ঢাকা ১২:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে স্কুল শিক্ষার্থীদের সাথে হাইওয়ে পুলিশ রংপুর রিজিয়নের সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান কমলনগরে হার্ভেস্টার মেশিনের ধাক্কায় শিশু নিহত চন্দ্রগঞ্জে ইউপি চেয়ারম্যানকে অপসারণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সংবাদ সম্মেলন যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়ার পরও গাজায় চলছে হামলা, নিহত অন্তত ৩০ অবশেষে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত ইসরায়েল-হামাস পাকিস্তানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতিনিধি দলের ‘বিরল’ সফর বেরোবিতে ১৫ বছর পর প্রভাষক পদ ফিরে দেওয়ার নির্দেশ হাইকোর্টের নেত্রকোনায় কলেজ শিক্ষকের লাশ উদ্ধার, পুলিশ বলছে হত্যা লালমনিরহাটে কলা চাষে ঝুঁকছে চাষীরা। গরু চুরি করে ভূরিভোজন মাদারগঞ্জে সেই দম্পতিসহ তিনজনকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার

শিখন ঘাটতি পূরণে দ্বিতীয় প্রান্তিক থেকে বাড়তি ক্লাস

২০২৩ শিক্ষাবর্ষে প্রথম শ্রেণিতে শুরু হচ্ছে নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠদান। নতুন এই শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক মূল্যায়নের মাধ্যমে পাঠভিত্তিক দুর্বলতা শনাক্ত করে সমাধান করা হবে। নীতিমালা প্রণয়নের সঙ্গে জড়িতরা বলছেন, দুর্বলতা নিয়ে পরবর্তী শ্রেণিতে ওঠা শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়ে। আবার অনেক শিক্ষার্থী ঝরে যায়।

এ কারণে প্রতিটি পাঠের সঙ্গে ফলাবর্তন (ফিডব্যাক) যুক্ত করা হয়েছে। আর শিখন ঘাটতি পূরণে নিরাময় ক্লাসসহ অন্য পরিকল্পনাও রয়েছে। কোনো শিক্ষার্থীর অগ্রগতি সন্তোষজনক না হলে নিরাময় ক্লাসের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত পাঠদানের ব্যবস্থাকে ফলাবর্তন বলা হয়। প্রতি ক্লাসে সব শিক্ষার্থীর মূল্যায়ন সম্ভব না হলেও অন্তত ১০ থেকে ১৫ জন শিক্ষার্থীকে মূল্যায়নের আওতায় আনতে হবে। আর প্রতি অধ্যায় শেষে নিশ্চিত করতে হবে সব শিক্ষার্থীর মূল্যায়ন। এভাবে ১০টি পাঠ শেষে তৈরি করতে হবে মূল্যায়ন চেকলিস্ট। এতে দুর্বল শিক্ষার্থীর একটা চিত্র পাওয়া যাবে। সপ্তাহে নিরাময় ক্লাস থাকবে।

এনসিটিবি জানায়, আগামী শিক্ষাবর্ষের প্রথম প্রান্তিকে প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের যে শিখন ঘাটতি থাকবে, তার সমাধানে দ্বিতীয় প্রান্তিকে শুরু হবে বাড়তি ক্লাস। প্রতিদিন সাধারণ ক্লাসের পাশাপাশি শিখন ঘাটতি পূরণে পরিচালিত হবে বাড়তি ক্লাস। অনলাইনেও এই ক্লাস পরিচালিত হতে পারে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে এটি চূড়ান্ত করা হবে। প্রথম প্রান্তিকে শিখন ঘাটতি চিহ্নিত করতে শিক্ষকরা ম্যানুয়াল ডায়েরি ব্যবহার করবেন। এরপর শিখন ঘাটতি পূরণে তৈরি করা হবে একটি অ্যাপ। দ্বিতীয় প্রান্তিকে সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে ব্যবহার করা হবে এটি। আগামী শিক্ষাবর্ষে ৪০টি বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণিতে এই পাইলটিং কার্যক্রম চলবে।

