ঢাকা ০২:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
৩০ লক্ষাধিক টাকার আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত: প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে : গোয়াইনঘাটে ৪৬তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ উদ্বোধন ভোলা জেলার উন্নয়ন শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খেলাধুলা বাধ্যতামূলক করা হবে : আমিনুল হক মহিলালীগ নেত্রী ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও এনজিওকর্মীকে প্রাণনাশের হুমকি ভোলায় ডিবির অভিযানে বিপুল পরিমান চোরাই মালামালসহ আটক-১ কুমিল্লার কুখ্যাত কিশোর গ্যাং ‘রতন’ গ্রুপের সদস্য গ্রেপ্তার পবিপ্রবি বরিশাল ক্যাম্পাসে দীর্ঘদিন ধরে অকেজো মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর, বিপাকে শিক্ষার্থীরা অবৈধ ট্রাক্টরট্রলি বন্ধে কমলনগরে অবস্থান কর্মসূচি পালন। জামালপুর ৩৫ বিজিবির উদ্যোগে বিওপি পর্যায়ে জনসচেতনতামূলক সভা অনুষ্ঠিত

‘ফাঁসি দিলে দিন’

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আরজি কর হাসপাতালে ঢুকে নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে হত্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন অভিযুক্ত। এমনটাই জানিয়েছে তদন্তকারীরা। তবে অপরাধের কথা স্বীকার করলেও এ নিয়ে তার মধ্যে কোনো অপরাধবোধ নেই বলেই জানান তদন্তকারীরা।

তদন্তকারীদের একটি অংশের দাবি, কোনো অনুতাপবোধ নেই অভিযুক্তের মধ্যে। বরং জিজ্ঞাসাবাদের সময় অভিযুক্ত বলেছেন, ‘ফাঁসি দিলে দিন’।

পুলিশ জানিয়েছে, আরজি কর-কাণ্ডে গ্রেফতারকৃত যুবক পেশায় একজন সিভিক ভলান্টিয়ার। হাসপাতালের সিসিটিভির ফুটেজ দেখে তাকে শুক্রবার রাতে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে শনিবার সকালে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ।

জানা যায়, শুক্রবার ভোরে ওই হাসপাতালে ঢুকতে দেখা গিয়েছিল অভিযুক্তকে। ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট তিনি ভেতরে ছিলেন। সিভিক ভলান্টিয়ার হওয়ার কারণে হাসপাতালে ঢুকতে বা বের হতে তার সমস্যা হয়নি বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।

তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে অভিযুক্ত যুবক একবার হাসপাতালে ঢুকেছিলেন। তার পর বেরিয়ে মদ পান করেন। পরে মত্ত অবস্থায় ভোর ৪টার দিকে আবার হাসপাতালে ঢোকেন। প্রবেশের সময়ে তার গলায় একটি ব্লুটুথ হেডফোন দেখা যায়, বের হওয়ার সময়ে সেটি ছিল না। পরে ওই হেডফোনেরই ছেঁড়া অংশ উদ্ধার করা হয় ঘটনাস্থল থেকে। ওই হেডফোনের সূত্রে এবং সিসিটিভি ফুটেজের ভিত্তিতে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।

তদন্তকারীদের সূত্রে আরও জানা গেছে, গ্রেফতারকৃত যুবকের মোবাইল ফোনে রাখা ছিল পর্নোগ্রাফির বহু ভিডিও। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, অভিযুক্ত যুবকের মানসিক বিকৃতির সমস্যা রয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তদন্তকারীরা জানান, গ্রেফতারের পরেও নিজের কৃতকর্মের জন্য কোনো অনুতাপ প্রকাশ করেননি অভিযুক্ত। বরং এখনও তার মেজাজ উদ্ধতই রয়েছে।

এদিকে শুক্রবার আরজি কর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চার তলার সেমিনার হল থেকে ওই নারী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গেছে, তার দুচোখ থেকে রক্ত ঝরছিল। হাত, আঙুল, পা, পেট-সহ দেহের নানা জায়গায় ছিল আঘাতের চিহ্ন। অপরাধের আগে তার ওপর নৃশংস অত্যাচার চালানো হয়েছিল বলেই প্রাথমিকভাবে মনে করছেন তদন্তকারীরা।

এদিকে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকার সরকারি হাসপাতালে জুনিয়র চিকিৎসকদের অবস্থান বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। সর্বত্র উঠছে একটাই দাবি— ‘বিচার চাই’। এমন প্রেক্ষাপটে অভিযুক্তের সর্বোচ্চ শাস্তির কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, আন্দোলনকারীদের এই ক্ষোভ সঙ্গত। তিনি তাদের সঙ্গে একমত।

