সেন্টমার্টিনের ডেইলপাড়ায় নির্মাণ হচ্ছে বহুতল ভবন।
প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনের পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষায় সরকার দ্বীপে পর্যটক সীমিত করলেও সেখানে কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই তৈরি হচ্ছে বিলাসবহুল বহুতল ভবন। এতে দ্বীপের পরিবেশ পড়ছে হুমকির মুখে।
জানা গেছে, সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাজারের ডানপাশে ডেইলপাড়ায় হোটেল ব্লু মেরিনের পশ্চিম পাশে একটি বহুতল ভবন নির্মাণ করছে। এরই মধ্যে দুই তলার নির্মাণকাজ ৮০ ভাগ শেষ হয়েছে। বাইরে থেকে দেখে বোঝা যায়না যে ভবনের কাজ চলছে।
অপরদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, পর্যটকদের কাছে ভ্রমণের অতি আকর্ষণীয় পর্যটন জোন সেন্টমার্টিন দ্বীপের প্রাকৃতিক দৃশ্যগুলো, তা দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। তার কারণ হলো দিনের-পর দিন দালানকোঠা ও ছোট-বড় রিসোর্ট তৈরি গড়ে ওঠায়। এ বছর দ্বীপে পর্যটক আসার ক্ষেত্রে নানান বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার।
সেন্টমার্টিনে নির্মাণাধীন ভবনটির মালিক পক্ষের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ তদারকি করছেন রিয়াজ উদ্দিন (২৮) নামে এক যুবক জানান, ঢাকার এক ব্যক্তি হোটেলটি নির্মাণ করছেন। ভবনের নাম এখনও ঠিক করা হয়নি।
তিন মাস ধরে তিনি নির্মাণকাজ তদারকি করছেন। এখন পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভবন নির্মাণে কোনো বাধা দেওয়া হয়নি বলেও জানান রিয়াজ।
ভবনে কাজ করছেন রাজমিস্ত্রি নুর মোহাম্মদ বলেন, দুই মাস ধরে তারা ছয়জন শ্রমিক কাজ করছেন। এখনো পর্যন্ত তারা মালিকের দেখা পাননি। তার সঙ্গে শুধু ফোনে কথা হয়। ভবনটিতে অত্যাধুনিক ও বিলাসবহুল আবাসিক হোটেল নির্মাণ করা হচ্ছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, দেশের ১৩টি প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকার (ইসিএ) একটি সেন্টমার্টিন। পরিবেশ, প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষার জন্যই সেন্টমার্টিনে স্থাপনা নির্মাণে ছাড়পত্র দেয় না পরিবেশ অধিদপ্তর।
পরিবেশ অধিদপ্তর বলছে, ২০২২ সাল পর্যন্ত দ্বীপে অবৈধভাবে নির্মিত রিসোর্টের সংখ্যা ১৯২টি। এরপরও নিয়ম ভেঙে নতুন স্থাপনা তৈরি হচ্ছে।
ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি (ইয়েস) কক্সবাজারের প্রধান নির্বাহী ইব্রাহিম খলিল মামুন বলেন, সেন্টমার্টিন রক্ষার নামে প্রশাসন ও প্রভাবশালীরা ধ্বংসের প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছে। একদিকে স্থাপনা উচ্ছেদের নামে প্রচার চালিয়ে ছোট ছোট ঝুপড়ি-ঘর ও দোকানপাট উচ্ছেদ করা হচ্ছে। অন্যদিকে, একই স্থানে বড় বড় ভবন নির্মাণের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। গত ৩ বছরে এখানে দেড় শতাধিক বহুতল ভবন গড়ে উঠেছে।
পরিবেশ অধিদপ্তর ও সেন্ট মার্টিনের স্থানীয় প্রশাসনের উদাসীনতা ও সহায়তায় এখানে ভবন নির্মাণ হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন ইব্রাহিম খলিল।
এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, সেন্টমার্টিনে নতুন করে কোনো ভবন নির্মাণ করার সুযোগ নেই। যে ভবনটি নির্মাণ করা হচ্ছে তাদেরকে পরিবেশ অধিদপ্তর তলব করেছেন। কয়েকদিন আগে সহকারী কমিশনার (ভূমি) নেতৃত্বে কোস্টগার্ড ও পুলিশের যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করে ডেইল পাড়ায় নির্মাণাধীন ভবনসহ সিনবাদ, কিংশুক, স্যান্ডি বিচ রিসোর্টের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিচ দখল করে দেওয়া ঘেরাও উচ্ছেদ করার পাশাপাশি সতর্ক করা হয়েছে।
সেন্টমার্টিনে নির্মাণ সামগ্রী নেওয়া নিষিদ্ধ তার পাশাপাশি কোন মালামাল নিতে হলে উপজেলা প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া কোন মালামাল সেন্টমার্টিন দ্বীপে যেতে পারেনা এসব বিষয়ে ইউএনও আরও বলেন, আমি টেকনাফে না আসার আগে এগুলো হয়েছে। এখন নতুন করে কোন ভবন নির্মাণ করার কোন সুযোগ নেই,