ঢাকা ০৮:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

বৃষ্টিতে ছাতা বিক্রির ধুম, ‘এক দাম’ নীতিতে ব্যবসায়ীরা

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সারা দেশে সকাল থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। যার কারণে বেড়েছে ছাতার চাহিদা। পাইকারি-খুচরা সব দোকানেই ছাতা কিনতে ভিড় করছেন ক্রেতারা।

এদিকে চাহিদা বাড়ার সুযোগে বেশি দামে ছাতা বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। ক্রেতাদের অভিযোগ, ‘নিলে নেন, না নিলে নাই’ এমন একদাম নীতিতে দাম চাইছেন ছাতা বিক্রেতারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, চাহিদা বেশি থাকায় দোকানের এক পাশে ছাতার জন্য আলাদা জায়গা করা হয়েছে। একজন বিক্রয়কর্মী সার্বক্ষণিক সেখানে দাঁড়িয়ে ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী ছাতা বের করে দিচ্ছেন। কেউ কেউ বৃষ্টিতে ভিজেই ছাতা কিনতে দোকানে আসছেন। আবার অনেকেই পুরোনো ছাতাটি মাথায় দিয়ে নতুন ছাতা কিনতে আসছেন।

বাজারে এটলাস, রহমান, শংকর, শরিফ, এজতেমা, বিএমডব্লিউ, মুনসহ বিভিন্ন কোম্পানির ছাতা বিক্রি হচ্ছে।

dhaka post

বিক্রেতারা জানান, চাহিদার শীর্ষে রয়েছে চীনের বা দেশে তৈরি ভাঁজ করা ছাতা। সেগুলো দুই ভাঁজ বা তিন ভাঁজ করেও রাখা যায়। একসময় বড় ছাতার চাহিদা থাকলেও এখন আর তেমনটি নেই। ছোট ছাতার চাহিদাই বাজারে বেশি।

দামের বিষয়ে তারা জানান, বর্তমান বাজারে সবকিছুর দামই বেশি। কোম্পানিই আগের তুলনায় ছাতার দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। মান ও কোম্পানি ভেদে বাজারে ৪০০ থেকে শুরু করে ১ হাজার টাকা মূল্যের ছাতা বিক্রি হচ্ছে। আর কোম্পানি ছাড়া স্থানীয়ভাবে তৈরি করা ছাতা ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে চাহিদা বেশি থাকায় বাড়তি দাম নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ক্রেতারা। ছাতা কিনতে আসা আছিবুর নামে এক ব্যক্তি বলেন, একটি ভারী ছাতার দাম চাইছে ৬০০-৭০০ টাকা। এত টাকা দিয়ে ছাতা কেনা আমাদের মতো স্বল্প আয়ের মানুষের পক্ষে সম্ভব না। আর ৩০০-৪০০ টাকায় যেসব ছাতা পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলো একেবারেই হালকা। আজকের বৃষ্টিতেই সেগুলো টিকবে না।

তিনি বলেন, টানা বৃষ্টি দেখে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। অনেকেই বলছেন ‘নিলে নেন, না নিলে চলে যান। কোনো দামাদামি হবে না’। এরপর বাধ্য হয়েই ৬০০ টাকা দিয়ে শংকর ছাতা কিনেছি।

dhaka post

বেলাল হোসাইন নামে আরেক ক্রেতা বলেন, বৃষ্টি হলেও তো জনজীবন থেমে নেই। কাজ করতেই হবে। আগের ছাতাটি নষ্ট হয়ে গেছে। তাই নতুন ছাতা কিনতে এসেছিলাম। কিন্তু যে দাম দেখলাম, তাতে আর কেনার ইচ্ছা নেই। মৌসুম শেষ হলে কিনব।  ব্যবসায়ীরা মানুষকে জিম্মি করে ফেলছেন। যে ছাতাগুলো একটু টেকসই, সেগুলোর দামই বেশি।

তবে আমদানি নির্ভর ছাতার বাজার দাম সাধারণ ব্যবসায়ীদের হাতে নেই বলে জানিয়েছেন নিউমার্কেটের হোসেন স্টোরের বিক্রয়কর্মী আরিফ হোসাইন। তিনি বলেন, বৃষ্টির কারণে সকাল থেকে ছাতার চাহিদা প্রচুর। ক্রেতারা আসছেন এবং ছাতা পছন্দ করে দামদর করছেন। তারা খুচরা কিনলেও আমরা পাইকারি দামেই বিক্রি করছি। তাই একদাম বলে দিচ্ছি।

তিনি বলেন, স্বল্প লাভ থাকায় দামাদামির সুযোগ নেই। কোম্পানি থেকেই আমাদের বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে। বাইরে থেকে আনা ছাতাগুলোর আমদানি খরচ বেড়েছে। এখানে আমাদের মতো সাধারণ দোকানিদের কিছুই করার নেই।

সুকন্যা কসমেটিকস স্টোরের দোকানি সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা বেশি দাম রাখছি না। স্বল্প দামেই ছাতা ছেড়ে দিচ্ছি। আসলে কোম্পানি থেকেই বাড়তি দামে ছাতা আনতে হয়। ক্রেতাদের কাছ থেকে যদি কিছুটা লাভ না করি, তবে একেবারেই পোষায় না। কিন্তু দাম হাতের নাগালে রয়েছে। বাড়তি দাম রাখার অভিযোগ সত্য নয়।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

জমির দলিলের প্রলোভানা দিয়ে গ্রাম পুলিশের নির্দেশে সোনিয়া আক্তার নামে এক নারীকে নির্যাতন করে