এনসিটিবি সদস্য এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেন, পরবর্তী শ্রেণিতে যাওয়ার আগে শিখন ঘাটতি পূরণে নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন ব্যবস্থা। শিক্ষার্থীদের শতভাগ শিখন নিশ্চিত করতে শিক্ষকদের দিতে হবে ফলাবর্তন। উত্তরণে শিক্ষার্থীকেও প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। একটি ক্লাসে শিক্ষার্থীদের পাঠ ঘাটতি তৈরি হলে পরবর্তীতে তা পূরণে শিক্ষকদের প্রচেষ্টা থাকতে হবে।

তিনি বলেন, অনেক শিক্ষার্থী অসুস্থতা ও বদলিজনিত কারণে পিছিয়ে পড়ে। এসব শিক্ষার্থীর জন্য প্রতি প্রান্তিক শেষে পরবর্তী প্রান্তিকে শিখন ঘাটতি পূরণে বাড়তি ক্লাসের ব্যবস্থা করা হবে। তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার পরিবর্তে ধারাবাহিক মূল্যায়নের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে প্রথম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের পর পরবর্তী বছরগুলোয় অন্য শ্রেণিতেও বাস্তবায়ন করা হবে।

ধারাবাহিক মূল্যায়নে চারটি বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে — জ্ঞান, দক্ষতা, মূল্যবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গি। কারিকুলাম ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রিভিশন কোর কমিটির সদস্য অধ্যাপক তারিক আহসান বলেন, এই চারটি উপাদানের সমন্বিত রূপ দেখতে চাই। শিক্ষার্থী যে জ্ঞান অর্জন করেছে বাস্তবে তার প্রয়োগ করতে পারে কি না, এটাই হলো তার দক্ষতা। আবার প্রয়োগের ক্ষেত্রে নিজ ও মানুষের কল্যাণসহ দেশপ্রেমের চর্চা রয়েছে কি না, সেগুলো হলো তার মূল্যবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গির অংশ।

এসব বিষয় একসঙ্গে যাচাই করতে চাইলে মূল্যায়ন প্রক্রিয়া এবং মূল্যায়ন মাপকাঠি এই দুটি জায়গায় পরিবর্তন আনতে হবে। মূল্যায়ন প্রক্রিয়া এমন হবে, যেন কোনো সমস্যা সমাধান করতে দিলে একজন শিক্ষার্থীর জ্ঞান, দক্ষতা, দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যবোধের সার্বিক প্রয়োগ দেখা যায়।

তিনি বলেন, আগের শিক্ষাব্যবস্থা পরীক্ষানির্ভর ছিল। বর্তমানে হাতে-কলমে পারদর্শী হতে হবে, যা তার জীবনে কাজে লাগবে। নতুন কারিকুলামের সঙ্গে পুরনো কারিকুলামের এখানেই বড় পার্থক্য।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে স্কুল শিক্ষার্থীদের সাথে হাইওয়ে পুলিশ রংপুর রিজিয়নের সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান

শিখন ঘাটতি পূরণে দ্বিতীয় প্রান্তিক থেকে বাড়তি ক্লাস

আপডেট সময় ১২:৪৫:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২২

২০২৩ শিক্ষাবর্ষে প্রথম শ্রেণিতে শুরু হচ্ছে নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠদান। নতুন এই শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক মূল্যায়নের মাধ্যমে পাঠভিত্তিক দুর্বলতা শনাক্ত করে সমাধান করা হবে। নীতিমালা প্রণয়নের সঙ্গে জড়িতরা বলছেন, দুর্বলতা নিয়ে পরবর্তী শ্রেণিতে ওঠা শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়ে। আবার অনেক শিক্ষার্থী ঝরে যায়।

এ কারণে প্রতিটি পাঠের সঙ্গে ফলাবর্তন (ফিডব্যাক) যুক্ত করা হয়েছে। আর শিখন ঘাটতি পূরণে নিরাময় ক্লাসসহ অন্য পরিকল্পনাও রয়েছে। কোনো শিক্ষার্থীর অগ্রগতি সন্তোষজনক না হলে নিরাময় ক্লাসের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত পাঠদানের ব্যবস্থাকে ফলাবর্তন বলা হয়। প্রতি ক্লাসে সব শিক্ষার্থীর মূল্যায়ন সম্ভব না হলেও অন্তত ১০ থেকে ১৫ জন শিক্ষার্থীকে মূল্যায়নের আওতায় আনতে হবে। আর প্রতি অধ্যায় শেষে নিশ্চিত করতে হবে সব শিক্ষার্থীর মূল্যায়ন। এভাবে ১০টি পাঠ শেষে তৈরি করতে হবে মূল্যায়ন চেকলিস্ট। এতে দুর্বল শিক্ষার্থীর একটা চিত্র পাওয়া যাবে। সপ্তাহে নিরাময় ক্লাস থাকবে।

