ঢাকা ০৯:৫৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০২৪, ৬ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুকৌশলে মুক্তিযুদ্ধে একজন ভাতা উত্তোলন করেন দুইজন জনের

ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম অধ্যায় হলো একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ।এই মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে জন্ম লাভ করে স্বাধীন সার্বভৌম আমাদের এই বাংলাদেশ। ৬ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে নিয়ে পাকিস্তানে ১৯৭০ সালের ডিসেম্বরের ৭ তারিখে সর্বপ্রথম অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়লাভ করেন আওয়ামিলীগ।

জনগণ প্রত্যাশা করেছিল জয়ী রাজনৈতিক দল আওয়ামিলীগ সরকার গঠন করে পূর্ব পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের শোষনের ইতিহাস এর গতি পাল্টাবেন কিন্তু পাকিস্তানের তৎকালীন শাসক গোষ্ঠী ও সামরিক কর্মকর্তার ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে শাসন ক্ষমতা কোনক্রমে বাঙ্গালির হস্তগত না করে বরং তারা বাঙালি জাতিকে হত্যার নীলনকশা করেন কিন্তু বাঙ্গালি সহজভাবে মেনে নিতে পারেনি।বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করে ৩০ লক্ষ শহীদ আর দু লক্ষ মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ নামক দেশের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে আওয়ামিলীগ যখন সরকার গঠনের মধ্য দিয়ে দেশের সকল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সন্মানি ভাতা প্রদান চালু করেন।এর ফলে সকল মুক্তিযোদ্ধা রাষ্ট্রীয়ভাবে সরকারি সুযোগ সুবিধা ভাতা নিয়ে থাকেন কিন্তু এই সুযোগে গাজী মোঃ ইউনুস সকলকে ধোঁকা দিয়ে দুই জায়গা থেকে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে মুক্তিযোদ্ধার ভাতা উত্তোলন করেন। তিনি সাধারণ মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ও একই সঙ্গে ডি- শ্রেণীর যুদ্ধহত মুক্তিযোদ্ধার ভাতা উত্তোলন করেন শুধু একটু নামের গড়মিল দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা।

বাংকে স্টেটমেন্ট অনুযায়ী সিরাজগঞ্জের কাজীপুর সোনালী বাংক থেকে ও সিরাজগঞ্জ সদর অগ্রণী ব্যাংক থেকে মুক্তিযোদ্ধার সন্মানী ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার ভাতা উত্তোলন করেন গাজী মোঃ ইউনুস উদ্দিন , সেখানেই দেয়া আছে পিতা কছিমুদ্দিন সরকার এর নামের জায়গায় তার মায়ের নাম সুখিতননেছা। শুধু কি তাই মায়ের নামের পাশে লেখা আছে স্ত্রীর নাম মনোয়ারা । তার দেয়া তথ্যে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার গেজেট নম্বর উল্লেখ রয়েছে (৮৯৭), জাতীয় পরিচয় পত্রে ঠিকানা হিসেবে মোঃ ইউনুস উদ্দিন, পিতাঃ কছিমুদ্দিন, মাতাঃ সুখিতন নেছা , গ্রামঃ গান্দাইল, ডাকঘরঃ গান্দাইল, থানাঃ কাজিপুর, জেলাঃসিরাজগঞ্জ ।

ইউনুস উদ্দিন জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বরঃ ১৫০২৫৭৭৬৪২৭ এবং মুক্তিবার্তা নম্বরঃ ৩১২০৬০১৮২, মুক্তিযোদ্ধার ভাতা জালিয়াতির বিষয় জানতে চাইলে কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহরাব হোসেন বলেন, আসলে একজন মুক্তিযোদ্ধা দুই জায়গা থেকে ভাতা পেতে পারেন না। এ রকম অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।

তিনি প্রভাবশালী হওয়ায় নাম না প্রকাশ করার শর্তে একাধিক মুক্তিযোদ্ধা বলেন, সাক্ষ্য দেওয়ার নামে তিনি টাকা নিয়ে মুক্তিযোদ্ধার পক্ষে সাক্ষ্য দিতেন। মুক্তিযোদ্ধার ভাতা জালিয়াতির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকার আমাদেরকে ভালবেসে ভাতা দিচ্ছে , একই সঙ্গে দুই জায়গাশ ভাতা উত্তোলন এর বিষয়টি প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে বিষয়টি স্বীকার করেন।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সুকৌশলে মুক্তিযুদ্ধে একজন ভাতা উত্তোলন করেন দুইজন জনের

