প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশে যে ঘটনাগুলো ঘটছে তা রাজনৈতিক কিছু না, জঙ্গিবাদী কাজ। একেবারেই জঙ্গিবাদী কাজ।
সোমবার (২৯ জুলাই) সরকারি বাসভবন গণভবনে ১৪ দলীয় জোটের এক জরুরি বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে জোট সভাপতি এ মন্তব্য করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে যারা অংশ নিচ্ছে তারা ওই শিবির, ছাত্রদল, বিএনপি-জামায়াত এরাই কিন্তু এক হয়েছে। এরা জঙ্গি। এই জঙ্গিরা আজকে আমাদের ওপর থাবা দিয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, এখন এদের উদ্দেশ্যটা বোঝা যাচ্ছে- কোটা কোনো ইস্যু না, যে কয়টা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের মানুষকে সেবা দেয় এবং যে কয়টা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশের মানুষের জীবনমান উন্নত করে সেসব ধ্বংস করা। অর্থাৎ বাংলাদেশটাকেই যেন ধ্বংস করে ফেলা- এটাই তাদের এবারের লক্ষ্য।
যা ঘটছে তা রাজনৈতিক কিছু না জঙ্গিবাদী কাজ : প্রধানমন্ত্রী
জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত
তিনি বলেন, আমরা দেশ স্বাধীন করেছি, বাংলাদেশের উন্নয়ন হচ্ছে। এসব উন্নয়নের ফলের বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী একটা মর্যাদার আসন পেয়ে গেছে। ফলে বাংলাদেশের নাম শুনলে সবাই সমীহ করে, সম্মানের চোখে দেখে। একটা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশকে তুলে আনতে সক্ষম হয়েছি আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের মধ্য দিয়ে, অবকাঠামোগত উন্নয়নের মধ্য দিয়ে।
এর আগে ছাত্রলীগের আহত নারী নেতাকর্মীরা গণভবনে আওয়ামী লীগ সভাপতির সঙ্গে গণভবনে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী তাদের ওপর চালানো নির্যাতনের বর্ণনা শোনেন ও সহমর্মিতা জানান। পরে তিনি ছাত্রলীগের নারী নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন।
সম্প্রতি কোটা আন্দোলনের নামে যে ধ্বংসযজ্ঞ চলেছে সে প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, আন্দোলনের ফসলটা হলো আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করে দেওয়া। বাংলাদেশের মানুষের যে মৌলিক চাহিদা পূরণ করে উন্নত জীবন দিলাম তা নষ্ট করা, সেটাই তো করা হলো। কারণ এ আন্দোলনের ঘাড়ে চেপেই তো ওই জামায়াত-শিবির ও বিএনপির সন্ত্রাসীরা সুযোগ পেয়ে গেল। প্রশ্ন হলো অপরাধটা কি করলাম? মানুষের জীবনমান উন্নত করা? মানুষের খাদ্যের ব্যবস্থা করা? চিকিৎসার ব্যবস্থা করা? মা-বাবা সবাইকে হত্যা করেছে ঘাতকরা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, তারপরও সে কষ্ট বুকে নিয়ে আমি দেশে এসে দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য, মানুষ একটু ভালো থাকবে, উন্নত জীবন পাবে, মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী জাতি হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে যেন একটু মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে, সম্মানের সাথে চলতে পারে- সেজন্য কাজ করেছি। সে সম্মানটা এনেও দিয়েছি। এটা তো কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। যেখানে যাবে বাংলাদেশ শুনলে সমীহ করে ও মর্যাদার সাথে দেখে।
তিনি বলেন, তাদের এই আন্দোলন করতে গিয়ে আমাকে (শেখ হাসিনা) খাটো করতে গিয়ে বাংলাদেশকে কোথায় টেনে নামাল? এটা মনে হয় তারা একবারও চিন্তা করে না। এদের মধ্য যদি এতটুকু দেশপ্রেম থাকত, এতটুকু দায়িত্ববোধ থাকত তাহলে হয়তো তারা এটা করত না।
তিনি আরও বলেন, যে বাংলাদেশকে দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে একটা সম্মানের জায়গায় নিয়ে আসছিলাম সেটাকে ধূলিসাৎ করে দিল। এটাই হচ্ছে সবচেয়ে দুঃখের। আন্দোলনের অর্থায়নের বিষয়ে প্রশ্ন তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই আন্দোলনের জন্য এত টাকা কোথা থেকে পায়? আন্দোলনের জন্য যে খরচ- কে দিয়েছে এই টাকা?
যখন রাজনৈতিক নেতৃত্বরা ক্ষমতায় আসে তখন দেশের উন্নতি হয় জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’৭৫-এর পর তো মিলিটারি ডিক্টেটররা ছিল একের পর এক, ক্ষমতা ছিল দেশের ক্যান্টনমেন্টের ভিতরে, দেশের কতটুকু উন্নতি হয়েছিল? কতটুকু দেশ এগিয়েছিল? কিছুই না।
রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, যে কাজগুলো জনগণের জন্য, সবকিছু তারা ধ্বংস করে দিল, কার স্বার্থে? এটাই আমার প্রশ্ন।