চলতি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে পুরো গ্রুপপর্ব জুড়ে পিএসজি ছিল তাদের গ্রুপের শীর্ষে। তালগোল পাকলো এসে শেষ দিনে। না, পিএসজি নিজেদের কাজটা ঠিকঠাকই সেরেছিল; জুভেন্তাসের মাঠ থেকে জিতে এসেছিল ২-১ গোলে। ‘ঝামেলা’ পাকালো বেনফিকা, মাকাবি হাইফার জালে ৬ গোল জড়িয়ে সব ধরনের ‘স্বাভাবিক’ হিসেব করে দিলো বরাবর, তবে অ্যাওয়ে গোল হিসেবে কপাল পুড়ল পিএসজির; হলো গ্রুপ রানার্স আপ। তাতেই পিএসজির সামনে শঙ্কা তৈরি হয়েছে আবারও দ্বিতীয় রাউন্ডে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে পড়ার, কিংবা বায়ার্ন মিউনিখ বা ম্যানসিটির মুখোমুখি হওয়ার।
তুরিনে গত রাতে লিওনেল মেসির বাড়ানো বলে কিলিয়ান এমবাপে পিএসজিকে এগিয়ে দিয়েছিলেন আগেভাগেই। ১৩ মিনিটে পাওয়া সেই লিড পিএসজি ধরে রাখতে পারেনি অবশ্য। বিরতির ৬ মিনিট আগে লিওনার্দো বনুচ্চির গোলে সমতা ফেরায় জুভেন্তাস। দ্বিতীয়ার্ধে এমবাপের যোগান থেকে গোল করেন নুনো মেন্দেস। সেই গোলই জয় নিশ্চিত করে দেয় ফরাসি চ্যাম্পিয়নদের।
গ্রুপ ‘এইচ’ এর অন্য ম্যাচে বেনফিকা রীতিমতো গোল উৎসব করেছে মাকাবি হাইফার মাঠে। ম্যাচের ২০ মিনিটে গনকালো রামোসের গোলে শুরু। এরপর ২৬ মিনিটে পেনাল্টি থেকে সমতা ফেরায় স্বাগতিকরা, সেটা ধরে রাখে প্রথমার্ধের শেষ পর্যন্ত। তবে দলটির বাঁধ ভাঙল ম্যাচের ৫৯ মিনিটে। সেই যে ভাঙল, বাঁধটা আর কিছুতেই দিতে পারল না মাকাবি হাইফা। ৫৯ মিনিট থেকে যোগ করা সময় পর্যন্ত ইসরায়েলি দলটির জালে বেনফিকা জড়াল গুণে গুণে ৫ গোল। ৬-১ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে দলটি।
এই জয়ের ফলে দুই ড্র আর চার জয় থেকে সমান ১৪ পয়েন্ট হয় বেনফিকার, পিএসজির পয়েন্টও ছিল সমান। এরপর দেখা হয় মুখোমুখি লড়াই, সেখানেও দুই দলের কেউ কাউকে হারাতে পারেনি তিন আর চার নম্বর ম্যাচদিবসে দুই লড়াইতেই খেলা শেষ হয়েছে ১-১ গোলে। এরপর দেখা হয় গোল ব্যবধান, সেখানেও সমতা, দুই দলই ১৬ গোল করেছে, হজম করেছে ৭ গোল। সমতাটা শেষমেশ ভাঙে প্রতিপক্ষের মাঠে কে বেশি গোল দিয়েছে এই মানদণ্ডে। বেনফিকার মাঠে ছয়টিসহ প্রতিপক্ষের মাঠে মোট ৯ গোল করেছে পর্তুগিজ এই দল, ওদিকে প্রতিপক্ষের মাঠে তিন ম্যাচে পিএসজির গোল ছিল ৬ গোল। সেই মানদণ্ডেই পিছিয়ে পড়ে গ্রুপ রানার্স আপ হয়ে প্রথম রাউন্ড শেষ করেন মেসিরা।
তাতেই সৃষ্টি হয়েছে একটা শঙ্কার। গেল আসরে রিয়াল মাদ্রিদের কাছে হেরে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বিদায় নিয়েছিল দলটি। এবারও সেই লড়াইয়ের আরও একটা পুনরাবৃত্তি দেখতে পারে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ।
গ্রুপ রানার্স আপ হওয়ায় পিএসজির অগ্নিপরীক্ষা শুরু হয়ে যাবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ ষোল থেকেই। অন্য সাত গ্রুপের চ্যাম্পিয়নের কোনো একটির সামনে পড়তে হতে পারে তাদের। অন্য সাত গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হয়েছে যথাক্রমে– ন্যাপোলি, পোর্তো, বায়ার্ন মিউনিখ, টটেনহ্যাম, চেলসি, রিয়াল মাদ্রিদ, ম্যানচেস্টার সিটি। দ্বিতীয় রাউন্ডে এখন এই শক্তিশালী দলগুলোর কোনো একটার সামনেই পড়তে হবে মেসিদের। দ্বিতীয় রাউন্ডে দলটির প্রতিপক্ষ কারা, তা জানা যাবে আগামীকাল শুক্রবার