ঢাকা ১১:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ২ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
মানবজাতির মুক্তির দিশারি মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) আবুল হাশেম বক্কর বি আর টি সির চেয়ারম্যানের অপসারণ ও গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন। ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে আমাদেরকে সচেতন হতে হবে সেমিনারে অধ্যাপক ডা. এম এ হাসান চৌধুরী ভুয়া ঠিকানায় নিরাপত্তা ছাড়পত্রের চেষ্টা গণপূর্তের প্রকৌশলী রাজু আহমেদের পটুয়াখালীতে এক মাদক ব্যবসায়ীকে ২০ দিন কারাদন্ড অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়নে পটুয়াখালী সদর উপজেলা প্রশাসনের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত একমঞ্চে গাইবেন আতিফ আসলাম ও তাহসান ভোজ্যতেলে ভ্যাট ছাড় দিল এনবিআর শেখ হাসিনাকে ফেরাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে সরকার রাকুলের পোশাকটি কেমন হবে, পরামর্শ দিতেন বাবা

কেরানীগঞ্জে আ.লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা, বাড়িতে আগুন

কেরানীগঞ্জের ঘাটারচর এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের গণপিটুনিতে কালিন্দী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৫নং ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক ইসতি (৩০) নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। তাদের মুমূর্ষু অবস্থায় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

রোববার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে হামলার ঘটনা ঘটে। আন্দোলনকারীরা একপর্যায়ে তারানগর ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ফারুক ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সিদ্দিকের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।

জানা যায়, ১৯ জুলাই মোহাম্মদপুরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে গুলিতে নিহত হন কেরানীগঞ্জের সরকারি ইস্পাহানি ডিগ্রি কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্র রিয়াজ হোসেন। রিয়াজ উপজেলার আটিভাওয়াল স্কুলের সাবেক ছাত্র ছিল। রিয়াজের মৃত্যুর প্রতিবাদ জানিয়ে শিক্ষার্থীদের পক্ষ রোববার সকালে থেকে স্কুলের সামনে মানববন্ধন করেন আন্দোলনকারীরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মানববন্ধন শেষে কয়েকশ আন্দোলনকারী মিছিল নিয়ে ঘাটারচর সড়কে মিছিল নিয়ে বের হয়। মিছিলটি কেরানীগঞ্জ মডেল থানা আওয়ামী লীগ কার্যালয় অতিক্রম করে যাওয়ার সময় আওয়ামী লীগের এক নেতা ফাঁকা গুলি করেন। এ সময় আন্দোলনকারীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। শত শত আন্দোলনকারী আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ধাওয়া দিয়ে কার্যালয়ে হামলা চালায়। কেউ পালিয়ে যান, কেউ মারধরের শিকার হন। এরপর হামলাকারীরা কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।

সরেজমিন দেখা যায়, এ সময় প্রাণ বাঁচাতে কার্যালয়ের দোতলার ছাদে আশ্রয় নেন কয়েকজন। কয়েকশ হামলাকারী সড়কে অবস্থান নিয়ে কার্যালয়ে ইট পাটকেল ছুড়তে থাকে। বেশিরভাগের হাতে ছিল লাঠিসোটা। মই বেয়ে আন্দোলনকারীরা ছাদে উঠে তাদের এক দফা গণপিটুনি দেন। এরপর নিচে নামিয়ে আনলে শত শত আন্দোলনকারী তাদের পিটিয়ে আহত করে। এরপর আন্দোলনকারীরা সড়ক ধরে পশ্চিমের দিকে অগ্রসর হয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সিদ্দিকের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এখান থেকে বেরিয়ে হামলাকারীরা আওয়ামী লীগ নেতা ও তারানগর ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ফারুকের বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। তবে এ সময় ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাউকে দেখা যায়নি।

কেরানীগঞ্জ মডেল থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসেন বিপ্লব বলেন, হামলাকারীদের গণপিটুনিতে আমাদের এক নেতা নিহত হয়েছেন। এছাড়াও বেশ কয়েকজন মুমূর্ষু অবস্থায় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