আপডেট সময় ১০:১২:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ জুলাই ২০২৪

ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম অধ্যায় হলো একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ।এই মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে জন্ম লাভ করে স্বাধীন সার্বভৌম আমাদের এই বাংলাদেশ। ৬ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে নিয়ে পাকিস্তানে ১৯৭০ সালের ডিসেম্বরের ৭ তারিখে সর্বপ্রথম অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়লাভ করেন আওয়ামিলীগ।

জনগণ প্রত্যাশা করেছিল জয়ী রাজনৈতিক দল আওয়ামিলীগ সরকার গঠন করে পূর্ব পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের শোষনের ইতিহাস এর গতি পাল্টাবেন কিন্তু পাকিস্তানের তৎকালীন শাসক গোষ্ঠী ও সামরিক কর্মকর্তার ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে শাসন ক্ষমতা কোনক্রমে বাঙ্গালির হস্তগত না করে বরং তারা বাঙালি জাতিকে হত্যার নীলনকশা করেন কিন্তু বাঙ্গালি সহজভাবে মেনে নিতে পারেনি।বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধ করে ৩০ লক্ষ শহীদ আর দু লক্ষ মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ নামক দেশের সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে আওয়ামিলীগ যখন সরকার গঠনের মধ্য দিয়ে দেশের সকল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সন্মানি ভাতা প্রদান চালু করেন।এর ফলে সকল মুক্তিযোদ্ধা রাষ্ট্রীয়ভাবে সরকারি সুযোগ সুবিধা ভাতা নিয়ে থাকেন কিন্তু এই সুযোগে গাজী মোঃ ইউনুস সকলকে ধোঁকা দিয়ে দুই জায়গা থেকে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে মুক্তিযোদ্ধার ভাতা উত্তোলন করেন। তিনি সাধারণ মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ও একই সঙ্গে ডি- শ্রেণীর যুদ্ধহত মুক্তিযোদ্ধার ভাতা উত্তোলন করেন শুধু একটু নামের গড়মিল দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা।

বাংকে স্টেটমেন্ট অনুযায়ী সিরাজগঞ্জের কাজীপুর সোনালী বাংক থেকে ও সিরাজগঞ্জ সদর অগ্রণী ব্যাংক থেকে মুক্তিযোদ্ধার সন্মানী ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার ভাতা উত্তোলন করেন গাজী মোঃ ইউনুস উদ্দিন , সেখানেই দেয়া আছে পিতা কছিমুদ্দিন সরকার এর নামের জায়গায় তার মায়ের নাম সুখিতননেছা। শুধু কি তাই মায়ের নামের পাশে লেখা আছে স্ত্রীর নাম মনোয়ারা । তার দেয়া তথ্যে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তার গেজেট নম্বর উল্লেখ রয়েছে (৮৯৭), জাতীয় পরিচয় পত্রে ঠিকানা হিসেবে মোঃ ইউনুস উদ্দিন, পিতাঃ কছিমুদ্দিন, মাতাঃ সুখিতন নেছা , গ্রামঃ গান্দাইল, ডাকঘরঃ গান্দাইল, থানাঃ কাজিপুর, জেলাঃসিরাজগঞ্জ ।

ইউনুস উদ্দিন জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বরঃ ১৫০২৫৭৭৬৪২৭ এবং মুক্তিবার্তা নম্বরঃ ৩১২০৬০১৮২, মুক্তিযোদ্ধার ভাতা জালিয়াতির বিষয় জানতে চাইলে কাজিপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহরাব হোসেন বলেন, আসলে একজন মুক্তিযোদ্ধা দুই জায়গা থেকে ভাতা পেতে পারেন না। এ রকম অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।

তিনি প্রভাবশালী হওয়ায় নাম না প্রকাশ করার শর্তে একাধিক মুক্তিযোদ্ধা বলেন, সাক্ষ্য দেওয়ার নামে তিনি টাকা নিয়ে মুক্তিযোদ্ধার পক্ষে সাক্ষ্য দিতেন। মুক্তিযোদ্ধার ভাতা জালিয়াতির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকার আমাদেরকে ভালবেসে ভাতা দিচ্ছে , একই সঙ্গে দুই জায়গাশ ভাতা উত্তোলন এর বিষয়টি প্রথমে অস্বীকার করলেও পরে বিষয়টি স্বীকার করেন।