মুখ্যমন্ত্রী এ-ও জানিয়েছেন, কেউ এ ঘটনায় রাজ্য পুলিশের ওপর আস্থা না-রাখতে পারলে যে কোনো এজেন্সিকে দিয়ে এর তদন্ত করাতে পারেন। তাতে রাজ্য সরকারের কোনো আপত্তি নেই। কারণ সরকারের গোপন করার কিছু নেই।

এদিকে শনিবার অভিযুক্তকে আদালতে হাজির করা হয়। তাকে ১৪ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। সূত্র: আনন্দবাজার

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

৩০ লক্ষাধিক টাকার আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত: প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে :

‘ফাঁসি দিলে দিন’

আপডেট সময় ০১:০০:৩০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ অগাস্ট ২০২৪

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আরজি কর হাসপাতালে ঢুকে নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে হত্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন অভিযুক্ত। এমনটাই জানিয়েছে তদন্তকারীরা। তবে অপরাধের কথা স্বীকার করলেও এ নিয়ে তার মধ্যে কোনো অপরাধবোধ নেই বলেই জানান তদন্তকারীরা।

তদন্তকারীদের একটি অংশের দাবি, কোনো অনুতাপবোধ নেই অভিযুক্তের মধ্যে। বরং জিজ্ঞাসাবাদের সময় অভিযুক্ত বলেছেন, ‘ফাঁসি দিলে দিন’।

পুলিশ জানিয়েছে, আরজি কর-কাণ্ডে গ্রেফতারকৃত যুবক পেশায় একজন সিভিক ভলান্টিয়ার। হাসপাতালের সিসিটিভির ফুটেজ দেখে তাকে শুক্রবার রাতে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে শনিবার সকালে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ।

জানা যায়, শুক্রবার ভোরে ওই হাসপাতালে ঢুকতে দেখা গিয়েছিল অভিযুক্তকে। ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট তিনি ভেতরে ছিলেন। সিভিক ভলান্টিয়ার হওয়ার কারণে হাসপাতালে ঢুকতে বা বের হতে তার সমস্যা হয়নি বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।

তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে অভিযুক্ত যুবক একবার হাসপাতালে ঢুকেছিলেন। তার পর বেরিয়ে মদ পান করেন। পরে মত্ত অবস্থায় ভোর ৪টার দিকে আবার হাসপাতালে ঢোকেন। প্রবেশের সময়ে তার গলায় একটি ব্লুটুথ হেডফোন দেখা যায়, বের হওয়ার সময়ে সেটি ছিল না। পরে ওই হেডফোনেরই ছেঁড়া অংশ উদ্ধার করা হয় ঘটনাস্থল থেকে। ওই হেডফোনের সূত্রে এবং সিসিটিভি ফুটেজের ভিত্তিতে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।

তদন্তকারীদের সূত্রে আরও জানা গেছে, গ্রেফতারকৃত যুবকের মোবাইল ফোনে রাখা ছিল পর্নোগ্রাফির বহু ভিডিও। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, অভিযুক্ত যুবকের মানসিক বিকৃতির সমস্যা রয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

তদন্তকারীরা জানান, গ্রেফতারের পরেও নিজের কৃতকর্মের জন্য কোনো অনুতাপ প্রকাশ করেননি অভিযুক্ত। বরং এখনও তার মেজাজ উদ্ধতই রয়েছে।

এদিকে শুক্রবার আরজি কর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চার তলার সেমিনার হল থেকে ওই নারী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গেছে, তার দুচোখ থেকে রক্ত ঝরছিল। হাত, আঙুল, পা, পেট-সহ দেহের নানা জায়গায় ছিল আঘাতের চিহ্ন। অপরাধের আগে তার ওপর নৃশংস অত্যাচার চালানো হয়েছিল বলেই প্রাথমিকভাবে মনে করছেন তদন্তকারীরা।

এদিকে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এলাকার সরকারি হাসপাতালে জুনিয়র চিকিৎসকদের অবস্থান বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। সর্বত্র উঠছে একটাই দাবি— ‘বিচার চাই’। এমন প্রেক্ষাপটে অভিযুক্তের সর্বোচ্চ শাস্তির কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, আন্দোলনকারীদের এই ক্ষোভ সঙ্গত। তিনি তাদের সঙ্গে একমত।

মুখ্যমন্ত্রী এ-ও জানিয়েছেন, কেউ এ ঘটনায় রাজ্য পুলিশের ওপর আস্থা না-রাখতে পারলে যে কোনো এজেন্সিকে দিয়ে এর তদন্ত করাতে পারেন। তাতে রাজ্য সরকারের কোনো আপত্তি নেই। কারণ সরকারের গোপন করার কিছু নেই।

এদিকে শনিবার অভিযুক্তকে আদালতে হাজির করা হয়। তাকে ১৪ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। সূত্র: আনন্দবাজার