আওয়ামী লীগ নেতা আবু সিদ্দিক বলেন, আমার বাড়ি ও দুটি গাড়িতে আগুন দিয়েছে হামলাকারীরা।

তারানগর ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ফারুক বলেন, হামলাকারীরা আমার বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে।

কেরানীগঞ্জ সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন কবির বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আলামত সংগ্রহ করেছি। এখানে ভয়াবহ তাণ্ডব চালানো হয়েছে। এসব ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মানবজাতির মুক্তির দিশারি মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) আবুল হাশেম বক্কর

কেরানীগঞ্জে আ.লীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা, বাড়িতে আগুন

আপডেট সময় ১২:০২:৪২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৫ অগাস্ট ২০২৪

কেরানীগঞ্জের ঘাটারচর এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের গণপিটুনিতে কালিন্দী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৫নং ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক ইসতি (৩০) নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। তাদের মুমূর্ষু অবস্থায় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

রোববার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে হামলার ঘটনা ঘটে। আন্দোলনকারীরা একপর্যায়ে তারানগর ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ফারুক ও ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সিদ্দিকের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।

জানা যায়, ১৯ জুলাই মোহাম্মদপুরে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে গুলিতে নিহত হন কেরানীগঞ্জের সরকারি ইস্পাহানি ডিগ্রি কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্র রিয়াজ হোসেন। রিয়াজ উপজেলার আটিভাওয়াল স্কুলের সাবেক ছাত্র ছিল। রিয়াজের মৃত্যুর প্রতিবাদ জানিয়ে শিক্ষার্থীদের পক্ষ রোববার সকালে থেকে স্কুলের সামনে মানববন্ধন করেন আন্দোলনকারীরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মানববন্ধন শেষে কয়েকশ আন্দোলনকারী মিছিল নিয়ে ঘাটারচর সড়কে মিছিল নিয়ে বের হয়। মিছিলটি কেরানীগঞ্জ মডেল থানা আওয়ামী লীগ কার্যালয় অতিক্রম করে যাওয়ার সময় আওয়ামী লীগের এক নেতা ফাঁকা গুলি করেন। এ সময় আন্দোলনকারীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। শত শত আন্দোলনকারী আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ধাওয়া দিয়ে কার্যালয়ে হামলা চালায়। কেউ পালিয়ে যান, কেউ মারধরের শিকার হন। এরপর হামলাকারীরা কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।

সরেজমিন দেখা যায়, এ সময় প্রাণ বাঁচাতে কার্যালয়ের দোতলার ছাদে আশ্রয় নেন কয়েকজন। কয়েকশ হামলাকারী সড়কে অবস্থান নিয়ে কার্যালয়ে ইট পাটকেল ছুড়তে থাকে। বেশিরভাগের হাতে ছিল লাঠিসোটা। মই বেয়ে আন্দোলনকারীরা ছাদে উঠে তাদের এক দফা গণপিটুনি দেন। এরপর নিচে নামিয়ে আনলে শত শত আন্দোলনকারী তাদের পিটিয়ে আহত করে। এরপর আন্দোলনকারীরা সড়ক ধরে পশ্চিমের দিকে অগ্রসর হয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সিদ্দিকের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এখান থেকে বেরিয়ে হামলাকারীরা আওয়ামী লীগ নেতা ও তারানগর ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ফারুকের বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। তবে এ সময় ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাউকে দেখা যায়নি।

কেরানীগঞ্জ মডেল থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসেন বিপ্লব বলেন, হামলাকারীদের গণপিটুনিতে আমাদের এক নেতা নিহত হয়েছেন। এছাড়াও বেশ কয়েকজন মুমূর্ষু অবস্থায় বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

আওয়ামী লীগ নেতা আবু সিদ্দিক বলেন, আমার বাড়ি ও দুটি গাড়িতে আগুন দিয়েছে হামলাকারীরা।

তারানগর ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ফারুক বলেন, হামলাকারীরা আমার বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে।

কেরানীগঞ্জ সার্কেল অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাবুদ্দিন কবির বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আলামত সংগ্রহ করেছি। এখানে ভয়াবহ তাণ্ডব চালানো হয়েছে। এসব ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।