ঢাকা ০৬:১৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
জুলাই -আগস্ট বিপ্লবে আহত ও শহীদদের স্মরণে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মরণ সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান খুলনা কেএমপি নগরীতে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের লিডারসহ গ্রেফতার -২ বকশীগঞ্জে নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার-২ মির্জাপুর সরকারি এস কে পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক অনুষ্ঠান- ২০২৫ সম্পৃর্ন ডিসেম্বর অথবা জানুয়ারিতে নির্বাচন, ভোট হবে ব্যালটে বগুড়া শেরপুরে কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে দুই কিশোর গ্রেপ্তার চুনারুঘাটে টিউবওয়েলের পানি শুকিয়ে যাওয়ায় পানিশূন্যতা: জনজীবন বিপর্যস্ত বায়ুদূষণের শীর্ষে চীনের তিন শহর, সঙ্গে ঢাকাও ছাত্রদের প্রতিনিধি সরকারে রেখে দল নির্বাচন করলে মানবে না বিএনপি দুই ব্রাজিলিয়ানের তাণ্ডবে প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে দিলো রিয়াল

কনস্টেবল মনিরুল নিহত : ‘ঘাতক’ কাউসারের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

রাজধানীর বারিধারা ডিপ্লোমেটিক জোনের ফিলিস্তিন দূতাবাসের সামনে ডিউটিরত কনস্টেবল মনিরুল ইসলামকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। নিহতের বড় ভাই বাদী হয়ে ঘাতক কনস্টেবল কাউসার আলীকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গুলশান থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম। তিনি বলেন, দায়ের করা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কনস্টেবল কাউসারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে শনিবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টা থেকে ১২টা ৫ মিনিটের মধ্যে রাজধানীর গুলশান-বারিধারার কূটনীতিক এলাকায় ফিলিস্তিন দূতাবাসের সামনে সহকর্মীর গুলিতে নিহত হন কনস্টেবল মনিরুল ইসলাম।

একই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন জাপান দূতাবাসের এক গাড়িচালকও। তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। একই ঘটনায় আরেকজন আরোহী পথচারী হয়েছেন। তবে তার সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।

ঘটনার খবরে ঘটনাস্থলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত হন। মোতায়েন করা হয় সোয়াট টিম। পরে রাত পৌনে ২টার দিকে ঘাতক কনস্টেবলকে হেফাজতে নেয় গুলশান থানা পুলিশ।

শনিবার (৮ জুন) দিবাগত ২টায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন।

ঘাতক কাউসার সম্পর্কে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত কয়েকদিন ধরে কাউসার আলী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। গত ৫-৬ দিন ধরে তিনি কারো সঙ্গে ঠিকভাবে কথা বলতেন না। বলতে গেলে গত ৫-৬ দিন ধরে তিনি চুপচাপ ছিলেন, কারো সঙ্গে কথা বলতেন না। ঘটনা ঘটিয়েও ভারসাম্যহীন আচরণ করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, মনিরুল ইসলামকে গুলি করে হত্যা করার পর কাউসার আলী ঘটনাস্থলে আশপাশে ঘোরাফেরা করছিলেন। কিছু সময় তিনি দূতাবাসের সামনে বসেছিলেন। তার ঘুরাফেরা ও আচরণ দেখে মনে হচ্ছিল মানসিকভাবে বিপর্যস্ত।

রাতেই ডিএমপির ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার আরিফুল ইসলাম সরকার বলেন, আমাদের প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে কাউসার আলী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় ছিলেন। প্রাথমিকভাবে আমরা আক্রমণকারী পুলিশ সদস্যের ব্যাপারে যতটুকু জেনেছি, তিনি পাঁচ-ছয় দিন থেকে খুব চুপচাপ ছিলেন। তার অন্যান্য সহকর্মীদের সঙ্গেও কথা বলছিলেন না। তার ব্যাচমেটদের সঙ্গে কথা বলে এসব জেনেছি।

ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে এসে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ঘটনাস্থলে আমাদের লোক ছিল, ঘটনা যিনি ঘটিয়েছেন তিনিও আমাদের লোক। আসলে ঘটনাটা কী কারণে ঘটেছে সেটা আমরা জানার চেষ্টা করছি।

রোববার (৯ জুন) সকাল ১১টার দিকে গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) রিফাত রহমান শামীম ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাতেই ঘাতক কনস্টেবল কাউসারকে নিরস্ত্র করে হেফাজতে নেওয়া হয়। তাকে থানা হেফাজতে নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, কিন্তু নিরুত্তাপ কনস্টেবল কাউসার।

ডিসি রিফাত বলেন, তিনি দীর্ঘদিন পুলিশে কর্মরত। পাগলের বেশ ধরেছেন তিনি। ঘটনা স্পর্শকাতর। ঘটনা গুরুতর। এই অপরাধের শাস্তি সম্পর্কে জানেন কনস্টেবল কাউসার। সংগত কারণে তিনি পাগলের বেশ ধরতে পারেন। মুখে কুলুপ এঁটেছেন, অধিকাংশ প্রশ্নের উত্তর তিনি দিচ্ছেন না।

একাধিক গুলি ছুড়ে কনস্টেবল মনিরুলকে হত্যা করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে কী মনে হয়? ঘাতক কাউসার মানসিকভাবে বিপর্যস্ত বা ভারসাম্যহীন? এমন প্রশ্নের উত্তরে ডিসি রিফাত বলেন, পাগল প্রমাণ করতে পারলে তিনি মামলায় সুবিধা পেতে পারেন। সেটা জেনে-বুঝেই হয়ত পাগলের বেশ ধরেছেন। আমরা আরও জিজ্ঞাসাবাদ করবো। তারপর বলা সম্ভব, ঘটনার আসল মোটিভ।

মামলা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মামলার প্রস্তুতি চলছে। মামলা করবেন নিহত কনস্টেবল মনিরুল ইসলামের বড় ভাই। তিনি ঘটনা শুনে রাতেই গুলশান আসেন। তিনিও পুলিশে চাকরি করেন। তিনি মামলার বাদী হবেন। মামলা নথিভুক্ত হওয়ার পর আটক কনস্টেবল কাউসারকে আদালতে পাঠানো হবেে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

জুলাই -আগস্ট বিপ্লবে আহত ও শহীদদের স্মরণে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মরণ সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

কনস্টেবল মনিরুল নিহত : ‘ঘাতক’ কাউসারের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

আপডেট সময় ১০:৫৬:৪৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ জুন ২০২৪

রাজধানীর বারিধারা ডিপ্লোমেটিক জোনের ফিলিস্তিন দূতাবাসের সামনে ডিউটিরত কনস্টেবল মনিরুল ইসলামকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। নিহতের বড় ভাই বাদী হয়ে ঘাতক কনস্টেবল কাউসার আলীকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গুলশান থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম। তিনি বলেন, দায়ের করা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কনস্টেবল কাউসারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে শনিবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টা থেকে ১২টা ৫ মিনিটের মধ্যে রাজধানীর গুলশান-বারিধারার কূটনীতিক এলাকায় ফিলিস্তিন দূতাবাসের সামনে সহকর্মীর গুলিতে নিহত হন কনস্টেবল মনিরুল ইসলাম।

একই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন জাপান দূতাবাসের এক গাড়িচালকও। তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। একই ঘটনায় আরেকজন আরোহী পথচারী হয়েছেন। তবে তার সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।

ঘটনার খবরে ঘটনাস্থলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত হন। মোতায়েন করা হয় সোয়াট টিম। পরে রাত পৌনে ২টার দিকে ঘাতক কনস্টেবলকে হেফাজতে নেয় গুলশান থানা পুলিশ।

