রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ ঘোষণা করা ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনার গোষ্ঠীর প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন বলেছেন, তার যোদ্ধারা আত্মসমর্পণ করবে না। শনিবার (২৪ জুন) রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রিগোজিনের পদক্ষেপকে বিশ্বাসঘাতকতা উল্লেখ করে ওয়াগনার যোদ্ধাদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়েছিলেন। এরপর প্রিগোজিন এই মন্তব্য করলেন। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এ খবর জানিয়েছে।
টেলিগ্রামে প্রিগোজিন বলেছেন, রুশ প্রেসিডেন্ট বড় ধরনের ভুল করছেন। মাতৃভূমির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট বড় ভুল করছেন। আমরা মাতৃভূমির প্রতি দেশপ্রেমী। আমরা লড়াই করেছি এবং লড়ছি।
ওয়াগনার প্রধান বলেছেন, প্রেসিডেন্ট, এফএসবি বা অন্য কারও অনুরোধে কেউ আত্মসমর্পণ করবে না।
সিএনএন-এর খবরে বলা হয়েছে, প্রিগোজিনের মন্তব্যে এটি স্পষ্ট যে তিনি ক্রেমলিন ও গোয়েন্দা সংস্থার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। অতীতে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ও সেনাপ্রধানের সমালোচনা করলেও পুতিনের সরাসরি সমালোচনা থেকে সতর্কতার সঙ্গে বিরত থেকেছেন বা তার কর্তৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলেননি।
এছাড়া প্রিগোজিন একটি পরিচিত প্রতিপাদ্যে ফিরে এসেছেন। বলেছেন, তার যোদ্ধারা দেশপ্রেমী এবং রাশিয়ার চলমান ‘দুর্নীতি, প্রতারণা এবং আমলাতন্ত্র’-এর বিরুদ্ধে তারা অবস্থান নিয়েছে।
ওয়াগনার প্রধান বলেছেন, যখন আমাদের বলা হয়েছে আমরা ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত, আমরা সেখানে গেছি এবং লড়াই করেছি। কিন্তু দেখা গেলো বরাদ্দ দেওয়া সব গোলাবারুদ, অস্ত্র ও অর্থ চুরি হয়ে গেছে, এবং আমলাতন্ত্র অলসভাবে বসে, নিজেদের রক্ষা করছে।
উল্লেখ্য, ওয়াগনার যোদ্ধাদের ওপর রুশ সেনারা হামলা চালিয়েছে অভিযোগ তুলে শুক্রবার রাতে রুশ সামরিক নেতাদের উৎখাত করার ঘোষণা দেন ওয়াগনার প্রধান প্রিগোজিন। এরপরই তিনি বাহিনী নিয়ে ইউক্রেন থেকে রাশিয়ায় প্রবেশ করে রোস্তভ শহরের সামরিক অবকাঠামো নিয়ন্ত্রণের দাবি করেছেন। মস্কো অভিমুখে এগিয়ে যাওয়ারও ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে প্রিগোজিনকে ‘সশস্ত্র বিদ্রোহী’ আখ্যা দিয়েছে মস্কো। তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে এবং ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ প্রমাণিত হলে ১২ থেকে ২০ বছরের সাজা হতে পারে প্রিগোজিনের।