নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনতে (প্রত্যর্পণ) ভারতের কাছে করা অনুরোধটি বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। এসব চ্যালেঞ্জের মধ্যে দুই দেশের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় প্রত্যর্পণ চুক্তির উল্লেখিত শর্তের সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। প্রভাবশালী গণমাধ্যম দ্য ইকোনমিক টাইমসের প্রতিবেদনে এসব বলা হয়েছে।
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতের প্রভাবশালী গণমাধ্যম দ্য ইকোনমিক টাইমস।
প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনতে (প্রত্যর্পণ) ভারতের কাছে করা অনুরোধটি বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। এর মধ্যে ঢাকা-দিল্লির মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় প্রত্যর্পণ চুক্তির উল্লেখিত শর্তের সীমাবদ্ধতাও রয়েছে।
বিশ্বস্ত সূত্রের বরাত দিয়ে দ্য ইকোনমিক টাইমস জানিয়েছে, ভারত তার ঘনিষ্ঠ মিত্রদের কাউকেও ত্যাগ করবে না, কারণ দিল্লি নিজেদের ভূরাজনৈতিক স্বার্থ বিবেচনায় রাখে। শেখ হাসিনা এমন একজন সরকারপ্রধান ছিলেন, যিনি ভারতের জাতীয় স্বার্থ প্রাধান্য দিয়েছিলেন, চরমপন্থীদের দমন করেছেন এবং উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়িয়েছেন। এখন তাকে ফিরিয়ে দিলে ভারতের প্রতিবেশী মিত্রদের কাছে ভুল বার্তা যাবে। অন্যদিকে, ঢাকা-দিল্লির প্রত্যর্পণ চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ‘রাজনৈতিক প্রকৃতির’ যে কোনো অনুরোধ কার্যকর করা যায় না।
ধর্মীয়গুরু দালাই লামাও’র উদাহরণ টেনে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবেশী দেশের অতিথিদের স্বাগত জানানো এবং আশ্রয় দেওয়ার ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। ধারণা করা হচ্ছে, শেখ হাসিনার ক্ষেত্রেও ভারত এই ধরনের প্রত্যর্পণবিষয়ক অনুরোধ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে এবং এতে কয়েক মাস লেগে যেতে পারে।
একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতের প্রভাবশালী গণমাধ্যমটি জানিয়েছে, এখন যদি ভারত শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত প্ঠায়, তবে মিথ্যা মামলার আওতায় তাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। এটি শেখ হাসিনার জন্য অনিশ্চিত ও ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে।
ঢাকা-দিল্লির বর্তমান সম্পর্ক ও শেখ হাসিনার ভূমিকাকে সামনে রেখে প্রত্যর্পণ ইস্যুটি জটিল এবং সময়সাপেক্ষ বলে বিবেচিত হচ্ছে, জানিয়েছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।