ঢাকা ০৫:৩৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির তৃতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত

শনিবার (২৬ এপ্রিল ২০২৫) রাজধানীর বেইলি রোডে অফিসার্স ক্লাবে সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির তৃতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির আচার্য মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন-এর মনোনীত প্রতিনিধি শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার সমাবর্তনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ।
সমাবর্তন বক্তা ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ।
অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেন, “সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির কনভোকেশনে যোগদান করে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। নারীদের শিক্ষায় অগ্রগতি হিসেবে এটি একটি বড় মাইলফলক।”
পুরান ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পড়াশোনা শুরুর উদ্যোগের প্রশংসা করেন তিনি। তিনি বলেন, “উচ্চশিক্ষায় যে প্রতিবন্ধকতাগুলো রয়েছে, সেই প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করার একটি পদ্ধতিগত পরিবর্তনের উদ্যোগ আমরা শুরুই করব না, সেটাকে বাস্তবায়নের দিকেও নিয়ে যাব। আশা করি সকল অংশীদার-পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারব।”
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, “এমন শিক্ষা ব্যবস্থার স্বপ্ন দেখি, যেখানে আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা দেশের ভেতরেই তাদের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারে, বাংলাদেশ থেকে শিক্ষার্থীরা পুরো বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হবে।”
সমাবর্তন বক্তৃতায় পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “শিক্ষা মানে শুধু ডিগ্রি অর্জন নয়। এটি সত্য, ন্যায় এবং পরিবেশ রক্ষার প্রতি একটি গভীর দায়বদ্ধতা।
“শিক্ষা যেন কেবল উপার্জনের উপায় না হয়ে ওঠে; বরং তা বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করে সমাজ বদল, দেশ গড়া এবং অবহেলিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর হাতিয়ার হতে হবে।”
পরিবেশ রক্ষায় নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহবান জানিয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, “পরিবেশ রক্ষা শুধু সরকারের নয়, আমাদের সবার দায়িত্ব। জলাশয় ও বনভূমি দখল ঠেকাতে হবে, সাহসিকতার সঙ্গে রুখে দাঁড়াতে হবে প্লাস্টিক দূষণ, শব্দদূষণ, বন উজাড় এবং জলবায়ু সংকটের বিরুদ্ধে।”
পলিথিনের বদলে পাটের ব্যাগ ব্যবহার, শব্দদূষণ পরিহার, বন ও নদী রক্ষা এবং প্রাণীকূলের প্রতি দায়িত্বশীল আচরণ করার তাগিদ দেন তিনি।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ জানান, দক্ষতা বৃদ্ধিতে নারী শিক্ষার্থীরা সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে ইন্টার্নশিপ করার সুযোগ পাবে।
“এতে তোমাদের দুটো লাভ হবে, বাংলাদেশের প্রশাসন কীভাবে চলে তা জানবে, কর্ম অভিজ্ঞতা পাবে৷ আমরা আমাদের মন্ত্রণালয়গুলোকে জনগণের সম্মুখে খুলে দেই না। এখন সময় এসেছে মন্ত্রণালয়গুলোকে তোমাদের সামনে খুলে দেওয়ার।”
তিনি যৌন হয়রানি রোধে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহকে একত্রিত হয়ে কার্যকর কমিটি গঠনের আহবান জানান।
সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫টি বিভাগের মোট ৬৮৪ জন শিক্ষার্থী স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তাদের মধ্যে ২৯ জন শিক্ষার্থী ভাইস চ্যান্সেলরস অ্যাওয়ার্ড পান।
ভ্যালেডিকটোরিয়ান হিসেবে শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে বক্তব্য দেন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরীন নীলা।
ডিগ্রি প্রদানের আনুষ্ঠানিক আয়োজন শেষে ছিল সাংস্কৃতিক আয়োজন। এতে অংশ নেন সংগীত শিল্পী ইমরান মাহমুদুল এবং দিলশাদ নাহার কনা।
উল্লেখ্য, নারীদের উচ্চশিক্ষায় অবদান রাখতে ১৯৯৩ সালে যাত্রা শুরু করে সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটি।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির তৃতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত

