ঢাকা ০৯:৫৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাব-রেজিস্ট্রারের দুর্নীতির অভিযোগে দলিল লেখকদের কর্মবিরতি

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার কাওসার খানের বিরুদ্ধে ঘুষ দাবির অভিযোগ এনে কর্মবিরতি পালন করছে দলিল লেখক সমিতি। যার ফলে বন্ধ হয়ে আছে এ উপজেলার জমির দলিল নিবন্ধন ও সম্পাদনের কাছ। এতে দূভোর্গে পড়েছে উপজেলার সাধারণ জনগণ।

সাব-রেজিস্টারের ঘুষ দাবিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে উর্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে লিখিত আবেদন করেও কোন প্রতিকার না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে উপজেলা দলিল লেখক সমিতির নেতৃবৃন্দ। সাব-রেজিস্ট্রার কাওসার খানের বদলি না হওয়া পর্যন্ত উপজেলা দলিল লেখক সমিতি কর্মবিরতি পালন করবে বলে তারা জানিয়েছেন।

জানা গেছে, কাওসার খান গত ৩ মার্চ সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে কোটালীপাড়ায় যোগদান করেন। যোগদানের পরে তিনি দলিল লেখকদের কাছে দলিলের শ্রেণিমতে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। দলিল লেখকগণ এই টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সাব-রেজিস্ট্রার কাওসার খান দলিল রেজিস্ট্রি না করে জমির ক্রেতা বিক্রেতাদেরকে হয়রাণি করতে থাকেন।

এ বিষয়ে দলিল লেখক সমিতির পক্ষ থেকে জেলা রেজিস্ট্রারসহ উর্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়ে কোন প্রতিকার না পেয়ে কর্মবিরতি পালন শুরু করে। গত ২ সপ্তাহ ধরে এ উপজেলায় জমির দলিল নিবন্ধন ও সম্পাদন বন্ধ রয়েছে। এ সময়ে সরকার প্রায় ১ থেকে দেড় কোটি টাকার রাজস্ব হারিয়েছে বলে দলিল

লেখক সমিতির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, কোটালীপাড়া উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আহম্মদ হোসেন চৌধুরী বলেন, বৈধ কাগজপত্র থাকাও সত্ত্বেও সাব-রেজিস্ট্রার কাওসার খান আমাদের কাছে ঘুষ দাবি করেন। আমরা ঘুষ দিতে অস্বীকৃতি জানালে তিনি আমাদের দলিল রেজিস্ট্রি করেন না। আমি ৫৫বছর ধরে দলিল লেখি। কাওসার খানের মতো এ ধরণের ঘুষখোর সাব-রেজিস্ট্রার আমার কর্মজীবনে দেখিনি। এই ঘুষখোর সাব-রেজিস্ট্রারকে বদলি না করা পর্যন্ত আমাদের কর্মবিরতি চলবে।

উপজেলার সোনাখালী গ্রামের আকবর শেখ বলেন, জরুরী টাকার প্রয়োজনে আমি জমি বিক্রি করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু দলিল লেখকদের কর্মবিরতির কারণে আমি জমি বিক্রি করতে পারিনি। দলিল রেজিস্ট্রি না হওয়ার কারণে ক্রেতা আমাকে টাকা দেয়নি। যার ফলে আমার পারিবারিক সমস্যার সমাধান হয়নি।

ঘুষ গ্রহণ ও অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার কাওসার খান বলেন, আমি কোন দলিল লেখকের কাছে ঘুষ দাবি করিনি। আমি শুধু তাদের কাছে বৈধ কাগজপত্র চেয়েছি। এ জন্যই দলিল লেখকগণ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনেছে।

জেলা রেজিস্ট্রার একেএম রফিকুল কাদির বলেন, দলিল লেখকদের কর্মবিরতির কথা আমি জেনেছি। তাদের সাথে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করবো।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সাব-রেজিস্ট্রারের দুর্নীতির অভিযোগে দলিল লেখকদের কর্মবিরতি

