ঢাকা ০৯:২৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৮ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
সকলে একসাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাব: ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি শরীয়তপুরে ছেলের গাছের গোড়ার আঘাতে বাবা নিহত সেই ছেলে গ্রেফতার। ঢাবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি কে এই সাদিক শিগগিরই ঢাবি শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা: শিবির সভাপতি চট্টগ্রাম নগর যুবদলের কমিটি বিলুপ্ত, ২ নেতা বহিষ্কার সরকার পতনের পর এই প্রথম মুখ খুললেন সাদ্দাম-ইনান কিস্তির টাকা দিতে না পারায় গরু ছিনিয়ে নিয়ে গেলেন এনজিও মাঠকর্মীরা রংপুরের মিঠাপুকুরে সড়ক দুর্ঘটনায় দুজন নিহত ভোলায় শহীদ পরিবারদের কোটি টাকার সহায়তা দিল- জামায়াতে ইসলাম জাতিসংঘের ৭৯তম অধিবেশন যোগ দিতে নিউইয়র্কে দৈনিক তরুণ কণ্ঠ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম শান্ত

২০১৯ সালে পারমাণবিক হামলার প্রস্তুতি নিয়েছিল ভারত-পাকিস্তান

সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও দাবি করেছেন ২০১৯ সালে বালাকোট বিমান হামলার পরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পারমাণবিক যুদ্ধের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। মার্কিন হস্তক্ষেপে সেই উত্তেজনা আর বাড়তে পারেনি। প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া এবং এএফপির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  

২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে একটি আত্মঘাতী বোমা হামলা হওয়ার পর পাকিস্তানের ভূখণ্ডে বিমান হামলা করে ভারত। ওই সময় পাকিস্তান একটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে পাইলটকে আটক করেছিল। ডোনাল্ড ট্রাম্পের শীর্ষ কূটনীতিক ও তার আগে সিআইএ প্রধান হিসাবে তার সময়ের স্মৃতিকথা ‘নেভার গিভ অ্যান ইঞ্চি’তে  পম্পেও লিখেছেন, আমার মনে হয় কেউ এটা পুরোপুরি জানে না যে, ২০১৯ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পারমাণবিক উত্তেজনা কতটা ছড়িয়েছিল।

সাবেক এই মার্কিন কূটনীতিকের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি সুষমা স্বরাজের সাথে কথা বলেন এবং সুষমা তাকে জানান যে, বিমান হামলার পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তান পারমাণবিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং ভারতও তার জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। পম্পেও বলছেন, ওই বছরের ২৭-২৮ ফেব্রুয়ারি এ ঘটনার সময় তিনি  মার্কিন-উত্তর কোরিয়া শীর্ষ সম্মেলনের জন্য হ্যানয়ে ছিলেন এবং তার দল এই সংকট এড়াতে নয়াদিল্লি এবং ইসলামাবাদ উভয়ের সাথে রাতভর কাজ করেছিল।

পম্পেও লিখেছেন, ভিয়েতনামের হ্যানয়ে ওই রাতের কথা আমি কখনোই ভুলব না। অবস্থা এমন ছিল যে, পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে উত্তর কোরিয়ার সাথে যে আলোচনা চলছিল, সেই জটিলতা যেন যথেষ্ট ছিল না, কাশ্মিরের সীমান্ত জটিলতা নিয়ে কয়েক দশক ধরে চলে আসা বিরোধের জেরে ভারত ও পাকিস্তান একে অপরকে হুমকি দিতে শুরু করল।

তিনি আরও লিখেছেন, সুষমা স্বরাজের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন যে তার বিশ্বাস পাকিস্তানিরা পারমাণবিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ভারতও পাল্টা প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমি তাকে কিছু না করার পরামর্শ দিয়ে বলি কী হচ্ছে সেটা বোঝার জন্য আমাদের কিছু সময় দিন। আমি তৎকালীন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনের সাথে বিষয়টা নিয়ে কাজ শুরু করি। পাকিস্তানের ‘আসল নেতা’, তৎকালীন সেনাপ্রধানের  জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়ার সঙ্গেও কথা বলেন বলে লিখেছেন পম্পেও।

জাভেদ বাজওয়ার সঙ্গে কথা বলে পম্পেও বুঝতে পারেন যে তাদের বিশ্বাস উল্টো ভারতীয়রা পারমাণবিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এরপর নয়াদিল্লি এবং ইসলামাবাদকে এটা বোঝাতে আমাদের কয়েক ঘণ্টা সময় লেগেছে যে, কোনো পক্ষই আসলে এমন কোনো হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে  না। পম্পেওর এসব দাবির বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