বৃষ্টিতে ছাতা বিক্রির ধুম, ‘এক দাম’ নীতিতে ব্যবসায়ীরা

আপডেট সময় ০৬:০১:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ অক্টোবর ২০২২

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সারা দেশে সকাল থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। যার কারণে বেড়েছে ছাতার চাহিদা। পাইকারি-খুচরা সব দোকানেই ছাতা কিনতে ভিড় করছেন ক্রেতারা।

এদিকে চাহিদা বাড়ার সুযোগে বেশি দামে ছাতা বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। ক্রেতাদের অভিযোগ, ‘নিলে নেন, না নিলে নাই’ এমন একদাম নীতিতে দাম চাইছেন ছাতা বিক্রেতারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, চাহিদা বেশি থাকায় দোকানের এক পাশে ছাতার জন্য আলাদা জায়গা করা হয়েছে। একজন বিক্রয়কর্মী সার্বক্ষণিক সেখানে দাঁড়িয়ে ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী ছাতা বের করে দিচ্ছেন। কেউ কেউ বৃষ্টিতে ভিজেই ছাতা কিনতে দোকানে আসছেন। আবার অনেকেই পুরোনো ছাতাটি মাথায় দিয়ে নতুন ছাতা কিনতে আসছেন।

বাজারে এটলাস, রহমান, শংকর, শরিফ, এজতেমা, বিএমডব্লিউ, মুনসহ বিভিন্ন কোম্পানির ছাতা বিক্রি হচ্ছে।

dhaka post

বিক্রেতারা জানান, চাহিদার শীর্ষে রয়েছে চীনের বা দেশে তৈরি ভাঁজ করা ছাতা। সেগুলো দুই ভাঁজ বা তিন ভাঁজ করেও রাখা যায়। একসময় বড় ছাতার চাহিদা থাকলেও এখন আর তেমনটি নেই। ছোট ছাতার চাহিদাই বাজারে বেশি।

দামের বিষয়ে তারা জানান, বর্তমান বাজারে সবকিছুর দামই বেশি। কোম্পানিই আগের তুলনায় ছাতার দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। মান ও কোম্পানি ভেদে বাজারে ৪০০ থেকে শুরু করে ১ হাজার টাকা মূল্যের ছাতা বিক্রি হচ্ছে। আর কোম্পানি ছাড়া স্থানীয়ভাবে তৈরি করা ছাতা ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে চাহিদা বেশি থাকায় বাড়তি দাম নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ক্রেতারা। ছাতা কিনতে আসা আছিবুর নামে এক ব্যক্তি বলেন, একটি ভারী ছাতার দাম চাইছে ৬০০-৭০০ টাকা। এত টাকা দিয়ে ছাতা কেনা আমাদের মতো স্বল্প আয়ের মানুষের পক্ষে সম্ভব না। আর ৩০০-৪০০ টাকায় যেসব ছাতা পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলো একেবারেই হালকা। আজকের বৃষ্টিতেই সেগুলো টিকবে না।

তিনি বলেন, টানা বৃষ্টি দেখে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। অনেকেই বলছেন ‘নিলে নেন, না নিলে চলে যান। কোনো দামাদামি হবে না’। এরপর বাধ্য হয়েই ৬০০ টাকা দিয়ে শংকর ছাতা কিনেছি।

dhaka post

বেলাল হোসাইন নামে আরেক ক্রেতা বলেন, বৃষ্টি হলেও তো জনজীবন থেমে নেই। কাজ করতেই হবে। আগের ছাতাটি নষ্ট হয়ে গেছে। তাই নতুন ছাতা কিনতে এসেছিলাম। কিন্তু যে দাম দেখলাম, তাতে আর কেনার ইচ্ছা নেই। মৌসুম শেষ হলে কিনব।  ব্যবসায়ীরা মানুষকে জিম্মি করে ফেলছেন। যে ছাতাগুলো একটু টেকসই, সেগুলোর দামই বেশি।

তবে আমদানি নির্ভর ছাতার বাজার দাম সাধারণ ব্যবসায়ীদের হাতে নেই বলে জানিয়েছেন নিউমার্কেটের হোসেন স্টোরের বিক্রয়কর্মী আরিফ হোসাইন। তিনি বলেন, বৃষ্টির কারণে সকাল থেকে ছাতার চাহিদা প্রচুর। ক্রেতারা আসছেন এবং ছাতা পছন্দ করে দামদর করছেন। তারা খুচরা কিনলেও আমরা পাইকারি দামেই বিক্রি করছি। তাই একদাম বলে দিচ্ছি।

তিনি বলেন, স্বল্প লাভ থাকায় দামাদামির সুযোগ নেই। কোম্পানি থেকেই আমাদের বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে। বাইরে থেকে আনা ছাতাগুলোর আমদানি খরচ বেড়েছে। এখানে আমাদের মতো সাধারণ দোকানিদের কিছুই করার নেই।

সুকন্যা কসমেটিকস স্টোরের দোকানি সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা বেশি দাম রাখছি না। স্বল্প দামেই ছাতা ছেড়ে দিচ্ছি। আসলে কোম্পানি থেকেই বাড়তি দামে ছাতা আনতে হয়। ক্রেতাদের কাছ থেকে যদি কিছুটা লাভ না করি, তবে একেবারেই পোষায় না। কিন্তু দাম হাতের নাগালে রয়েছে। বাড়তি দাম রাখার অভিযোগ সত্য নয়।