাকার অজুহাত, চাকরি ব্যবসায় ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে কর্মসূচিতে আসতে অনীহা দেখাচ্ছে। তবে এর বিপরীত চিত্রও আছে। এতদিন যারা সংগঠনের ওপর রাগ করেছিলেন সেসব ত্যাগী নেতারা নিজেরা এসে যোগাযোগ করছেন নেত্রীর এই সংকটকালীন সময়ে।

১৭ নম্বর ওয়ার্ডের আরেক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে যুগান্তরকে বলেন, আমি আমার স্ত্রী-সন্তান ও মাসহ একসঙ্গে থাকি। কোটা সংস্কার আন্দোলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘোষিত ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির পর থেকে আমার মা ও স্ত্রী সংগঠনের কাজে বের হতে দিচ্ছে না। সংগঠনের কর্মসূচিতে যাচ্ছি শুনলেই হাউমাউ করে কান্নাকাটি করে পথরুদ্ধ করে। জুমার নামাজে বের হওয়ার সময় মেয়েটা জড়াইয়া ধরে বলে বাবা তোমার কিছু হলে আমরা বাঁচব না। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে ভয়ঙ্কর মানসিক চাপে আছি। কেন্দ্রীয় নেতাদের উচিত দ্রুত এর রাজনৈতিক সমাধান করা। যেসব লক্ষণ দেখতেছি তাতে মনে হয় সামনের সময় আরও ভয়ঙ্কর হতে পারে।

অবস্থান কর্মসূচিতে নেতৃত্বে দেওয়া ভাটারা থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও কাউন্সিলর মো. ইসহাক মিয়া যুগান্তরকে বলেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবেই আমরা রাজপথে শান্তিপূর্ণ অবস্থান করছি। জামায়াতে ইসলামকে নিষিদ্ধ করায় আমরা অত্যন্ত খুশি। তারা যাতে কোনো বিশৃঙ্খলতা না করতে পারে এজন্যই আমাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান।

কর্মীদের মনোভাব কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন, দলে সঠিক মূল্যায়ন না হওয়ায় রাগ, অভিমান, ক্ষোভ কিছুটা তো আছেই। পাশাপাশি ১৮ জুলাইয়ের কিছু কর্মী ভীতিতে পড়েছে এটা অস্বীকার করি কিভাবে। তবে আমরা জীবন বাজি রেখে রাজপথে ছিলাম, আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকব।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মৃত্যুর দুই দিন পর জহুর আলীর মরদেহ হস্তান্তর করল বিএসএফ

ভাটারা আ.লীগের অবস্থান, নেতা বললেন ‘জীবন বাজি রেখে রাজপথে আছি থাকব’

আপডেট সময় ১০:৫৬:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ অগাস্ট ২০২৪

রাজধানীর ভাটারা থানার কুড়িলে প্রায় ২০০ কর্মী নিয়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থান করেছেন ভাটারা থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. ইসহাক মিয়া।

শুক্রবার জুমার নামাজের পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত অবস্থান করেন তারা। রাজপথে অবস্থান করলেও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বলে পাওয়া গেল ভিন্ন চিত্র। কিছুটা আশঙ্কা ও সংশয় নিয়েই অবস্থান করছিলেন অনেকে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘোষিত ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচিতে প্রগতি সরণি এলাকা থেকে রামপুরা পর্যন্ত প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে এই সড়কে ব্যাপক সহিংসতার খবর পাওয়া যায়। এই সড়কের কুড়িল থেকে নর্দ্দা (জগন্নাথপুর) পর্যন্ত সড়কের পূর্ব পাশ ১৭ নম্বর ওয়ার্ড।

ভাটারা থানা আওয়ামী লীগের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা কার্যনির্বাহী সদস্য এল রহমান হালীম যুগান্তরকে বলেন, গত ১৮ জুলাই ভয়ঙ্কর একটা পরিস্থিতির মুখোমুখি হই আমরা। এই ওয়ার্ডের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা এই আন্দোলনের সবচেয়ে উত্তপ্ত অংশটির মুখোমুখি হয়েছিল সেদিন। যার দরুণ নেতাকর্মীদের মধ্যে কিছুটা সংশয় তৈরি হয়। এর মূল কারণ কমিটি গঠনের সময় রাজপথের লড়াকু এবং ত্যাগী কর্মীদের কোনো মূল্যায়ন না করা। টাকার বিনিময়ে কমিটি দেওয়া হয়। যার কারণে ত্যাগী নেতাকর্মীরা রাগ করে সাংগঠনিক কাজে আসে না। ১৮ জুলাইয়ের পর থেকে চিন্তায় রাতে ঠিকমতো ঘুমাতে পারি না। অনৈক্যের সুযোগে এই সরকারের পতন হলে আমাদের কী হবে- এই চিন্তা থেকে ঘুমের ব্যাঘাত হচ্ছে না বরং আমি চিন্তা করি দেশটাকে নিয়ে যে নেত্রীর সব ভাবনা সেই জননেত্রীর কিছু হলে আমি বাঁচব না।

১৮ জুলাইয়ের পর কর্মীদের মনোভাব নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, কিছু কিছু কর্মীর মধ্যে ভীতি কাজ করছে। অসুস্থের অজুহাত, ঢাকায় বাইরে থাকার অজুহাত, চাকরি ব্যবসায় ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে কর্মসূচিতে আসতে অনীহা দেখাচ্ছে। তবে এর বিপরীত চিত্রও আছে। এতদিন যারা সংগঠনের ওপর রাগ করেছিলেন সেসব ত্যাগী নেতারা নিজেরা এসে যোগাযোগ করছেন নেত্রীর এই সংকটকালীন সময়ে।

১৭ নম্বর ওয়ার্ডের আরেক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে যুগান্তরকে বলেন, আমি আমার স্ত্রী-সন্তান ও মাসহ একসঙ্গে থাকি। কোটা সংস্কার আন্দোলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘোষিত ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির পর থেকে আমার মা ও স্ত্রী সংগঠনের কাজে বের হতে দিচ্ছে না। সংগঠনের কর্মসূচিতে যাচ্ছি শুনলেই হাউমাউ করে কান্নাকাটি করে পথরুদ্ধ করে। জুমার নামাজে বের হওয়ার সময় মেয়েটা জড়াইয়া ধরে বলে বাবা তোমার কিছু হলে আমরা বাঁচব না। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে ভয়ঙ্কর মানসিক চাপে আছি। কেন্দ্রীয় নেতাদের উচিত দ্রুত এর রাজনৈতিক সমাধান করা। যেসব লক্ষণ দেখতেছি তাতে মনে হয় সামনের সময় আরও ভয়ঙ্কর হতে পারে।

অবস্থান কর্মসূচিতে নেতৃত্বে দেওয়া ভাটারা থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও কাউন্সিলর মো. ইসহাক মিয়া যুগান্তরকে বলেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবেই আমরা রাজপথে শান্তিপূর্ণ অবস্থান করছি। জামায়াতে ইসলামকে নিষিদ্ধ করায় আমরা অত্যন্ত খুশি। তারা যাতে কোনো বিশৃঙ্খলতা না করতে পারে এজন্যই আমাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান।

কর্মীদের মনোভাব কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন, দলে সঠিক মূল্যায়ন না হওয়ায় রাগ, অভিমান, ক্ষোভ কিছুটা তো আছেই। পাশাপাশি ১৮ জুলাইয়ের কিছু কর্মী ভীতিতে পড়েছে এটা অস্বীকার করি কিভাবে। তবে আমরা জীবন বাজি রেখে রাজপথে ছিলাম, আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকব।