ধৃত আসামি ফারুক ভূক্তভোগীদের প্রতিবেশী হয়। জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তাদের মধ্যে বিবাধ চলে আসছিল। এ বিষয়ে এলাকার স্থানীয় চেয়ারম্যান এবং গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে সমঝোতা করলেও ধৃত আসামি মোঃ ফারুক উক্ত জমি নিয়ে তাদের সাথে পুনরায় ঝগড়ায় লিপ্ত হয়। পরবর্তীতে গত ১৬ এপ্রিল ২০২৪ইং তারিখ ভূক্তভোগীর জমির উপরে ধৃত আসামি মোঃ ফারুকের নেতৃত্বে টিনের বেড়া দেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় ভূক্তভোগী মোঃ আলমগীর টিনের বেড়া দেয়ায় বাধা প্রদান করলে ধৃত আসামি মোঃ ফারুক ও তার অন্যান্য সহযোগীরা ভূক্তভোগী ভিকটিম মোঃ আলমগীর এর উপর ক্ষিপ্ত হয়ে এলোপাথাড়ি মারধর শুরু করে। এতে মোঃ আলমগীর মারাত্মক রক্তাক্ত জখম হয়। এ সময় তার মা রাজিয়া বেগম ছেলেকে বাঁচাতে আসলে দুষ্কৃতিকারীরা মোঃ আলমগীরের মায়ের মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপরি আঘাত করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। মা ও ছেলে গুরুতর রক্তাক্ত জখম অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে থাকা অবস্থায় আশেপাশের লোকজন চিকিৎসার জন্য সাতকানিয়া সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। এ সময় ধৃত আসামি মোঃ ফারুক ও তার অন্যান্য সহযোগীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করার সময় হুমকি প্রদান করে যে, উক্ত ঘটনায় কোন প্রকার আইনের আশ্রয় নিলে পুনরায় মারধর, হত্যা এবং মিথ্যা মামলায় ফাসিয়ে দেয়া হবে মর্মে জানায়।
উক্ত ঘটনায় ভূক্তভোগী ভিকটিম মোঃ আলমগীর বাদী হয়ে চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া থানায় ০৬ জন’কে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করে, যার মামলা নং-২২, তারিখ-২০ এপ্রিল ২০২৪, ধারা-১৪৩/৪৪৭/৩২৩/৩২৫/৩০৭/৩৭৯/৫০৬/৩০২/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০। উল্লেখ্য, উক্ত মারামারির ঘটনায় ভূক্তভোগী ভিকটিম রাজিয়া বেগম গুরুতর রক্তাক্ত অবস্থায় গত ১৬ এপ্রিল ২০২৪ইং তারিখ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২২ এপ্রিল ২০২৪ইং তারিখ মৃত্যুবরণ করেন। যার কারণে উক্ত মামলায় পেনাল কোড ৩০২/৩৪ ধারা সংযোজন করে হত্যা মামলায় রুপান্তরিত হয়।
র্যাব-৭, চট্টগ্রাম বর্ণিত হত্যা মামলার পলাতক আসামিদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে গোয়েন্দা নজরধারী এবং ছায়াতদন্ত অব্যাহত রাখে। নজরধারীর এক পর্যায়ে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোপন সূত্রে জানতে পারে যে, বর্ণিত হত্যা মামলার পলাতক প্রধান আসামি মোঃ ফারুক আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট হতে গ্রেফতার এড়াতে ছদ্মবেশে চট্টগ্রাম মহানগরীর পাঁচলাইশ থানাধীন মুরাদপুর এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম এর একটি আভিযানিক দল গত ০৫ মে ২০২৪ইং তারিখ আনুমানিক ২১৪০ ঘটিকায় বর্ণিত স্থানে অভিযান পরিচালনা করে আসামি মোঃ ফারুক (৩৪), পিতা-নুরুল ইসলাম, সাং-মাদার্শা, থানা-সাতকানিয়া, জেলা-চট্টগ্রাম’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে গ্রেফতারকৃত আসামি’কে জিজ্ঞাসাবাদে সে সূত্রে বর্ণিত হত্যা মামলার পলাতক প্রধান আসামি মর্মে স্বীকার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামি সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে চট্টগ্রাম জেলার সাতকানিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।