ঢাকা ০৬:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৪, ১১ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

টাকার লোভে গর্ভের যমজ সন্তান বিক্রি, অতঃপর…

টাকার লোভে চট্টগ্রামে গর্ভে থাকা অবস্থায় যমজ দুই সন্তানকে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন এক দম্পতি। জন্মদানের পরপরই ছেলে সন্তানকে ৩ লাখ আর কন্যা সন্তানকে ১ লাখ টাকায় বিক্রি করেন দুজনে মিলে।

তবে সন্তান বিক্রির ভাগের টাকা স্ত্রীর কাছ থেকে হাতিয়ে নেন স্বামী। এতে স্ত্রী মুন্নি আক্তার ক্ষিপ্ত হয়ে স্বামী হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে সন্তান বিক্রির অভিযোগ এনে আদালতে মামলা ঠুকে দেন। আদালত মামলা গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন।

পিবিআইয়ের তদন্তে উঠে আসে ‘যোগসাজশে’ টাকা দিয়ে এ দম্পতির ‘সন্তান বিক্রির’ তথ্য। ৬ মাস পর শনিবার রাতে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া ও নগরীর অক্সিজেন এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিক্রি হওয়া ফুটফুটে সেই দুই শিশুকে উদ্ধার করে তদন্ত সংস্থা পিবিআই।

পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর কর্মকর্তারা জানান, গত ৩ জানুয়ারি নগরীর পাঁচলাইশের পলি হাসপাতালে ওই দম্পতি যমজ সন্তানের জন্ম দেন। ওই দম্পতি নবজাতক সন্তানদের (১ ছেলে ও ১ মেয়ে) অজ্ঞাতনামা নারীদের হাতে তুলে দেন জন্মের দিনই। অন্য সন্তানরা এর প্রতিবাদ করলে তাদের বাথরুমে আটকে রাখা হয়।

পিবিআই তদন্ত করে জানতে পারে, রাশেদা বেগম নামে এক নারীর মাধ্যমে ওই দম্পতি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া এলাকার শিরু আকতার নামে এক নারীর কাছে ৩ লাখ টাকায় পুত্রসন্তানটি বিক্রি করে দেন। আর বোয়ালখালী এলাকার রুনা আক্তারের কাছে কন্যাশিশুটি ১ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন। আর মধ্যস্থতাকারী রাশেদা বেগম নেন ১ লাখ টাকা। এছাড়াও প্রসবকালীন চিকিৎসা বাবদ অর্থ দেন তারা। বেশ কিছু দিন যাওয়ার পর ‘সন্তান বিক্রির’ তিন লাখ টাকা থেকে স্ত্রীকে মারধর করে তার স্বামী দেড় লাখ টাকা নিয়ে যান। এতে স্ত্রী তাঁর স্বামীর ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে আদালতে মামলা করেন। পরে আদালতের নির্দেশে পিবিআই তদন্তে নামলে ওঠে আসে ‘আসল রহস্য।’

পিবিআই পরিদর্শক মো. ইলিয়াস খান যুগান্তরকে বলেন, ওই দম্পতি গর্ভে থাকা অবস্থায় যমজ সন্তানদের ‘বিক্রির’ সিদ্ধান্ত নেন। বেশ কিছু দিন যাওয়ার পর ‘সন্তান বিক্রির’ তিন লাখ টাকা থেকে স্ত্রীকে মারধর করে তার স্বামী দেড় লাখ টাকা নিয়ে যান। শিশু দুইটি আমাদের হেফাজতে রয়েছে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

টাকার লোভে গর্ভের যমজ সন্তান বিক্রি, অতঃপর…

আপডেট সময় ০২:৫১:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ জুন ২০২৪

টাকার লোভে চট্টগ্রামে গর্ভে থাকা অবস্থায় যমজ দুই সন্তানকে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন এক দম্পতি। জন্মদানের পরপরই ছেলে সন্তানকে ৩ লাখ আর কন্যা সন্তানকে ১ লাখ টাকায় বিক্রি করেন দুজনে মিলে।

তবে সন্তান বিক্রির ভাগের টাকা স্ত্রীর কাছ থেকে হাতিয়ে নেন স্বামী। এতে স্ত্রী মুন্নি আক্তার ক্ষিপ্ত হয়ে স্বামী হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে সন্তান বিক্রির অভিযোগ এনে আদালতে মামলা ঠুকে দেন। আদালত মামলা গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন।

পিবিআইয়ের তদন্তে উঠে আসে ‘যোগসাজশে’ টাকা দিয়ে এ দম্পতির ‘সন্তান বিক্রির’ তথ্য। ৬ মাস পর শনিবার রাতে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া ও নগরীর অক্সিজেন এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিক্রি হওয়া ফুটফুটে সেই দুই শিশুকে উদ্ধার করে তদন্ত সংস্থা পিবিআই।

পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর কর্মকর্তারা জানান, গত ৩ জানুয়ারি নগরীর পাঁচলাইশের পলি হাসপাতালে ওই দম্পতি যমজ সন্তানের জন্ম দেন। ওই দম্পতি নবজাতক সন্তানদের (১ ছেলে ও ১ মেয়ে) অজ্ঞাতনামা নারীদের হাতে তুলে দেন জন্মের দিনই। অন্য সন্তানরা এর প্রতিবাদ করলে তাদের বাথরুমে আটকে রাখা হয়।

পিবিআই তদন্ত করে জানতে পারে, রাশেদা বেগম নামে এক নারীর মাধ্যমে ওই দম্পতি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া এলাকার শিরু আকতার নামে এক নারীর কাছে ৩ লাখ টাকায় পুত্রসন্তানটি বিক্রি করে দেন। আর বোয়ালখালী এলাকার রুনা আক্তারের কাছে কন্যাশিশুটি ১ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন। আর মধ্যস্থতাকারী রাশেদা বেগম নেন ১ লাখ টাকা। এছাড়াও প্রসবকালীন চিকিৎসা বাবদ অর্থ দেন তারা। বেশ কিছু দিন যাওয়ার পর ‘সন্তান বিক্রির’ তিন লাখ টাকা থেকে স্ত্রীকে মারধর করে তার স্বামী দেড় লাখ টাকা নিয়ে যান। এতে স্ত্রী তাঁর স্বামীর ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে আদালতে মামলা করেন। পরে আদালতের নির্দেশে পিবিআই তদন্তে নামলে ওঠে আসে ‘আসল রহস্য।’

পিবিআই পরিদর্শক মো. ইলিয়াস খান যুগান্তরকে বলেন, ওই দম্পতি গর্ভে থাকা অবস্থায় যমজ সন্তানদের ‘বিক্রির’ সিদ্ধান্ত নেন। বেশ কিছু দিন যাওয়ার পর ‘সন্তান বিক্রির’ তিন লাখ টাকা থেকে স্ত্রীকে মারধর করে তার স্বামী দেড় লাখ টাকা নিয়ে যান। শিশু দুইটি আমাদের হেফাজতে রয়েছে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’