ঢাকা ১১:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
নাশকতার উদ্দেশ্যে গোপন বৈঠক, ৮ আওয়ামী লীগ কর্মী আটক যাকাত ফাউন্ডেশন অব আমেরিকার মহতী উদ্যোগ প্রশংসার দাবিদার উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিকাশ চন্দ্র বর্মন বকশীগঞ্জে স্থানীয়দের সঙ্গে ৩৫ বিজিবির অধিনায়কের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত কুমিল্লার নাশকতার মামলায় অব্যাহতি পেলেন খালেদা জিয়া ভোলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হলেন এ্যাডভোকেট ফরিদুর রহমান গাজীপুরে দখল-দূষণের কবলে বেশিরভাগ নদী-খাল, নিরব ভূমিকায় কতৃপক্ষ গাজীপুরের কালিয়াকৈরে কারখানায় হামলা ও ভাঙচুর আহত ২ শ্রমিক গুলশান-বাড্ডা এলাকায় তিনজনকে কুপিয়ে বিপুল টাকা-ডলার-ইউরো ছিনতাই শরীয়তপুর -২ জামায়েত প্রার্থী অধ্যাপক ডাঃ মাহমুদ সুনামগঞ্জের মধ্যনগরে যুবলীগ ও কৃষক লীগ নেতা গ্রেফতার

মায়ের পরকীয়ার জেরে মেয়ের আত্মহত্যা

বরিশালের বানারীপাড়ায় মায়ের পরকীয়ার জেরে মেয়ে জান্নাতুল খানমের (১৩) আত্মহত্যার খবর পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার উপজেলার আহম্মদাবাদ বেতাল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত জান্নাতুল সলিয়াবাপুর ইউনিয়নের ধারালিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী।

এ বিষয়ে নিহত জান্নাতুলের বৃদ্ধ দাদা মো. ইউফ হাওলাদার যুগান্তরকে জানান, তার পালক ছেলে পাপন হাওলাদারকে তিনি লেখাপড়া শিখিয়ে সৌদি আরব পাঠিয়েছেন। পার্শ্ববর্তী ধারালিয়া গ্রামের সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক মো. আবুল কালামের মেয়ে সান্তাকে তার ছেলে পাপনের সঙ্গে বিয়ে দিয়েছেন। বিয়ের পর তাদের সংসারে দুটি সন্তান হয়েছে। ছেলে সৌদি থাকার কারণে তার পালক পুত্রবধূ অন্যের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে।

এ নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা একাধিকবার শালিশ বৈঠক করেছেন। এক পর্যায়ে সান্তার সঙ্গে তার ছেলের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। পরে সান্তা তার ভুল বুঝতে পেরে মেয়ে জান্নাতুলকে দিয়ে তার বাবা পাপনকে ফোন করান। এ সময় সান্তা তার দুই সন্তানের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে পাপনের কাছে অতীতের সব ভুল ক্ষমা চেয়ে পুনরায় তাকে বিয়ে করার কথা বলেন। ছেলেমেয়ের কথা চিন্তা করে সৌদি প্রবাসী পাপন সম্প্রতি মোবাইল ফোনে সান্তাকে পুনরায় বিয়ে করেন।

এরপর থেকে সান্তা তার দুই সন্তান জান্নাতুল (১৩) ও ছেলে আবদুল্লাহকে (৮) নিয়ে ধারালিয়া গ্রামের মোক্তার বাড়িতে ভাড়াটিয়া বাসায় বসবাস শুরু করেন। মঙ্গলবার সকালে মেয়ে জান্নাতুল ঘুম থেকে জেগে মাকে খুঁজে না পেয়ে প্রতিবেশিদের জিজ্ঞেস করে। এ সময় প্রতিবেশিরা তার মায়ের পরকীয়ায় আসক্ত থাকার বিষয়ে কটাক্ষ করেন। পরে সেখান থেকে জান্নাতুল তার বাড়িতে ফিরে যায়। এদিন সকাল ৮টার দিকে প্রতিবেশিরা জান্নাতুলকে না দেখে তার ঘরে ডাকতে যান। এ সময় তারা জান্নাতুলকে ওই ঘরের বাথরুমে লোহার গলায় ওড়না পেঁচানো ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। সেখান থেকে তারা জান্নাতুলকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ওই দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত স্কুল ছাত্রী জান্নাতুলের মা সান্তা বেগমের খোঁজ পাওয়া যায়নি বলে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মমিন উদ্দিন যুগান্তরকে জানান।