আপডেট সময় ০৮:৫৯:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ জুলাই ২০২৪

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার কাওসার খানের বিরুদ্ধে ঘুষ দাবির অভিযোগ এনে কর্মবিরতি পালন করছে দলিল লেখক সমিতি। যার ফলে বন্ধ হয়ে আছে এ উপজেলার জমির দলিল নিবন্ধন ও সম্পাদনের কাছ। এতে দূভোর্গে পড়েছে উপজেলার সাধারণ জনগণ।

সাব-রেজিস্টারের ঘুষ দাবিসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে উর্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে লিখিত আবেদন করেও কোন প্রতিকার না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে উপজেলা দলিল লেখক সমিতির নেতৃবৃন্দ। সাব-রেজিস্ট্রার কাওসার খানের বদলি না হওয়া পর্যন্ত উপজেলা দলিল লেখক সমিতি কর্মবিরতি পালন করবে বলে তারা জানিয়েছেন।

জানা গেছে, কাওসার খান গত ৩ মার্চ সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে কোটালীপাড়ায় যোগদান করেন। যোগদানের পরে তিনি দলিল লেখকদের কাছে দলিলের শ্রেণিমতে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। দলিল লেখকগণ এই টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সাব-রেজিস্ট্রার কাওসার খান দলিল রেজিস্ট্রি না করে জমির ক্রেতা বিক্রেতাদেরকে হয়রাণি করতে থাকেন।

এ বিষয়ে দলিল লেখক সমিতির পক্ষ থেকে জেলা রেজিস্ট্রারসহ উর্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়ে কোন প্রতিকার না পেয়ে কর্মবিরতি পালন শুরু করে। গত ২ সপ্তাহ ধরে এ উপজেলায় জমির দলিল নিবন্ধন ও সম্পাদন বন্ধ রয়েছে। এ সময়ে সরকার প্রায় ১ থেকে দেড় কোটি টাকার রাজস্ব হারিয়েছে বলে দলিল

লেখক সমিতির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, কোটালীপাড়া উপজেলা দলিল লেখক সমিতির সভাপতি আহম্মদ হোসেন চৌধুরী বলেন, বৈধ কাগজপত্র থাকাও সত্ত্বেও সাব-রেজিস্ট্রার কাওসার খান আমাদের কাছে ঘুষ দাবি করেন। আমরা ঘুষ দিতে অস্বীকৃতি জানালে তিনি আমাদের দলিল রেজিস্ট্রি করেন না। আমি ৫৫বছর ধরে দলিল লেখি। কাওসার খানের মতো এ ধরণের ঘুষখোর সাব-রেজিস্ট্রার আমার কর্মজীবনে দেখিনি। এই ঘুষখোর সাব-রেজিস্ট্রারকে বদলি না করা পর্যন্ত আমাদের কর্মবিরতি চলবে।

উপজেলার সোনাখালী গ্রামের আকবর শেখ বলেন, জরুরী টাকার প্রয়োজনে আমি জমি বিক্রি করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু দলিল লেখকদের কর্মবিরতির কারণে আমি জমি বিক্রি করতে পারিনি। দলিল রেজিস্ট্রি না হওয়ার কারণে ক্রেতা আমাকে টাকা দেয়নি। যার ফলে আমার পারিবারিক সমস্যার সমাধান হয়নি।

ঘুষ গ্রহণ ও অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার কাওসার খান বলেন, আমি কোন দলিল লেখকের কাছে ঘুষ দাবি করিনি। আমি শুধু তাদের কাছে বৈধ কাগজপত্র চেয়েছি। এ জন্যই দলিল লেখকগণ আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনেছে।

জেলা রেজিস্ট্রার একেএম রফিকুল কাদির বলেন, দলিল লেখকদের কর্মবিরতির কথা আমি জেনেছি। তাদের সাথে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করবো।