তুরস্ক-সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর অর্থ সাহায্যসহ নানাভাবে এগিয়ে এসেছে বহু মানুষ। এরমধ্যে একটি চক্র দানের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। এ বিষয়ে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
ভূমিকম্প থেকে বেঁচে যাওয়াদের সাহায্যের জন্য অর্থ সংগ্রহের কথা বলে তা নিয়েছে চক্রটি। সংগ্রহ করা এই অর্থ ক্ষতিগ্রস্তদের না দিয়ে তা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে প্রতারকদের নিজেদের পেপাল ও ক্রিপ্টোকারেন্সি অ্যাকাউন্টে।
এ সংক্রান্ত বিবিসির একটি প্রতিবেদনে টিকটক লাইভ প্রতারণার বিষয় তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে- ধ্বংসযজ্ঞের ছবি, ভিডিও ফুটেজ, উদ্ধার তৎপরতার টিভি রেকর্ডিং ব্যবহার করে টিকটকের ডিজিটাল গিফটের মাধ্যমে দুর্গতদের জন্য অর্থ দান করার আহ্বান জানানো হচ্ছে।
এগুলোর ক্যাপশনে নানা ধরনের কথা লেখা আছে। যেমন- আসুন, তুরস্ককে সাহায্য করি, তুরস্কের জন্য প্রার্থনা এবং ভূমিকম্পের দুর্গতদের জন্য সাহায্য করুন, ইত্যাদি লেখা থাকছে।
এ ধরনের একটি ভিডিওতে ক্যামেরার পেছনে একটি পুরুষ কণ্ঠকে হাসতে ও চীনা ভাষায় কথা বলতে শোনা যাচ্ছে বলে জানানো হয়েছে বিবিসির প্রতিবেদনটিতে।
আরেকটি ভিডিওতে একটি শিশুকে বিস্ফোরণ থেকে দৌড়ে আসতে দেখা যাচ্ছে। ওই লাইভস্ট্রিমের বার্তায় বলা হচ্ছে- এই লক্ষ্য অর্জনে অনুগ্রহ করে সাহায্য করুন। কিন্তু শিশুটির যে ছবি দেখানো হচ্ছে সেটি গত সপ্তাহের ভূমিকম্পের কোনো ছবি নয়। একই ছবি ২০১৮ সালেও টুইটারে পোস্ট করা হয়েছিল, যার ক্যাপশন ছিল- আফরিন গণহত্যা বন্ধ করুন।
এর পাশাপাশি ক্রিপ্টোকারেন্সি অ্যাকাউন্টেরও লিঙ্ক শেয়ার করে এর মাধ্যমে অর্থসাহায্য দান করার অনুরোধ জানানো হচ্ছে। একটি অ্যাকাউন্ট থেকে মাত্র ১২ ঘণ্টায় একই আবেদন আটবার পোস্ট করা হয়েছে। এই পোস্টে একটি ছবি দেওয়া হয়েছে যাতে দেখা যাচ্ছে দমকল বাহিনীর একজন কর্মী ধসে পড়া কয়েকটি ভবনের সামনে ছোট্ট একটি শিশুকে বুকে জড়িয়ে ধরে রেখেছেন।
ওয়েমা নামের একটি গ্রিক সংবাদপত্র বলছে- এজিয়ান দমকল বাহিনীর মেজর জেনারেল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মিডজার্নি সফটওয়্যার ব্যবহার করে এই ছবিটি তৈরি করেছে।
এছাড়াও এসব পোস্টের সঙ্গে ক্রিপ্টোকারেন্সির যেসব ওয়ালেটের ঠিকানা দেওয়া হয়েছে তার একটি ২০১৮ সালের প্রতারণামূলক টুইটেও ব্যবহার করা হয়েছিল। অন্য ঠিকানাগুলো পোস্ট করা হয়েছে রুশ সোশাল মিডিয়া ওয়েবসাইট ভিকে-তে। সেখানে পর্নোগ্রাফি কনটেন্টও পোস্ট করা হয়েছে।
প্রতারণাকারীরা অর্থ তোলার জন্য টুইটারে ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে এবং তাতে পেপ্যালের লিঙ্কও পোস্ট করছে।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানার পর তুরস্ক ও সিরিয়ায় অসংখ্য বাড়ি ধসে পড়ে। বুধবার শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ৪১ হাজার ছাড়িয়েছে।