ঢাকা ০৪:১৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ২৬ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
মৃত্যুর দুই দিন পর জহুর আলীর মরদেহ হস্তান্তর করল বিএসএফ বোরহানউদ্দিনে‘তারুণ্যের ভাবনায় আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত পবিপ্রবির রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য হলেন বিখ্যাত আইটি বিশেষজ্ঞ শরফুদ্দিন দক্ষিণ মুগদা থানা ৭১ নং ওয়ার্ড যুবদলের কর্মীসভা অনুষ্ঠিত নির্বাচিত সরকার ছাড়া কোনো সংস্কারের বৈধতা আমরা দিতে পারব না: ফখরুল জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে যে পদক্ষেপের কথা জানালেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম কুমিল্লায় কিশোর গ্যাংয়ের ৭ সদস্য গ্রেফতার কোনো দল-গোষ্ঠী-ব্যক্তিকে সহযোগিতা করতে মাঠে নামিনি: সিইসি আনিসুল হক আরেক মামলায় গ্রেফতার চান্দিনায় মারুতির পেছনে বাসের ধাক্কায় শিশুর মৃত্যু,অন্তঃসত্ত্বা মা সহ আহত ৩

কাউখালীতে ঘুমন্ত স্ত্রী-শাশুড়িকে নৃশংসভাবে হত্যা, স্বামী গ্রেফতার

রাঙামাটি জেলার কাউখালীতে ঘুমন্ত অবস্থায় স্ত্রী ও শাশুড়িকে লোহার শাবল দিয়ে খুঁচিয়ে ও জবাই করে নৃশংসভাবে হত্যার অভিযোগে বিল্লাল হোসেনকে (৩৫) পুলিশে সোপর্দ করেছেন এলাকাবাসী।

বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে কাউখালী উপজেলা সদরের নিকটবর্তী খাশখালী গ্রামে এ নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটে। নিহতরা হলেন ফাতেমা আক্তার (২৬) ও তার মা আয়েশা খাতুন (৬১)।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, কাউখালী উপজেলার খাশখালী গ্রামের মৃত আবদুর রশিদের মেয়ে ফাতেমার সঙ্গে বিল্লালের বিয়ে হয় প্রায় তিন বছর আগে। বিল্লাল কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানার বাইরা এলাকার মৃত আনজু মিয়ার ছেলে। বিয়ের পর ফাতেমা শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন। তাদের সংসারে দুই বছরের একটি শিশুসন্তান আছে। বিয়ের পর থেকে বিল্লাল হোসেন স্ত্রী ফাতেমার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন বলে জানান প্রতিবেশীরা।

স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে দুই মাস আগে কাউখালীর খাশখালী এলাকায় বসবাসরত মায়ের কাছে চলে আসেন ফাতেমা। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ২৯ জুলাই সামাজিকভাবে কাজি অফিসের মাধ্যমে স্ত্রী ফাতেমাকে তালাক দেন বিল্লাল হোসেন; কিন্তু তাতেও ক্ষান্ত হননি তিনি। এর একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে বৃহস্পতিবার বিকালে কুমিল্লা থেকে কাউখালীর শ্বশুরবাড়ি আসেন ঘাতক বিল্লাল। এ সময় স্ত্রী ও শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে তুমুল ঝগড়াঝাঁটি হয় তার।

পরে তিনি শ্বশুরবাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়ে পাশের এক নির্জন স্থানে ওতপেতে থাকেন। গভীর রাতে ঘরের পেছনে মাটি খুঁড়ে ভেতরে ঢুকে ঘুমন্ত অবস্থায় লোহার শাবল দিয়ে এলোপাতাড়ি খুঁচিয়ে ও জবাই করে নৃশংসভাবে স্ত্রী ও শাশুড়িকে হত্যা করে পালিয়ে যায় পাষণ্ড বিল্লাল।

এ সময় ঘরে থাকা তার শিশুসন্তান মো. বাইতুল্লাহ চিৎকার করে কান্নাকাটি শুরু করলে প্রতিবেশী জনৈকা রোকেয়া বেগম তাৎক্ষণিক ঘটনার বিষয়ে স্থানীয় লোকজনকে খবর দেন। খবর পেয়ে ঘাতক বিল্লাল হোসেনকে পালিয়ে যাওয়ার সময় পাশের বেতছড়ির পাইনবাগান এলাকা থেকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন স্থানীয়রা। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।

