ঢাকা ১০:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ আখ্যায়িত করার দাবি বাকেরগঞ্জের বিরঙ্গল দারুসুন্নাত নেছারিয়া দাখিল মাদ্রাসাটির বিভিন্ন অনিয়ম রয়েছে গোপালগঞ্জের সোহাগ একসঙ্গে দুই সরকারি চাকরি করেন বেরোবিতে স্বৈরাচারী দোসর ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ষড়যন্ত্রকারী এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদে মানববন্ধন বিটিভির সংবাদ বেসরকারি টেলিভিশনে সম্প্রচারের প্রয়োজন নেই : নাহিদ শুক্রবারও চলবে মেট্রোরেল চাঁপাইনবাবগঞ্জ র‍্যাব ক্যাম্পের অভিযানে দু’কোটি টাকার হেরোইন উদ্ধার, আটক-১ অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হলেই ভাসতে থাকে প্রথম শ্রেণীর জাজিরা পৌরসভা। চট্টগ্রামে সাবেক সাংসদ বাদলের কবরে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ

মশা নিধনে ক্র্যাশ অভিযান : স্থানীয়রা বলছে লোক দেখানো

এডিস মশা নিধনে ক্র্যাশ অভিযান পরিচালনা শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। বিভিন্ন এলাকায় অভিযানে মশা নিধনের জন্য ফগিং থেকে শুরু করে তরল ওষুধ ছিটানোর কাজ করছে সংস্থাটি। অভিযানে যেসব বাড়ির মালিকদের অবহেলার কারণে এডিসের লার্ভা পাওয়া গেছে তাদের অর্থদণ্ড করছে ডিএনসিসি।

তবে অভিযান চলা এলাকার স্থানীয়রা বলছেন, সিটি করপোরেশনের এই অভিযান মূলত আই ওয়াশ। এডিস মশা নিধনে সিটি করপোরেশনের তেমন কার্যক্রম সাধারণত সবসময় দেখা যায় না। মাঝে মধ্যে ফগিং করা হলেও বেশিরভাগে সময় তাও দেওয়া হয় না। এছাড়া তরল ওষুধ ছিটানো হয়না বলেও দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

স্থানীয় বাসিন্দারা আরও বলেন, অধিকাংশ বাড়ির মালিক বা বাসিন্দারা সঠিকভাবে কোনো তথ্যই জানেন না এডিস মশা প্রতিরোধে কি কি করতে হবে। বাসা বাড়ির ফুলের টবের পানি পরিষ্কার মালিকরা নিজ উদ্যোগে করলেও ম্যানহোল বা বাড়ির পাশের জমে থাকা বিভিন্ন ময়লা আবর্জনায় যে মশা সৃষ্টি হচ্ছে তা প্রতিরোধে নেই কোনো কার্যক্রম। ফলে মশা সৃষ্টি হচ্ছে এবং মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে।

বুধবার (১৯ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর মগবাজার ও দিলু রোড এলাকায় এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে বিশেষ মশক নিধন অভিযান শুরু করে ডিএনসিসি। এ সময় অভিযানে উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা ও প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগে. জেনা. মো. জোবায়দুর রহমান।

অভিযানে দিলুরোডের দুইটি বাড়ির ম্যানহোলে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় মালিকদের মোট ২ লাখ ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।

অর্থদণ্ড পাওয়া দুই মালিকের মধ্যে একজন হচ্ছেন গোলাম কবীর। তারা বাসার গেইটের সামনে ম্যানহোলে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়। তিনি বলেন, ওয়ার ড্রেনেজ সিস্টেমের কারণে তারা বাসার ম্যানহোল থেকে পানি না নেমে জমে থাকে। এতে করে জমা পানিতে মশার সৃষ্টি হয়। তার পরেও আমি একাধিকবার ব্লিচিং পাউডার ও ক্যারোসিন ছিটিয়েছি, কিন্তু মশা মরেনি। পানি ম্যানহোল থেকে না নামলে এতে আমার কি দোষ।

এদিকে এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা মো. মামুন বলেন, ডিএনসিসিকে কখনোই দেখি না এসে মানুষ জনকে সচেতন করতে বা মশা নিধনে ওষুধ ঠিকভাবে ছিটাতে। দিলুরোডের প্রতিটি বাসায় ঠিকভাবে অভিযান চালালে দেখা যাবে সব জায়গায় মশা রয়েছে। একদিন এসে অভিযান পরিচালনা করে গেলেতো এই সমস্যার সমাধান হবে না। বর্তমান অবস্থায় প্রতিদিন মশক নিধনের ওষুধ ছিটাতে হবে এবং বাড়ির মালিকদের সচেতন করতে হবে, তাহলে সুফল পাওয়া যাবে। আর লোক দেখানো এসব অভিযান কোনো কাজে আসবে না।

মো. আওলাদ নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, আজকের এই অভিযানের পরে দেখা যাবে সিটি করপোরেশনের লোকজনের বা কাউন্সিলরের এক মাসও দেখা পাওয়া যাবে না। ঠিকমতো ফগিং করা হচ্ছে কিনা কে দেখবে। একদিন অভিযান চালিয়ে তো সব ঠিক হয়ে যাবে না।

তবে সিটি করপোরেশন বলছে, তারা নিয়মিত মশক নিধনের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়া মানুষ জনকে সচেতন করতে যা যা করার দরকার তারা তাই করছেন।

এ সময় অভিযানে উপস্থিত থাকা ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা বলেন, যেখানেই এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যাচ্ছে সেখানেই আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। এছাড়া এডিস মশার বিশেষ সতর্ক করার জন্য আমরা শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও গ্রহণ করছি।

