শৈশবের দিকে শিশুর রক্তচাপ কম থাকে, যা শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশের সঙ্গে বাড়ে। শিশুর রক্তচাপ তার ওজনের সঙ্গে মিল রেখে বাড়তে থাকে। পাঁচ বছর বয়স থেকে এই মিল লক্ষ করা যায়। সাধারণভাবে ১ থেকে ৫ শতাংশ শিশু উচ্চ রক্তচাপে ভোগে।
শিশু বয়সে উচ্চ রক্তচাপের ধরন
প্রাইমারি হাইপারটেনশন : শিশুর জেনেটিক ও পরিবেশগত নানা ঝুঁকি মিলিয়ে এ ধরনের উচ্চ রক্তচাপ হয়ে থাকে। সাধারণভাবে ১০ বছরের বেশি বয়সী স্থূলকার শিশুদের হয় এটি। এ ধরনের উচ্চ রক্তচাপ বয়স্ক অবস্থায়ও বজায় থাকে।
সেকেন্ডারি হাইপারটেনশন : শিশু বয়সে উচ্চ রক্তচাপের প্রধান কারণ এটি। এ ধরনের উচ্চ রক্তচাপের সুনির্দিষ্ট কারণ থাকে এবং তার চিকিৎসাও করানো যায়। এটির জন্য ৭০ থেকে ৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে দায়ী অসুখ হলো কিডনি সংক্রমণ বা জটিলতা।
লক্ষণ : অতিরিক্ত কান্না, ওজন না বাড়া, ক্ষুধামান্দ্য, গায়ে অল্পস্বল্প জ্বর এসব নিয়ে দুই থেকে তিন বছরের শিশু উচ্চ রক্তচাপে ভুগতে পারে। আর বেশি বয়সী শিশুর কিডনিজনিত কারণে উচ্চ রক্তচাপের প্রধান উপসর্গগুলো হলো পেট ব্যথা, প্রস্রাবে রক্ত, শরীরে পানি আসা ও রাতে বিছানায় প্রস্রাব।
অ্যামিনিয়া, খর্বাকৃতি ও শিশুর বাড়ন কম হওয়া ক্রনিক কিডনি রোগের প্রধান লক্ষণ।
কখনো বা বুক ধড়ফড়, মাথা ব্যথা, অতিরিক্ত ঘাম এবং ওজন পড়তে থাকা লক্ষণাদি নিয়ে স্নায়ু-অ্যান্ডোক্রাইম টিউমারজনিত কারণে উচ্চ রক্তচাপের প্রকাশ ঘটে।
চিকিৎসা : রক্তচাপ যদি শিশুর বয়স, লিঙ্গ ও উচ্চতা অনুযায়ী এক থেকে তিন সপ্তাহের বিরতিতে কমপক্ষে তিনবার রক্তচাপের চার্টে ৯৫তম সারণি রেখার ওপরে পাওয়া যায়, তবে শিশুর উচ্চ রক্তচাপ আছে বলে ধরা হয়।
প্রাথমিকভাবে রক্ত, প্রস্রাব, বুকের এক্স-রে, ইসিজি, চক্ষু পরীক্ষা ও কিডনির আলট্রাসাউন্ড করে দেখা হয়। পরে রোগের উপসর্গ অনুযায়ী উচ্চ রক্তচাপের কারণ নির্ণয়ের জন্য সুনির্দিষ্ট কিছু ল্যাবরেটরি টেস্টের সাহায্য নিতে হয়।