আপডেট সময় ০৯:৪২:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫

শনিবার (২৬ এপ্রিল ২০২৫) রাজধানীর বেইলি রোডে অফিসার্স ক্লাবে সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির তৃতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির আচার্য মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন-এর মনোনীত প্রতিনিধি শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার সমাবর্তনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ।
সমাবর্তন বক্তা ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ।
অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেন, “সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির কনভোকেশনে যোগদান করে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। নারীদের শিক্ষায় অগ্রগতি হিসেবে এটি একটি বড় মাইলফলক।”
পুরান ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে পড়াশোনা শুরুর উদ্যোগের প্রশংসা করেন তিনি। তিনি বলেন, “উচ্চশিক্ষায় যে প্রতিবন্ধকতাগুলো রয়েছে, সেই প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর করার একটি পদ্ধতিগত পরিবর্তনের উদ্যোগ আমরা শুরুই করব না, সেটাকে বাস্তবায়নের দিকেও নিয়ে যাব। আশা করি সকল অংশীদার-পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারব।”
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, “এমন শিক্ষা ব্যবস্থার স্বপ্ন দেখি, যেখানে আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা দেশের ভেতরেই তাদের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারে, বাংলাদেশ থেকে শিক্ষার্থীরা পুরো বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হবে।”
সমাবর্তন বক্তৃতায় পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “শিক্ষা মানে শুধু ডিগ্রি অর্জন নয়। এটি সত্য, ন্যায় এবং পরিবেশ রক্ষার প্রতি একটি গভীর দায়বদ্ধতা।
“শিক্ষা যেন কেবল উপার্জনের উপায় না হয়ে ওঠে; বরং তা বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করে সমাজ বদল, দেশ গড়া এবং অবহেলিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর হাতিয়ার হতে হবে।”
পরিবেশ রক্ষায় নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহবান জানিয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, “পরিবেশ রক্ষা শুধু সরকারের নয়, আমাদের সবার দায়িত্ব। জলাশয় ও বনভূমি দখল ঠেকাতে হবে, সাহসিকতার সঙ্গে রুখে দাঁড়াতে হবে প্লাস্টিক দূষণ, শব্দদূষণ, বন উজাড় এবং জলবায়ু সংকটের বিরুদ্ধে।”
পলিথিনের বদলে পাটের ব্যাগ ব্যবহার, শব্দদূষণ পরিহার, বন ও নদী রক্ষা এবং প্রাণীকূলের প্রতি দায়িত্বশীল আচরণ করার তাগিদ দেন তিনি।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ জানান, দক্ষতা বৃদ্ধিতে নারী শিক্ষার্থীরা সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে ইন্টার্নশিপ করার সুযোগ পাবে।
“এতে তোমাদের দুটো লাভ হবে, বাংলাদেশের প্রশাসন কীভাবে চলে তা জানবে, কর্ম অভিজ্ঞতা পাবে৷ আমরা আমাদের মন্ত্রণালয়গুলোকে জনগণের সম্মুখে খুলে দেই না। এখন সময় এসেছে মন্ত্রণালয়গুলোকে তোমাদের সামনে খুলে দেওয়ার।”
তিনি যৌন হয়রানি রোধে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহকে একত্রিত হয়ে কার্যকর কমিটি গঠনের আহবান জানান।
সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫টি বিভাগের মোট ৬৮৪ জন শিক্ষার্থী স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তাদের মধ্যে ২৯ জন শিক্ষার্থী ভাইস চ্যান্সেলরস অ্যাওয়ার্ড পান।
ভ্যালেডিকটোরিয়ান হিসেবে শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে বক্তব্য দেন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরীন নীলা।
ডিগ্রি প্রদানের আনুষ্ঠানিক আয়োজন শেষে ছিল সাংস্কৃতিক আয়োজন। এতে অংশ নেন সংগীত শিল্পী ইমরান মাহমুদুল এবং দিলশাদ নাহার কনা।
উল্লেখ্য, নারীদের উচ্চশিক্ষায় অবদান রাখতে ১৯৯৩ সালে যাত্রা শুরু করে সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটি।