বিশ্বব্যাংকের সাহায্যপুষ্ঠ এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অধীনে ৫,৩৮৯,৯২.৪৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়নাধীন প্রাণিসম্পদ ও ডেইরী উন্নয়ন প্রকল্প (এলডিডিপি) বাস্তবায়নে সরকারী কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করছে না প্রকল্প কর্তৃপক্ষ।
প্রকল্পের অনিয়ম/দুর্নীতি নিয়ে সুনিদিষ্ট অভিযোগ প্রকাশিত হওয়ার পরেও কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না মন্ত্রণালয়। আবার ২/১ টি অভিযোগ আমলে নিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের দিয়ে তদন্ত করাইয়া প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে বা হচ্ছে। পরিকল্পিত ভাবে অনিয়ম/দুর্নীতি/লুটপাট হচ্ছে বিশ্বব্যাংকের সাহায্যপুষ্ঠ এ প্রকল্পে। প্রকল্পের অধীনে শত শত কোটি টাকার মেশিনারীজ সরবরাহ না নিয়ে বা নিন্মমানের মালামাল নিয়ে ঠিকাদারের বিল পরিশোধ করা হয়েছে এমন যন্ত্রপাতি আজও পর্যন্ত প্যাকেটবন্ধী বা অকেজো অবস্থায় পড়ে রয়েছে ।
এমন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকার পরেও আর্থিক সুবিধা গ্রহনের মাধ্যমে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর নিরব রয়েছে। সম্প্রতি ডিপিপির সংস্থান অনুযায়ী চট্রগ্রাম. রাজশাহী ও খুলনার মেট্রো এলাকায় উন্নতমানের কসাইখানা নির্মাণ/স্থাপনের জন্য বিগত ৬/৬/২৪ইং তারিখে প্যাকেজ নং এলডিডিপি/ডব্লিউ-৮৫,৮৬,৮৭ এর জন্য পৃথক ৩টি দরপত্র আহবান করা হয়েছে । উক্ত ৩টি দরপত্র দাখিলের সময় নির্দ্ধারন করা হয়েছে আগামী ১১/৭/২৪ ইং তারিখ বিকাল ৩ ঘটিকার সময়।
প্রত্যেকটি কসাইখানার প্রাক্কলিত দর/মূল্য ৯৯ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা। আলোচ্য দর র্নিদ্ধারন করা হয়েছে পিডব্লিউডির রেট সিডিউল-২০১৮ অনুসারে। মূল ডিপিপিতে ৩টি কসাইখানার জন্য পিডব্লিউডির রেট সিডিউল-২০১৮ অনুসারে ২৪৯ কোটি টাকা এবং সংশোধিত ডিপিপিতে একই কাজের একই পরিমানের জন্য পিডব্লিউডির রেট সিডিউল-২০১৮ অনুসারে ব্যয় ধরা হয়েছে ২৯৮ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা যা পরস্পর বিরোধী।
পিডব্লিউডির রেট সিডিউল-২০১৮ অনুসারে মুল ডিপিপি এবং আরডিপিপি প্রস্তুত করা হলেও ৪৯ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা বেশী দর নির্দ্ধারনের কোন ব্যাখ্য কোথাও নেই। অন্যদিকে ডিপিপি সংশোধনকালে বিগত ১৫/৩/২৩ইং তারিখে পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য(সচিব) একেএম ফজলুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় সুনিদিষ্ট আলোচনা ও সিদ্ধান্ত ছিল যে,(সিদ্ধান্ত-৪.১৪) “ সংশোধিত ডিপিপি’র ক্রয় পরিকল্পনায় প্যাকেজ নির্দ্ধারন,প্যাকেজের ক্রয় পদ্ধতি এবং ক্রয় অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ পিপিআর-২০০৮ এর ১৭(৫) যথাযথ অনুসরণ করে নির্দ্ধারন করতে হবে।”
কিন্তু দূ:খজনক হলেও সত্য প্রকল্প কর্তৃপক্ষ এবং প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সে সিদ্ধান্ত লংঘন করে ক্রয় অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষকে পাশ কাটানোর লক্ষ্যে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের ক্রয় কমিটির অনুমোদন এড়ানোর জন্য ৩টি কাজকে পৃথকভাবে ৩টি প্যাকেজে রুপান্তর করে এবং ১০০ কোটি টাকার নিন্মে রেখে পৃথকভাবে ৩টি দরপত্র আহব্বান করেছে। যা সরাসরি আর্থিক বিধি লংঘন এবং দুর্নীতির পর্যায়ে পড়ে। আলোচ্য প্রকল্পের অধীনে একই ঘটনা পূর্বেও ঘটেছে এবং বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও সচিব এবং অধিদপ্তরের ডিজিকে লিখিতভাবে জানালেও তারা কোন ব্যবস্থা নেন নি।
পূর্বে প্যাকেজ নং জি-৯৭,জি-৯৮,জি-৯৯ ও জি-১০০ এর মাধ্যমে একই মালামাল ক্রয়ের জন্য মোট ৪টি দরপত্রের মাধ্যমে মোট ২৫৪ কোটি ৬৭ লক্ষ ৮০ হাজার টাকার আহব্বান করে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়েছে। এমনকি এ প্রকল্পের অধীনে আরো ৮/১০টি ক্রয়ে পিপিআর এর সংশিষ্ট বিধি লংঘিত হয়েছে বা বত্যয় ঘটানো হয়েছে। কিš‘ অর্থের কাছে সকল কর্তৃপক্ষ নীরব ভুমিকা পালন করছে। বর্তমান মন্ত্রীর ও সচিবের নিকট প্যাকেজ নং জি-৯৭ ও জি ১০০ এর বিষয়ে সুৃনিদিষ্ট অভিযোগ (প্রমানাদিসহ) করার পরেও তিনি সেটি আমলে নেননি বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, মন্ত্রণালয়ের সচিবের বরাবরে একাধিক সুনিদিষ্ট অভিযোগ করা হলেও ওনারা কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেন নি। অধিদপ্তরের একাধিক সিনিয়র কর্মকর্তা ও ঠিকাদার জানান, মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর প্রকল্পের সিটিসি ডা: গোলাম রব্বানী কিনে রেখেছেন তাই এ বিষয়ে অভিযোগ করেও কোন লাভ হবে না। এ বিষয়ে প্রকল্পের সিটিসি ডা: গোলাম রব্বানীর বক্তব্য চাইলে তিনি পিডি আব্দুর রহিম এর সাথে কথা বলার জন্য অনুরোধ জানান।