কাউখালী থানার ওসি রাজীব চন্দ্র কর বলেন, এ ঘটনায় কাউখালী থানায় হত্যা মামলা করা হয়েছে। ওই দুজনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিক কলহের জেরে এ জোড়া হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় নিহত ফাতেমা আক্তারের ভাই মো. ইসমাইল বাদী হয়ে কাউখালী থানায় হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় আটক বিল্লাল হোসেনকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে চালান দেওয়া হয়েছে।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মৃত্যুর দুই দিন পর জহুর আলীর মরদেহ হস্তান্তর করল বিএসএফ

কাউখালীতে ঘুমন্ত স্ত্রী-শাশুড়িকে নৃশংসভাবে হত্যা, স্বামী গ্রেফতার

আপডেট সময় ১০:৫৩:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২ অগাস্ট ২০২৪

রাঙামাটি জেলার কাউখালীতে ঘুমন্ত অবস্থায় স্ত্রী ও শাশুড়িকে লোহার শাবল দিয়ে খুঁচিয়ে ও জবাই করে নৃশংসভাবে হত্যার অভিযোগে বিল্লাল হোসেনকে (৩৫) পুলিশে সোপর্দ করেছেন এলাকাবাসী।

বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে কাউখালী উপজেলা সদরের নিকটবর্তী খাশখালী গ্রামে এ নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটে। নিহতরা হলেন ফাতেমা আক্তার (২৬) ও তার মা আয়েশা খাতুন (৬১)।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, কাউখালী উপজেলার খাশখালী গ্রামের মৃত আবদুর রশিদের মেয়ে ফাতেমার সঙ্গে বিল্লালের বিয়ে হয় প্রায় তিন বছর আগে। বিল্লাল কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর থানার বাইরা এলাকার মৃত আনজু মিয়ার ছেলে। বিয়ের পর ফাতেমা শ্বশুরবাড়িতে থাকতেন। তাদের সংসারে দুই বছরের একটি শিশুসন্তান আছে। বিয়ের পর থেকে বিল্লাল হোসেন স্ত্রী ফাতেমার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন বলে জানান প্রতিবেশীরা।

স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে দুই মাস আগে কাউখালীর খাশখালী এলাকায় বসবাসরত মায়ের কাছে চলে আসেন ফাতেমা। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ২৯ জুলাই সামাজিকভাবে কাজি অফিসের মাধ্যমে স্ত্রী ফাতেমাকে তালাক দেন বিল্লাল হোসেন; কিন্তু তাতেও ক্ষান্ত হননি তিনি। এর একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে বৃহস্পতিবার বিকালে কুমিল্লা থেকে কাউখালীর শ্বশুরবাড়ি আসেন ঘাতক বিল্লাল। এ সময় স্ত্রী ও শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে তুমুল ঝগড়াঝাঁটি হয় তার।

পরে তিনি শ্বশুরবাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়ে পাশের এক নির্জন স্থানে ওতপেতে থাকেন। গভীর রাতে ঘরের পেছনে মাটি খুঁড়ে ভেতরে ঢুকে ঘুমন্ত অবস্থায় লোহার শাবল দিয়ে এলোপাতাড়ি খুঁচিয়ে ও জবাই করে নৃশংসভাবে স্ত্রী ও শাশুড়িকে হত্যা করে পালিয়ে যায় পাষণ্ড বিল্লাল।

এ সময় ঘরে থাকা তার শিশুসন্তান মো. বাইতুল্লাহ চিৎকার করে কান্নাকাটি শুরু করলে প্রতিবেশী জনৈকা রোকেয়া বেগম তাৎক্ষণিক ঘটনার বিষয়ে স্থানীয় লোকজনকে খবর দেন। খবর পেয়ে ঘাতক বিল্লাল হোসেনকে পালিয়ে যাওয়ার সময় পাশের বেতছড়ির পাইনবাগান এলাকা থেকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন স্থানীয়রা। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।

কাউখালী থানার ওসি রাজীব চন্দ্র কর বলেন, এ ঘটনায় কাউখালী থানায় হত্যা মামলা করা হয়েছে। ওই দুজনের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিক কলহের জেরে এ জোড়া হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় নিহত ফাতেমা আক্তারের ভাই মো. ইসমাইল বাদী হয়ে কাউখালী থানায় হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় আটক বিল্লাল হোসেনকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে চালান দেওয়া হয়েছে।