রংপুর মেডিকেল কলেজের আবাসিক ভবন থেকে মো. আখতারুজ্জামান (৫২) নামে এক চিকিৎসকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হাসপাতালের শেখ রাসেল পোস্ট গ্রাজুয়েশন ডরমেটরি ভবনের ষষ্ঠ তলার ৬-এফ কক্ষ থেকে তার লাশটি উদ্ধার করা হয়।
আখতারুজ্জামানের বাড়ি নীলফামারীর সদর উপজেলার প্রতিভা নীলপাড়া গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মোজাম্মেল হকের ছেলে। তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পিজি হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের মেডিকেল অফিসার। তিনি রংপুর মেডিকেল কলেজে পোস্ট গ্রাজুয়েটের শিক্ষার্থী ছিলেন। গত তিন দিন আগে পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য এখানে এসেছেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার সকালে আবাসিক ভবনের ওই কক্ষে লাশ থেকে রক্ত গড়িয়ে দরজার বাইরে বের হতে দেখে হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক মিলনুর রহমান মিলন পুলিশকে জানান। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দরজা ভেঙে ওই চিকিৎসকের লাশ উদ্ধার করেন। পুলিশ ও চিকিৎসকরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন তিনি স্ট্রোক করে মারা গেছেন।
জানা যায়, ওই চিকিৎসক দীর্ঘদিন ফ্যাটি লিভারে ভুগছিলেন। তিনি অস্বাভাবিক খাবার খেতেন। কখনো কখনো দিনে এক সঙ্গে ২৫০ গ্রামের কোল্ড ড্রিংকস ৫০টি, ৪০টি ডিম সঙ্গে প্রচুর ফাস্টফুড খেতেন। খাওয়ার বিষয়ে তাকে নিষেধ করলেও তিনি শোনতেন না। তার দুই স্ত্রী রয়েছে। বড় স্ত্রী জেসমিন আক্তার ও ছোট স্ত্রী কোহিনুর আক্তার।
ওই চিকিৎসকের দ্বিতীয় স্ত্রী কোহিনূর আক্তার বলেন, তার বাড়ি রংপুর নগরীর ধাপ এলাকায়। তার স্বামী ঢাকায় পিজি হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার হিসাবে কর্মরত ছিলেন। রংপুর মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা করেছেন। এখানে তিনি পোস্ট গ্র্যাজুয়েট করতে আটবার পরীক্ষা দিয়ে পাস করতে পারেননি। তার নবমবার পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। শারীরিক অসুস্থতার কারণে উনি মানসিকভাবে চিন্তিত ছিলেন। তিনি লিভার ও পায়ের ব্যথাসহ কয়েকটি রোগেও ভুগছিলেন।
তিনি আরও বলেন, তার বাড়ি ঢাকায় জানতাম, এখন শুনছি নীলফামারীতে। আগের স্ত্রীরও সন্তান রয়েছে। কীভাবে মৃতু হলো এখনো কিছু বলতে পারছি না।
বিষয়টি নিশ্চিত করে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (কোতয়ালি জোন) আরিফুজ্জামান জানান, খবর পেয়ে চিকিৎসকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত না হওয়া পর্যন্ত কোনো কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।