ইন্দোনেশিয়ার বালিতে জি-২০ সম্মেলন চলাকালীন সময়ে বুধবার কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে দেখা হয় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের। এদিন সম্মেলন মঞ্চের একপাশে এ দুই নেতাকে দাঁড়িয়ে কথা বলতে দেখা যায়। পরবর্তীতে জানা যায় ট্রুডোকে পেয়ে নিজের ক্ষোভ ঝেড়েছেন শি জিনপিং। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
গত মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) সম্মেলনের ফাঁকে ট্রুডোর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসেছিলেন জিনপিং। তার অভিযোগ, সেই বৈঠকের সব তথ্য সংবাদমাধ্যমের কাছে প্রকাশ করে দিয়েছেন ট্রুডো। এ কারণে তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়েছেন জিনপিং।
ট্রুডো ও জিনপিংয়ের মধ্যে হওয়া কথোপকথনের একটি ভিডিও প্রকাশ হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, একজন ইংরেজি অনুবাদক নিয়ে ট্রুডোর সঙ্গে কথা বলেছেন শি। তিনি ট্রুডোকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আমরা যা নিয়ে কথা বলেছি তার সবকিছু মিডিয়ায় প্রকাশ হয়েছে। এটি ঠিক নয়। এভাবে কুটনীতি হয় না।‘
তখন ট্রুডো শি জিনপিংকে বলেন, ‘আমাদের মধ্যে মতানৈক্য থাকতে পারে, কিন্তু আমাদের একসঙ্গে কাজ করা উচিত।’
কানাডিয়ান প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা স্বাধীন ও খোলামেলা আলোচনায় বিশ্বাসী এবং এটি আমরা করে যাব। আমরা দৃঢ়ভাবে একসঙ্গে কাজ করে যাব। কিন্তু এরমধ্যে কিছু থাকবে যা নিয়ে আমাদের মধ্যে মতানৈক্য থাকবে এবং এ নিয়েই আমাদের এগিয়ে যেতে…।
এতটুকু বলার পর ট্রুডোকে থামিয়ে দেন শি। তিনি বলেন, ‘এর আগে চলুন এরকম পরিবেশ তৈরি করি।’ এ কথা বলে ট্রুডোর সঙ্গে হাত মিলিয়ে চলে যান শি।
এদিকে গত মঙ্গলবার চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকের পর বিবৃতি দেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী। সেই বিবৃতিতে তিনি জানান, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের কাছে বাণিজ্য ও চীনের হাতে কানাডিয়ান বন্দি এবং কানাডার নির্বাচনে চীনের হস্তক্ষেপের বিষয়টি উল্লেখ করেছেন তিনি।
কানাডার অটোয়ার কার্লেটন বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক প্রফেসর স্টেফেন কারভিন শি জিনপিংয়ের এমন কঠোর ভাবভঙ্গির বিষয়ে বলেছেন, ‘ট্রুডো কানাডা সংবাদমাধ্যমগুলোকে যেভাবে বৈঠকের আলোচিত বিষয় সম্পর্কে জানিয়ে দিয়েছেন এটি ভালোভাবে নেননি শি। এখন ‘নিজের মুখ বাঁচাতে’ ট্রুডোকে পেয়ে আগ্রাসী মনোভাব দেখিয়েছেন।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘দিন শেষে কানাডা ইউরোপ অথবা যুক্তরাষ্ট্র না এবং শি জানেন তিনি কানাডার ওপর প্রকাশ্যে আরও আগ্রাসী মনোভাব দেখাতে পারবেন।’