স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আলাদা আলাদা কর্মসূচি নিয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর শাখার দুই পক্ষ। কেন্দ্রীয় নির্দেশনার পরও ঐকমত্যে পৌঁছতে পারেনি দুই গ্রুপ।
দেশের চলমান সংকটে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনে চলছে আত্ম-আলোচনা। দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর ও নেতাকর্মীদের হতাহতের ঘটনায় দলের দুর্বলতাকে দায়ী করা হচ্ছে। দলের দুর্দিনে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের রাগ-অভিমান ভুলে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। এই অবস্থায় উদযাপিত হচ্ছে স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজনে নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুই গ্রুপ আলাদা আলাদা কর্মসূচির আয়োজন করেছে। ২০২২ সালের ৯ মার্চ দেবাশীষ নাথ দেবুকে সভাপতি ও আজিজুর রহমান আজিজকে সাধারণ সম্পাদক করে ২০ সদস্যের নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ আটজন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। অন্য ১২ জন নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী। ঐক্যবদ্ধভাবে কোটাবিরোধী আন্দোলন প্রতিহত করার নির্দেশনা গত ১৪ মার্চ নগরের সাত থানা ও ১২টি ওয়ার্ডের কমিটি ঘোষণা করেছিলো নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ। কমিটি ঘোষণার পর নগর কমিটির ১২ জন প্রতিবাদ জানান। কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে নালিশ দেন। এরই প্রেক্ষিতে দুই পক্ষকে নিয়ে ঢাকায় বৈঠক করে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ। ১৬ জুলাই সেই ১৯ কমিটি ভেঙে দেয়া হয়। একই সঙ্গে মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কোটাবিরোধী আন্দোলন মাঠে থেকে প্রতিহত করার নির্দেশনা দেয়া হয়। নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মনগড়া কমিটি বাতিল করে ঐক্যবদ্ধভাবে দলীয় কর্মসূচি পালন করার নির্দেশনা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। কিন্তু দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কমিটিতে কোনো আলোচনা না করে একরতফা কর্মসূচি নিয়েছেন তারা (সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক) সংগঠনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কদম মোবারক মসজিদে মিলাদ মাহফিল, আন্দরকিল্লা মোড়ে দুস্থদের মধ্যে খাবার বিতরণ ও প্রেসক্লাবে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে শ্রদ্ধা নিবেদনের আয়োজন রয়েছে বলে জানান সংগঠনের সহ-সভাপতি হেলাল উদ্দিন।
নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আজিজুর রহমান আজিজ বলেন, ‘সীমিত পরিসরে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করার নির্দেশনা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। নির্দেশনা মেনে কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।’প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলাদা কর্মসূচির বিষয়ে জানতে চাইলে সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান বলেন, ‘আলাদা কর্মসূচি নেওয়ার কী আছে। দেশ ও দলের ক্রাইসিস মুহূর্তে তাদের আমরা মাঠে দেখিনি। দলের জন্য তাদের কী ভূমিকা রয়েছে। তারা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে একটি ফোনও করেনি। এই মুহূর্তে ডেকে ডেকে কর্মসূচি পালনের সুযোগ নেই।’
দলের সাংগঠনিক সম্পাদক দেবাশীষ আচার্য্য জানান, দুপুর ১২টায় দারুল ফজল মার্কেটস্থ দলীয় কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, জাতীয়-দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্যে দিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি শুরু হবে। এরপর নগর ও ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হবে। সীমিত পরিসরে কর্মসূচি পালন করা হবে।