বাংলাদেশে কর্মরত বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর শীর্ষ নির্বাহীরা দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিবেশ আরও উন্নত ও সহজতর করার আহ্বান জানিয়েছেন।
নির্বাহীদের প্রস্তাবের জবাবে ড. ইউনূস বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর প্রধান নির্বাহীদের বাংলাদেশের জন্য দূত হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। বিদেশিদেরকে দেশে বিনিয়োগ করার জন্য উৎসাহিত করতে তাদের ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে সরকারের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, বিডা ও বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এবং এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান।
বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর নির্বাহীদের মধ্যে ছিলেন ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাভেদ আখতার, শেভরন বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এরিক এম ওয়াকার, গ্রামীণফোনের সিইও ইয়াসির আজমান, হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশন লিমিটেডের (এইচএসবিসি) সিইও মাহবুব উর রহমান, মেটলাইফ বাংলাদেশের সিইও মুহাম্মদ আলাউদ্দিন আহমদ, এসজিএস বাংলাদেশ লিমিটেডের কান্ট্রি ম্যানেজিং ডিরেক্টর আব্দুর রশিদ, সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও এমএইচএম ফাইরোজ, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন পিএলসির সিইও নাজিথ মীওয়ানাজ, ওরাকল বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজিং ডিরেক্টর রুবাবা দৌলা, মারুবেনি করপোরেশনের কান্ট্রি হেড মনাবু সুগাওয়ারা, বারাকা পাওয়ার লিমিটেডের চেয়ারম্যান ফয়সল আহমেদ চৌধুরী, লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ লিমিটেডের সিইও মোহাম্মদ ইকবাল চৌধুরী, ডিএইচএল ওয়ার্ল্ডওয়াইড এক্সপ্রেস বাংলাদেশ প্রাইভেট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিয়ারুল হক এবং ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেডের কান্ট্রি হেড সুমিতাভ বসু।
বৈঠকে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর নির্বাহীরা বলেছেন, বাংলাদেশে ব্যবসার পরিবেশ আরও উন্নত ও সহজতর করতে হবে। ব্যবসা করার ক্ষেত্রে সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স পাওয়ার ক্ষেত্রে বেশ সময় লাগছে। এগুলো আরও সহজ করতে হবে। কর কাঠামোতে আরও স্বচ্ছতা ও জবাবহিদিতা নিশ্চিত করতে হবে। এগুলো করা হলে দেশে বিনিয়োগ বাড়বে। কর্মসংস্থান বাড়বে।
তারা বিনিয়োগ বাড়াতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) অফিসে ওয়ানস্টপ সার্ভিসের উন্নয়ন এবং ক্রেডিট রেটিং বাড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার ওপর জোর দেন।
তারা সরকারের শ্রম অধিকার সংস্কারের উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, শ্রম খাত সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হলে এবং এটি যথাযথভাবে কার্যকর হলে বিনিয়োগ বাড়াতে সহায়ক হবে।
জবাবে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস দেশের বিনিয়োগ সম্ভাবনা প্রচার এবং ব্যবসায়িক সুযোগ সম্প্রসারণে সরকারের সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, বাংলাদেশের জন্য আমরা একটি দল। একটি দল হিসাবে আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। এতে সম্ভাব্য বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে আসতে উৎসাহিত হবে। এ সময় তিনি দেশের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হয়ে কাজ করার জন্য নির্বাহীদের আহ্বান জানান।
করপোরেট নির্বাহীদের প্রধান উপদেষ্টা ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ব্যবসার প্রসারে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে সাহায্য করুন যাতে আমরা তা সমাধান করতে পারি।
বিশেষ দূত লতিফ সিদ্দিকী নির্বাহীদের ব্যবসায়িক মানদণ্ডের ধারক হিসাবে অভিহিত করে বলেন, অতীতে একটি বিশ্বাসের ঘাটতি ছিল, যা আমাদের দূর করতে হবে।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক মাহমুদ বলেন, ব্যবসার পরিবেশ সহজতর করতে বিডায় সম্পর্ক ব্যবস্থাপক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। তারা আগামী মাসে সিঙ্গাপুরে গিয়ে রেটিং এজেন্সিগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবেন।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে আইনগত কাঠামো আরও সহজ করা হচ্ছে।