নওগাঁ পৌরসভায় মাস্টাররোলে ভুয়া শ্রমিক দেখিয়ে বেতন-ভাতা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করার অভিযোগে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
অভিযানে বেশকিছু অসঙ্গতি ও অনিয়ম ধরা পড়েছে। অভিযানকালে পৌরসভার কনভারজেন্সি সুপারভাইজার (ভারপ্রাপ্ত) এবং কনভারজেন্সি ইন্সপেক্টরের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে। যদিও মূল অভিযোগ মেয়র নজমুল হক সনির বিরুদ্ধে।
দুদকের নওগাঁ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের এনফোর্সমেন্ট টিমের অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করে সোমবার (২ জানুয়ারি) দুদকের সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মোহাম্মদ শফিউল্লাহ বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগে পরিপ্রেক্ষিতে এনফোর্সমেন্ট টিম রোববার (১ জানুয়ারি) অভিযান পরিচালনা করে। নওগাঁ পৌরসভা মেয়রের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল। টিম কর্মরত শ্রমিকদের হাজিরাশিট ও অর্থ উত্তোলনের সংশ্লিষ্ট নথিপত্র পর্যালোচনা করে অসঙ্গতি পেয়েছে।
দুদক সূত্রে জানা যায়, নওগাঁ পৌরসভায় মাস্টাররোলে কর্মরত শ্রমিকদের নামে বেতন উত্তোলন করে আত্মসাৎ করার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তিন সদস্যের একটি দল নওগাঁ পৌরসভায় অভিযান পরিচালনা করে। এনফোর্সমেন্ট টিম নওগাঁ পৌরসভা কার্যালয়ে সরজমিনে পরিদর্শনকালে কর্মরত শ্রমিকদের হাজিরাশিট ও অর্থ উত্তোলনের মাস্টাররোল তথা অভিযোগ সংশ্লিষ্ট নথিপত্র পর্যালোচনা করে।
অভিযোগ সংশ্লিষ্ট নথিপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০২১ সালের আগস্ট পূর্বে মাস্টাররোলে কর্মরত শ্রমিকদের হাজিরাশিট যথাযথভাবে হালনাগাদ করা হতো না, কিন্তু তার পরবর্তী সময়ে নিয়মিতভাবে ভাবে হালনাগাদকরণ এবং তার বিপরীতে মাস্টাররোলে অর্থ পরিশোধ করা হচ্ছে। মাস্টাররোলে নিয়োজিত শ্রমিকদের হাজিরাশিট নিয়মিত হালনাগাদকরণে কনভারজেন্সি সুপারভাইজার (ভারপ্রাপ্ত) এবং কনভারজেন্সি ইন্সপেক্টরের দায়িত্বে অবহেলা প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় এনফোর্সমেন্ট টিম তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মেয়রকে সুপারিশ করেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পৌরসভার গত জুলাই ও আগস্ট মাসে প্রতিদিন দৈনিক ১৫৭ জন শ্রমিক ড্রেন লেবার হিসেবে কাজ করে। তালিকায় নাম থাকা ১৫৭ জনের মধ্যে ৫১ জন ভুয়া শ্রমিক ছিল। তালিকায় নাম থাকলেও প্রকৃতপক্ষে ওই সব শ্রমিকরা ওই দুই মাসে ড্রেন লেবার হিসেবে কাজ করেননি এবং মজুরির টাকাও উত্তোলন করেননি। যাদের মধ্যে আনিছুর নামে মৃত এক শ্রমিকের নাম রয়েছে। দুই মাসে ওই ৫১ ভুয়া শ্রমিকের নামে ১৫ লাখ ৬৬ লাখ টাকা আত্মাসাৎ করা হয়েছে।