রাশিয়ার সেনাদের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের সেনারা পাল্টা আক্রমণ চালাবে— কয়েকদিন ধরে চলছে এমন গুঞ্জন। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, যে কোনো সময় তাদের বহুল কাঙ্খিত পাল্টা আক্রমণ শুরু হবে।
আর এমন সময় ক্ষেপণাস্ত্রের উৎপাদন দ্বিগুণ করার আহ্বান জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই সোইগু।
মঙ্গলবার (২ মে) উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন সোইগু। সেখানেই রাষ্ট্রায়ত্ত্ব মিসাইল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ট্যাকটিক্যাল মিসাইল কর্পোরেশনের কর্মকর্তাদের প্রতি এমন আহ্বান জানান তিনি। সোইগু জানিয়েছেন, এখন পর্যন্ত মিসাইল কর্পোরেশন তাদের ওপর ন্যস্ত দায়িত্ব বেশ ভালোভাবেই পালন করে যাচ্ছেন।
তবে তিনি বলেছেন, ‘এ মুহূর্তে, কম সময়ের মধ্যে উচ্চ-নির্ভূল অস্ত্রের উৎপাদন দ্বিগুণ করতে হবে।’
ইউক্রেনের সম্ভাব্য পাল্টা আক্রমণকে ঘিরে আবারও কিছুটা উত্তপ্ত হয়ে ওঠেছে পরিস্থিতি। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, বুধবার রাতেও রাজধানী কিয়েভে হামলা চালানোর চেষ্টা করেছে রাশিয়া। এ হামলার জন্য তারা ইরানের তৈরি বেশ কয়েকটি শহীদ ড্রোন পাঠিয়েছিল। তবে সবগুলো ড্রোনই ধ্বংস করা হয়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেন।
এছাড়া বুধবার রাশিয়ার অধিকৃত ক্রিমিয়ার আরেকটি জ্বালানি সংরক্ষণাগারে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। এক সপ্তাহের মধ্যে রাশিয়ার দখলকৃত অঞ্চলগুলোর অন্তত তিনটি জ্বালানি সংরক্ষণাগারে হামলা ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ধারণা করা হচ্ছে, রুশ সেনাদের লজিস্টিক দুর্বল করে দেওয়ার অংশ হিসেবে জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর হামলা চালানো হচ্ছে।
এদিকে সামরিক বিশেষজ্ঞরা এখন খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন— রাশিয়া কী উচ্চ-নির্ভূল ক্ষেপণাস্ত্রের সংকটের মধ্যে আছে কিনা। কারণ সাম্প্রতিক সময়ে ইউক্রনে ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে যেসব হামলা চালানো হয়েছে, সেসব হামলা ছোট ছিল। এছাড়া ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে হামলার তীব্রতাও কমে এসেছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক যুদ্ধবিষয়ক পর্যবেক্ষক সংস্থা স্টাডি অব ওয়ার বুধবার (৩ মে) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, কয়েকদিন ধরে রুশ সেনা এমনকি ভাড়াটে সেনা ওয়াগনার অভিযোগ করছে, তারা প্রয়োজনীয় অস্ত্র পাচ্ছে না। আর এসব অভিযোগ আড়াল করতেই সোইগু ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে এমন মন্তব্য করেছেন।
যুক্তরাজ্যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় গতকাল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানায়, ‘ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযানের প্রাণকেন্দ্রে রয়েছে লজিস্টিক সমস্যা।’
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় অস্ত্র উৎপাদন ও সরবরাহ বাড়ানোর চেষ্টা করলেও এতে তারা ব্যর্থ হচ্ছেন বলে দাবি করেছে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।