এনসিটিবি জানায়, আগামী শিক্ষাবর্ষের প্রথম প্রান্তিকে প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের যে শিখন ঘাটতি থাকবে, তার সমাধানে দ্বিতীয় প্রান্তিকে শুরু হবে বাড়তি ক্লাস। প্রতিদিন সাধারণ ক্লাসের পাশাপাশি শিখন ঘাটতি পূরণে পরিচালিত হবে বাড়তি ক্লাস। অনলাইনেও এই ক্লাস পরিচালিত হতে পারে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে এটি চূড়ান্ত করা হবে। প্রথম প্রান্তিকে শিখন ঘাটতি চিহ্নিত করতে শিক্ষকরা ম্যানুয়াল ডায়েরি ব্যবহার করবেন। এরপর শিখন ঘাটতি পূরণে তৈরি করা হবে একটি অ্যাপ। দ্বিতীয় প্রান্তিকে সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে ব্যবহার করা হবে এটি। আগামী শিক্ষাবর্ষে ৪০টি বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণিতে এই পাইলটিং কার্যক্রম চলবে।

এনসিটিবি সদস্য এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেন, পরবর্তী শ্রেণিতে যাওয়ার আগে শিখন ঘাটতি পূরণে নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন ব্যবস্থা। শিক্ষার্থীদের শতভাগ শিখন নিশ্চিত করতে শিক্ষকদের দিতে হবে ফলাবর্তন। উত্তরণে শিক্ষার্থীকেও প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। একটি ক্লাসে শিক্ষার্থীদের পাঠ ঘাটতি তৈরি হলে পরবর্তীতে তা পূরণে শিক্ষকদের প্রচেষ্টা থাকতে হবে।

তিনি বলেন, অনেক শিক্ষার্থী অসুস্থতা ও বদলিজনিত কারণে পিছিয়ে পড়ে। এসব শিক্ষার্থীর জন্য প্রতি প্রান্তিক শেষে পরবর্তী প্রান্তিকে শিখন ঘাটতি পূরণে বাড়তি ক্লাসের ব্যবস্থা করা হবে। তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার পরিবর্তে ধারাবাহিক মূল্যায়নের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে প্রথম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের পর পরবর্তী বছরগুলোয় অন্য শ্রেণিতেও বাস্তবায়ন করা হবে।

ধারাবাহিক মূল্যায়নে চারটি বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে — জ্ঞান, দক্ষতা, মূল্যবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গি। কারিকুলাম ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রিভিশন কোর কমিটির সদস্য অধ্যাপক তারিক আহসান বলেন, এই চারটি উপাদানের সমন্বিত রূপ দেখতে চাই। শিক্ষার্থী যে জ্ঞান অর্জন করেছে বাস্তবে তার প্রয়োগ করতে পারে কি না, এটাই হলো তার দক্ষতা। আবার প্রয়োগের ক্ষেত্রে নিজ ও মানুষের কল্যাণসহ দেশপ্রেমের চর্চা রয়েছে কি না, সেগুলো হলো তার মূল্যবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গির অংশ।

এসব বিষয় একসঙ্গে যাচাই করতে চাইলে মূল্যায়ন প্রক্রিয়া এবং মূল্যায়ন মাপকাঠি এই দুটি জায়গায় পরিবর্তন আনতে হবে। মূল্যায়ন প্রক্রিয়া এমন হবে, যেন কোনো সমস্যা সমাধান করতে দিলে একজন শিক্ষার্থীর জ্ঞান, দক্ষতা, দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যবোধের সার্বিক প্রয়োগ দেখা যায়।

তিনি বলেন, আগের শিক্ষাব্যবস্থা পরীক্ষানির্ভর ছিল। বর্তমানে হাতে-কলমে পারদর্শী হতে হবে, যা তার জীবনে কাজে লাগবে। নতুন কারিকুলামের সঙ্গে পুরনো কারিকুলামের এখানেই বড় পার্থক্য।