শনিবার (৮ জুন) দিবাগত ২টায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন।

ঘাতক কাউসার সম্পর্কে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত কয়েকদিন ধরে কাউসার আলী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। গত ৫-৬ দিন ধরে তিনি কারো সঙ্গে ঠিকভাবে কথা বলতেন না। বলতে গেলে গত ৫-৬ দিন ধরে তিনি চুপচাপ ছিলেন, কারো সঙ্গে কথা বলতেন না। ঘটনা ঘটিয়েও ভারসাম্যহীন আচরণ করেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, মনিরুল ইসলামকে গুলি করে হত্যা করার পর কাউসার আলী ঘটনাস্থলে আশপাশে ঘোরাফেরা করছিলেন। কিছু সময় তিনি দূতাবাসের সামনে বসেছিলেন। তার ঘুরাফেরা ও আচরণ দেখে মনে হচ্ছিল মানসিকভাবে বিপর্যস্ত।

রাতেই ডিএমপির ডিপ্লোম্যাটিক সিকিউরিটি জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার আরিফুল ইসলাম সরকার বলেন, আমাদের প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে কাউসার আলী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় ছিলেন। প্রাথমিকভাবে আমরা আক্রমণকারী পুলিশ সদস্যের ব্যাপারে যতটুকু জেনেছি, তিনি পাঁচ-ছয় দিন থেকে খুব চুপচাপ ছিলেন। তার অন্যান্য সহকর্মীদের সঙ্গেও কথা বলছিলেন না। তার ব্যাচমেটদের সঙ্গে কথা বলে এসব জেনেছি।

ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে এসে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ঘটনাস্থলে আমাদের লোক ছিল, ঘটনা যিনি ঘটিয়েছেন তিনিও আমাদের লোক। আসলে ঘটনাটা কী কারণে ঘটেছে সেটা আমরা জানার চেষ্টা করছি।

রোববার (৯ জুন) সকাল ১১টার দিকে গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) রিফাত রহমান শামীম ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাতেই ঘাতক কনস্টেবল কাউসারকে নিরস্ত্র করে হেফাজতে নেওয়া হয়। তাকে থানা হেফাজতে নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়, কিন্তু নিরুত্তাপ কনস্টেবল কাউসার।

ডিসি রিফাত বলেন, তিনি দীর্ঘদিন পুলিশে কর্মরত। পাগলের বেশ ধরেছেন তিনি। ঘটনা স্পর্শকাতর। ঘটনা গুরুতর। এই অপরাধের শাস্তি সম্পর্কে জানেন কনস্টেবল কাউসার। সংগত কারণে তিনি পাগলের বেশ ধরতে পারেন। মুখে কুলুপ এঁটেছেন, অধিকাংশ প্রশ্নের উত্তর তিনি দিচ্ছেন না।

একাধিক গুলি ছুড়ে কনস্টেবল মনিরুলকে হত্যা করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে কী মনে হয়? ঘাতক কাউসার মানসিকভাবে বিপর্যস্ত বা ভারসাম্যহীন? এমন প্রশ্নের উত্তরে ডিসি রিফাত বলেন, পাগল প্রমাণ করতে পারলে তিনি মামলায় সুবিধা পেতে পারেন। সেটা জেনে-বুঝেই হয়ত পাগলের বেশ ধরেছেন। আমরা আরও জিজ্ঞাসাবাদ করবো। তারপর বলা সম্ভব, ঘটনার আসল মোটিভ।

মামলা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মামলার প্রস্তুতি চলছে। মামলা করবেন নিহত কনস্টেবল মনিরুল ইসলামের বড় ভাই। তিনি ঘটনা শুনে রাতেই গুলশান আসেন। তিনিও পুলিশে চাকরি করেন। তিনি মামলার বাদী হবেন। মামলা নথিভুক্ত হওয়ার পর আটক কনস্টেবল কাউসারকে আদালতে পাঠানো হবেে।