ঢাকা ০৬:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৪, ১১ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিদ্যুৎস্পর্শে প্রাণ গেল শিশুর, মাদ্রাসা সুপারের বাড়ি ঘেরাও

পাবনার সাঁথিয়ায় পুন্ডুরিয়া দাখিল মাদ্রাসার টিনঘরের চাল থেকে ফুটবল আনতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পর্শে তানজিল (৭) নামে এক স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। তানজিল করমজা ইউনিয়নের পুন্ডুরিয়া গ্রামের মিন্টু প্রামাণিকের ছেলে। রোববার সন্ধ্যায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়ে লাশ নিয়ে মাদ্রাসা চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল করেন এবং মাদ্রাসা সুপারের বাড়ি ঘেরাও করেন বলে জানা গেছে।

এর আগেও শুক্রবার বিল্লাল (৯) নামে এক শিশু ওই মাদ্রাসার টিনের চাল থেকেই ফুটবল আনতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পর্শ হয়ে পাবনা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আহত বিল্লাল বাওইটোলা গ্রামে তার নানাবাড়িতে বেড়াতে এসেছিল। সে সাঁথিয়া উপজেলার সোনাতলা গ্রামের রহম ফকিরের ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রতিদিনের মতো ঘটনার দিন বিকালে পুন্ডুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তানজিল বন্ধুদের সঙ্গে ফুটবল খেলছিল। খেলার একপর্যায়ে ফুটবলটি পুন্ডুরিয়া দাখিল মাদ্রাসার টিনের চালের ওপরে আটকে গেলে তানজিল গ্রিল বেয়ে ওপর থেকে সেটি আনতে যায়। এ সময় টিনের চাল বিদ্যুতায়িত হয়ে মাটিতে ছিটকে পড়ে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্য ঘোষণা করেন।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, গত শুক্রবার পুন্ডুরিয়া দাখিল মাদ্রাসার ওই টিনের চালেই বিদ্যুৎস্পর্শ হয়ে এক শিশু গুরুতর আহত হয়েছে। এর পরও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ কেন বিদ্যুৎ মেরামতের কাজ করেননি? নাকি ছেলেরা চাল থেকে বল আনায় টিনের ক্ষতি হয় বলেই কি চাল বিদ্যুতায়িত করে রেখেছিল কর্তৃপক্ষ? এটা আমাদের প্রশ্ন। আমরা এর সঠিক তদন্তের মাধ্যমে বিচার চাই।

পুন্ডুরিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপারিন্টেন্ডেন্ট আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ‘শুক্রবার একটি ছেলে বিদ্যুৎস্পর্শ হওয়ার পর আমরা টেস্টার দিয়ে চেক করে দেখেছি; কিন্তু কোথাও কোনো সমস্যা পাইনি। আজ কীভাবে যে কি হলো ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না। আর এমনিতেই তো ছেলেরা চালে উঠে লাফালাফি করে এতে দুর্ঘটনা হতেই পারে।’

আহত বিল্লালের বাবা রহম ফকির জানান, আমার ছেলে পুন্ডুরিয়া মাদ্রাসার চালে বিদ্যুৎস্পর্শ হয়ে চাল থেকে পড়ে গিয়ে মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে গেছে বলে ডাক্তাররা জানিয়েছেন। আমার ছেলেকে পাবনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।

বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও)মাহমুদুল করিম রাজু জানান, ছেলেটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসার পর আমাদের কর্তব্যরত চিকিৎসক বুঝতে পারে ছেলেটির ঘটনাস্থলেই মারা গেছে।

 

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বিদ্যুৎস্পর্শে প্রাণ গেল শিশুর, মাদ্রাসা সুপারের বাড়ি ঘেরাও

আপডেট সময় ০২:৪৬:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ জুন ২০২৪

পাবনার সাঁথিয়ায় পুন্ডুরিয়া দাখিল মাদ্রাসার টিনঘরের চাল থেকে ফুটবল আনতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পর্শে তানজিল (৭) নামে এক স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। তানজিল করমজা ইউনিয়নের পুন্ডুরিয়া গ্রামের মিন্টু প্রামাণিকের ছেলে। রোববার সন্ধ্যায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর স্থানীয়রা উত্তেজিত হয়ে লাশ নিয়ে মাদ্রাসা চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল করেন এবং মাদ্রাসা সুপারের বাড়ি ঘেরাও করেন বলে জানা গেছে।

এর আগেও শুক্রবার বিল্লাল (৯) নামে এক শিশু ওই মাদ্রাসার টিনের চাল থেকেই ফুটবল আনতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পর্শ হয়ে পাবনা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আহত বিল্লাল বাওইটোলা গ্রামে তার নানাবাড়িতে বেড়াতে এসেছিল। সে সাঁথিয়া উপজেলার সোনাতলা গ্রামের রহম ফকিরের ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, প্রতিদিনের মতো ঘটনার দিন বিকালে পুন্ডুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তানজিল বন্ধুদের সঙ্গে ফুটবল খেলছিল। খেলার একপর্যায়ে ফুটবলটি পুন্ডুরিয়া দাখিল মাদ্রাসার টিনের চালের ওপরে আটকে গেলে তানজিল গ্রিল বেয়ে ওপর থেকে সেটি আনতে যায়। এ সময় টিনের চাল বিদ্যুতায়িত হয়ে মাটিতে ছিটকে পড়ে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত্য ঘোষণা করেন।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, গত শুক্রবার পুন্ডুরিয়া দাখিল মাদ্রাসার ওই টিনের চালেই বিদ্যুৎস্পর্শ হয়ে এক শিশু গুরুতর আহত হয়েছে। এর পরও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ কেন বিদ্যুৎ মেরামতের কাজ করেননি? নাকি ছেলেরা চাল থেকে বল আনায় টিনের ক্ষতি হয় বলেই কি চাল বিদ্যুতায়িত করে রেখেছিল কর্তৃপক্ষ? এটা আমাদের প্রশ্ন। আমরা এর সঠিক তদন্তের মাধ্যমে বিচার চাই।

পুন্ডুরিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপারিন্টেন্ডেন্ট আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ‘শুক্রবার একটি ছেলে বিদ্যুৎস্পর্শ হওয়ার পর আমরা টেস্টার দিয়ে চেক করে দেখেছি; কিন্তু কোথাও কোনো সমস্যা পাইনি। আজ কীভাবে যে কি হলো ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না। আর এমনিতেই তো ছেলেরা চালে উঠে লাফালাফি করে এতে দুর্ঘটনা হতেই পারে।’

আহত বিল্লালের বাবা রহম ফকির জানান, আমার ছেলে পুন্ডুরিয়া মাদ্রাসার চালে বিদ্যুৎস্পর্শ হয়ে চাল থেকে পড়ে গিয়ে মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে গেছে বলে ডাক্তাররা জানিয়েছেন। আমার ছেলেকে পাবনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।

বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও)মাহমুদুল করিম রাজু জানান, ছেলেটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসার পর আমাদের কর্তব্যরত চিকিৎসক বুঝতে পারে ছেলেটির ঘটনাস্থলেই মারা গেছে।