তিনি বলেন, এডিস মশা পরিত্যক্ত পাত্রে তথা চিপসের প্যাকেট, ডাবের খোসা, ছাদ বাগান, ফুলের টবে জমে থাকা পানিতে জন্মায়। নগরের প্রত্যেকে যদি সচেতন হয়, তাহলে এ এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে। পাশাপাশি সিটি করপোরেশন তার নিজস্ব কার্যক্রম চালিয়ে যাবে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ আখ্যায়িত করার দাবি

মশা নিধনে ক্র্যাশ অভিযান : স্থানীয়রা বলছে লোক দেখানো

আপডেট সময় ০১:৪৪:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ অক্টোবর ২০২২

এডিস মশা নিধনে ক্র্যাশ অভিযান পরিচালনা শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। বিভিন্ন এলাকায় অভিযানে মশা নিধনের জন্য ফগিং থেকে শুরু করে তরল ওষুধ ছিটানোর কাজ করছে সংস্থাটি। অভিযানে যেসব বাড়ির মালিকদের অবহেলার কারণে এডিসের লার্ভা পাওয়া গেছে তাদের অর্থদণ্ড করছে ডিএনসিসি।

তবে অভিযান চলা এলাকার স্থানীয়রা বলছেন, সিটি করপোরেশনের এই অভিযান মূলত আই ওয়াশ। এডিস মশা নিধনে সিটি করপোরেশনের তেমন কার্যক্রম সাধারণত সবসময় দেখা যায় না। মাঝে মধ্যে ফগিং করা হলেও বেশিরভাগে সময় তাও দেওয়া হয় না। এছাড়া তরল ওষুধ ছিটানো হয়না বলেও দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

স্থানীয় বাসিন্দারা আরও বলেন, অধিকাংশ বাড়ির মালিক বা বাসিন্দারা সঠিকভাবে কোনো তথ্যই জানেন না এডিস মশা প্রতিরোধে কি কি করতে হবে। বাসা বাড়ির ফুলের টবের পানি পরিষ্কার মালিকরা নিজ উদ্যোগে করলেও ম্যানহোল বা বাড়ির পাশের জমে থাকা বিভিন্ন ময়লা আবর্জনায় যে মশা সৃষ্টি হচ্ছে তা প্রতিরোধে নেই কোনো কার্যক্রম। ফলে মশা সৃষ্টি হচ্ছে এবং মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে।

বুধবার (১৯ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর মগবাজার ও দিলু রোড এলাকায় এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে বিশেষ মশক নিধন অভিযান শুরু করে ডিএনসিসি। এ সময় অভিযানে উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা ও প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগে. জেনা. মো. জোবায়দুর রহমান।

অভিযানে দিলুরোডের দুইটি বাড়ির ম্যানহোলে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় মালিকদের মোট ২ লাখ ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।

অর্থদণ্ড পাওয়া দুই মালিকের মধ্যে একজন হচ্ছেন গোলাম কবীর। তারা বাসার গেইটের সামনে ম্যানহোলে এডিস মশার লার্ভা পাওয়ায় ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়। তিনি বলেন, ওয়ার ড্রেনেজ সিস্টেমের কারণে তারা বাসার ম্যানহোল থেকে পানি না নেমে জমে থাকে। এতে করে জমা পানিতে মশার সৃষ্টি হয়। তার পরেও আমি একাধিকবার ব্লিচিং পাউডার ও ক্যারোসিন ছিটিয়েছি, কিন্তু মশা মরেনি। পানি ম্যানহোল থেকে না নামলে এতে আমার কি দোষ।

এদিকে এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা মো. মামুন বলেন, ডিএনসিসিকে কখনোই দেখি না এসে মানুষ জনকে সচেতন করতে বা মশা নিধনে ওষুধ ঠিকভাবে ছিটাতে। দিলুরোডের প্রতিটি বাসায় ঠিকভাবে অভিযান চালালে দেখা যাবে সব জায়গায় মশা রয়েছে। একদিন এসে অভিযান পরিচালনা করে গেলেতো এই সমস্যার সমাধান হবে না। বর্তমান অবস্থায় প্রতিদিন মশক নিধনের ওষুধ ছিটাতে হবে এবং বাড়ির মালিকদের সচেতন করতে হবে, তাহলে সুফল পাওয়া যাবে। আর লোক দেখানো এসব অভিযান কোনো কাজে আসবে না।

মো. আওলাদ নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, আজকের এই অভিযানের পরে দেখা যাবে সিটি করপোরেশনের লোকজনের বা কাউন্সিলরের এক মাসও দেখা পাওয়া যাবে না। ঠিকমতো ফগিং করা হচ্ছে কিনা কে দেখবে। একদিন অভিযান চালিয়ে তো সব ঠিক হয়ে যাবে না।

তবে সিটি করপোরেশন বলছে, তারা নিয়মিত মশক নিধনের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়া মানুষ জনকে সচেতন করতে যা যা করার দরকার তারা তাই করছেন।

এ সময় অভিযানে উপস্থিত থাকা ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা বলেন, যেখানেই এডিস মশার লার্ভা পাওয়া যাচ্ছে সেখানেই আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। এছাড়া এডিস মশার বিশেষ সতর্ক করার জন্য আমরা শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও গ্রহণ করছি।

তিনি বলেন, এডিস মশা পরিত্যক্ত পাত্রে তথা চিপসের প্যাকেট, ডাবের খোসা, ছাদ বাগান, ফুলের টবে জমে থাকা পানিতে জন্মায়। নগরের প্রত্যেকে যদি সচেতন হয়, তাহলে এ এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে। পাশাপাশি সিটি করপোরেশন তার নিজস্ব কার্যক্রম চালিয়ে যাবে।