পম্পেও লিখেছেন, ভয়ানক কোনো পরিণতি এড়াতে আমরা সেই রাতে যা করেছি তা অন্য কেউ করতে পারতো না। এএফপির প্রতিবেদন অনুসারে, পম্পেও কিম জং উনের সাথে তার কূটনীতি নিয়েও বিস্তারিত লিখেছেন বইয়ে। বইয়ে পম্পেও এ কথাও লিখেছেন যে, কিম জং উন তাকে বলেছিলেন যে, আমি ভেবেছিলাম যে আপনি হয়তো কখনোই আসবেন না। আমি জানি আপনারা আমাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করছেন। একটু মজা করে আমিও বলি, মি. চেয়ারম্যান, আমি এখনও আপনাকে হত্যা করার চেষ্টা করছি।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সকলে একসাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাব: ৩৩ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি

২০১৯ সালে পারমাণবিক হামলার প্রস্তুতি নিয়েছিল ভারত-পাকিস্তান

আপডেট সময় ১২:৪৭:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৩

সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও দাবি করেছেন ২০১৯ সালে বালাকোট বিমান হামলার পরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পারমাণবিক যুদ্ধের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। মার্কিন হস্তক্ষেপে সেই উত্তেজনা আর বাড়তে পারেনি। প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া এবং এএফপির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।  

২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে একটি আত্মঘাতী বোমা হামলা হওয়ার পর পাকিস্তানের ভূখণ্ডে বিমান হামলা করে ভারত। ওই সময় পাকিস্তান একটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করে পাইলটকে আটক করেছিল। ডোনাল্ড ট্রাম্পের শীর্ষ কূটনীতিক ও তার আগে সিআইএ প্রধান হিসাবে তার সময়ের স্মৃতিকথা ‘নেভার গিভ অ্যান ইঞ্চি’তে  পম্পেও লিখেছেন, আমার মনে হয় কেউ এটা পুরোপুরি জানে না যে, ২০১৯ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পারমাণবিক উত্তেজনা কতটা ছড়িয়েছিল।

সাবেক এই মার্কিন কূটনীতিকের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি সুষমা স্বরাজের সাথে কথা বলেন এবং সুষমা তাকে জানান যে, বিমান হামলার পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তান পারমাণবিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে এবং ভারতও তার জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। পম্পেও বলছেন, ওই বছরের ২৭-২৮ ফেব্রুয়ারি এ ঘটনার সময় তিনি  মার্কিন-উত্তর কোরিয়া শীর্ষ সম্মেলনের জন্য হ্যানয়ে ছিলেন এবং তার দল এই সংকট এড়াতে নয়াদিল্লি এবং ইসলামাবাদ উভয়ের সাথে রাতভর কাজ করেছিল।

পম্পেও লিখেছেন, ভিয়েতনামের হ্যানয়ে ওই রাতের কথা আমি কখনোই ভুলব না। অবস্থা এমন ছিল যে, পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে উত্তর কোরিয়ার সাথে যে আলোচনা চলছিল, সেই জটিলতা যেন যথেষ্ট ছিল না, কাশ্মিরের সীমান্ত জটিলতা নিয়ে কয়েক দশক ধরে চলে আসা বিরোধের জেরে ভারত ও পাকিস্তান একে অপরকে হুমকি দিতে শুরু করল।

তিনি আরও লিখেছেন, সুষমা স্বরাজের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন যে তার বিশ্বাস পাকিস্তানিরা পারমাণবিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ভারতও পাল্টা প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমি তাকে কিছু না করার পরামর্শ দিয়ে বলি কী হচ্ছে সেটা বোঝার জন্য আমাদের কিছু সময় দিন। আমি তৎকালীন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনের সাথে বিষয়টা নিয়ে কাজ শুরু করি। পাকিস্তানের ‘আসল নেতা’, তৎকালীন সেনাপ্রধানের  জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়ার সঙ্গেও কথা বলেন বলে লিখেছেন পম্পেও।

জাভেদ বাজওয়ার সঙ্গে কথা বলে পম্পেও বুঝতে পারেন যে তাদের বিশ্বাস উল্টো ভারতীয়রা পারমাণবিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এরপর নয়াদিল্লি এবং ইসলামাবাদকে এটা বোঝাতে আমাদের কয়েক ঘণ্টা সময় লেগেছে যে, কোনো পক্ষই আসলে এমন কোনো হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে  না। পম্পেওর এসব দাবির বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

পম্পেও লিখেছেন, ভয়ানক কোনো পরিণতি এড়াতে আমরা সেই রাতে যা করেছি তা অন্য কেউ করতে পারতো না। এএফপির প্রতিবেদন অনুসারে, পম্পেও কিম জং উনের সাথে তার কূটনীতি নিয়েও বিস্তারিত লিখেছেন বইয়ে। বইয়ে পম্পেও এ কথাও লিখেছেন যে, কিম জং উন তাকে বলেছিলেন যে, আমি ভেবেছিলাম যে আপনি হয়তো কখনোই আসবেন না। আমি জানি আপনারা আমাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করছেন। একটু মজা করে আমিও বলি, মি. চেয়ারম্যান, আমি এখনও আপনাকে হত্যা করার চেষ্টা করছি।