এ ব্যাপারে সান্তার বাবা মো. আবুল কালাম যুগান্তরকে জানান, মেয়ের পরকীয়ার কারণে দুই বছর আগে তার মেয়ে সান্তার সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। সে কারণে তিনি সান্তার কোনো খোঁজখবর রাখেন না।

এদিকে স্কুলছাত্রী জান্নাতুলের মৃত্যুর রহস্য উদ্ধারের বিষয়ে থানার ওসি মো. মাইনুল ইসলাম ও পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মমিন উদ্দিন যুগান্তরকে বলেন, প্রাথমিকভাবে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

নাশকতার উদ্দেশ্যে গোপন বৈঠক, ৮ আওয়ামী লীগ কর্মী আটক

মায়ের পরকীয়ার জেরে মেয়ের আত্মহত্যা

আপডেট সময় ০৯:৪৪:৪৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১২ জুন ২০২৪

বরিশালের বানারীপাড়ায় মায়ের পরকীয়ার জেরে মেয়ে জান্নাতুল খানমের (১৩) আত্মহত্যার খবর পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার উপজেলার আহম্মদাবাদ বেতাল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত জান্নাতুল সলিয়াবাপুর ইউনিয়নের ধারালিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী।

এ বিষয়ে নিহত জান্নাতুলের বৃদ্ধ দাদা মো. ইউফ হাওলাদার যুগান্তরকে জানান, তার পালক ছেলে পাপন হাওলাদারকে তিনি লেখাপড়া শিখিয়ে সৌদি আরব পাঠিয়েছেন। পার্শ্ববর্তী ধারালিয়া গ্রামের সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক মো. আবুল কালামের মেয়ে সান্তাকে তার ছেলে পাপনের সঙ্গে বিয়ে দিয়েছেন। বিয়ের পর তাদের সংসারে দুটি সন্তান হয়েছে। ছেলে সৌদি থাকার কারণে তার পালক পুত্রবধূ অন্যের সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে।

এ নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা একাধিকবার শালিশ বৈঠক করেছেন। এক পর্যায়ে সান্তার সঙ্গে তার ছেলের ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। পরে সান্তা তার ভুল বুঝতে পেরে মেয়ে জান্নাতুলকে দিয়ে তার বাবা পাপনকে ফোন করান। এ সময় সান্তা তার দুই সন্তানের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে পাপনের কাছে অতীতের সব ভুল ক্ষমা চেয়ে পুনরায় তাকে বিয়ে করার কথা বলেন। ছেলেমেয়ের কথা চিন্তা করে সৌদি প্রবাসী পাপন সম্প্রতি মোবাইল ফোনে সান্তাকে পুনরায় বিয়ে করেন।

এরপর থেকে সান্তা তার দুই সন্তান জান্নাতুল (১৩) ও ছেলে আবদুল্লাহকে (৮) নিয়ে ধারালিয়া গ্রামের মোক্তার বাড়িতে ভাড়াটিয়া বাসায় বসবাস শুরু করেন। মঙ্গলবার সকালে মেয়ে জান্নাতুল ঘুম থেকে জেগে মাকে খুঁজে না পেয়ে প্রতিবেশিদের জিজ্ঞেস করে। এ সময় প্রতিবেশিরা তার মায়ের পরকীয়ায় আসক্ত থাকার বিষয়ে কটাক্ষ করেন। পরে সেখান থেকে জান্নাতুল তার বাড়িতে ফিরে যায়। এদিন সকাল ৮টার দিকে প্রতিবেশিরা জান্নাতুলকে না দেখে তার ঘরে ডাকতে যান। এ সময় তারা জান্নাতুলকে ওই ঘরের বাথরুমে লোহার গলায় ওড়না পেঁচানো ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। সেখান থেকে তারা জান্নাতুলকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ওই দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত স্কুল ছাত্রী জান্নাতুলের মা সান্তা বেগমের খোঁজ পাওয়া যায়নি বলে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মমিন উদ্দিন যুগান্তরকে জানান।

এ ব্যাপারে সান্তার বাবা মো. আবুল কালাম যুগান্তরকে জানান, মেয়ের পরকীয়ার কারণে দুই বছর আগে তার মেয়ে সান্তার সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। সে কারণে তিনি সান্তার কোনো খোঁজখবর রাখেন না।

এদিকে স্কুলছাত্রী জান্নাতুলের মৃত্যুর রহস্য উদ্ধারের বিষয়ে থানার ওসি মো. মাইনুল ইসলাম ও পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মমিন উদ্দিন যুগান্তরকে বলেন, প্রাথমিকভাবে থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।