পৃথিবীতে প্রতিদিনই কত-শত নিয়মইতো ভাঙা হয়। কিছু মানুষ ছোট ছোট নিয়ম ভেঙে গলা উঁচু করে বলেন, ‘নিয়ম তো হয় ভাঙার জন্যই!’ আবার অনেকে আছেন নিয়ম ভেঙে এখন জেল খাটতে হচ্ছে, অথবা বেশ মোটা অংকের জরিমানা দিতে হচ্ছে।
এই যেমন, স্কটল্যান্ডের এক নারীকে ২০ হাজার পাউন্ড, অর্থাৎ বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২৩ লাখ ৩৮ হাজার টাকার জরিমানা করা হয়েছে। নিশ্চয়ই ভাবছেন, নারী খুব বড় কোনো অপরাধ করেছেন! সে অপরাধ বড়, বা আদও অপারাধ কী না, সবটা জানার পর আপনারাই না হয় তা বিচার করবেন।
৪৮ বছর বয়সের নারী মিরান্ডা ডিক্সন। বসবাস করেন স্কটল্যান্ডের এডিনবরায়। তাকে এই মোটা অংকের টাকা জরিমানা করা হয়েছে, কারণ তার বাড়ির সদর দরজার রং গোলাপী। ভাবছেন ভুল পড়েছেন, না না আপনি ঠিকই পড়েছেন। এই কারণেই নগর পরিকল্পনা দপ্তর থেকে তাকে ২৩ লাখ টাকার জরিমানা দিতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে তাকে সেই দরজার রং পাল্টে সাদা রং করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
যদিও এই বিষয়ে মিরান্ডা খুব স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, এটি তার কাছে অতি তুচ্ছ একটি কারণ। তার মতে, নগর দপ্তর হিংসা থেকে এইসব কাণ্ড ইচ্ছে করে ঘটাচ্ছেন।
এখন নিশ্চয়ই ভাবছেন, একটি দরজার জন্য কাউকে হিংসা করা যায় নাকি! তা হলে, আপনি আরও অবাক হবেন এটা জেনে যে, এই দরজা সোশ্যাল মিডিয়াসহ, পর্যটক ও স্থানীয়দের মধ্যে বেশ বিখ্যাত। বহু মানুষ তার বাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় এই দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তোলেন। হয়তো একারণেই এডিনবরা পরিকল্পনা দপ্তর তাকে এই নির্দেশ দিয়েছে।
অবশ্য, এই বিষয়ে ওই নারী খুব একটা চিন্তিত নন। মিরান্ডা জানান, এই বাড়িটি ২০১৯ সালে তিনি উত্তরাধিকার সূত্রে পান। প্রায় দু’বছর ধরে এই বাড়িটি মেরামত করে তিনি নতুন করে সাজান। খুব স্বাভাবিক ভাবেই এত শখ করে সাজানো বাড়ির যেকোনো অংশই এই সামান্য কিছু কারণে নষ্ট করতে নারাজ।
তার মতে, যুক্তরাজ্যের বহু শহর, হ্যারো, নটিং হিলের উজ্জ্বল রঙের বাড়ি-ঘর দিয়ে সুন্দর করে সাজানো। তাই তিনিও তার বাড়িকে নানা পরিকল্পনা করে সুন্দর করে সাজিয়েছেন। ফিনিশিং টাচ হিসেবে দরজাটির রং গোলাপী করেন। তার বাড়ির দরজাটি দেখলে অবশ্য এ কথা মানতেই হবে। শুধু গোলাপী রং নয়, দরজার সামনে সুন্দর করে হ্যালোয়িন থিমের কঙ্কাল-ফুলও টাঙানো আছে। কার্যত, দপ্তরকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই মিরান্ডা নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থাকার পরিকল্পনা করেছেন।