ঢাকা ১১:৫৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

রাশিয়া-চীনের সঙ্গে যৌথ মহড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকা

রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে যৌথ মহড়ায় যোগ দিচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকা। যৌথ এই সামরিক মহড়া হবে আগামী ১৭ থেকে ২৭ ফেব্রুয়ারি। এই নৌ-মহড়ার মধ্যেই পড়বে রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের প্রথম বার্ষিকী। গত বছর ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন আক্রমণ করেছিল রুশ বাহিনী।

দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে মস্কোর বাণিজ্যের পরিমাণ খুব বেশি নয়। কিন্তু যেটা গুরুত্বপূর্ণ তা হলো, দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম থেকেই ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়া ও চীনের অবস্থানকে সমর্থন করছে। গত তিন দশক ধরে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্ষমতাসীন আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস (এএনসি) রাশিয়াকে সমর্থন করে আসছে। এর আগে রাশিয়া বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বরাবরই এএনসিকে সমর্থন ও সাহায্য করেছে।

তবে দক্ষিণ আফ্রিকা ঘোষিত অবস্থান হলো, তারা নিরপেক্ষ। কিন্তু পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে ভূ-রাজনৈতিক কারণে দক্ষিণ আফ্রিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দেশ। আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করার জন্য তারা দক্ষিণ আফ্রিকাকে পাশে পেতে চায়। আর এ কারণে রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে যৌথ মহড়ায় অংশ নেওয়ায় দক্ষিণ আফ্রিকার সমালোচনা শুরু হয়েছে। আফ্রিকার এই দেশটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক মন্ত্রী নালেদি পান্ডোর বলেছেন, বন্ধুদের সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়া দক্ষিণ আফ্রিকা করেই থাকে। এটা নতুন কিছু নয়।

জোহানেসবার্গের সংগঠন ডেমোক্রেসি ওয়ার্কস ফাউন্ডেশনের এক্সিকিউটিভ চেয়ারপার্সন উইলিয়াম গুমেড জানিয়েছেন, দক্ষিণ আফ্রিকা যে অবস্থান নিয়েছে তা মানা যায় না। কারণ সংবিধানে বলা আছে, সরকারকে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে মানবাধিকারের বিষয়টি সমর্থন করতে হবে। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়া-আফ্রিকার দেশগুলোর শীর্ষ-সম্মেলনের আগে ছয় মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বার সাউথ আফ্রিকা সফর করছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। এই শীর্ষ বৈঠক আগামী জুলাইতে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

এদিকে দক্ষিণ আফ্রিকায় নিযুক্ত ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত বলেছেন, তারা যেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির দশ দফা শান্তি প্রস্তাব সমর্থন করে। গত নভেম্বরে জি-২০ বৈঠকে এই শান্তিপ্রস্তাব দিয়েছিলেন জেলেনস্কি। জেলেনস্কি ইউক্রেনের সঙ্গে আফ্রিকার দেশগুলোর সম্পর্ক জোরদার করতে চাইছেন, কিন্তু এখনও কোনও সাফল্য পাননি। আফ্রিকার অধিকাংশ দেশ এই বিরোধে কারও পক্ষ নিতে দ্বিধাবোধ করছে। মানবাধিকার কাউন্সিলে রাশিয়ার সদস্যপদ খারিজ করা নিয়ে ভোটাভুটিতে আফ্রিকার ৫৪টি দেশের মধ্যে মাত্র ১০টি দেশ অংশ নিয়েছিল। নয়টি দেশ বিরোধিতা করে এবং বাকিরা ভোটে অংশ নেয়নি।

২০১৬ সাল থেকে ২০২০ সালের মধ্যে আফ্রিকার দেশগুলো যত অস্ত্র কিনেছে, তার মধ্যে ১৮ শতাংশ এসেছে রাশিয়া থেকে। স্টকহোমের ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ফাউন্ডেশনের বার্ষিক পর্য়ালোচনায় এই তথ্য সামনে এসেছে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সাংবাদিক শাহাদাত হোসেনের উপর হামলা ও হত্যার হুমকি নিয়ে চান্দগাঁও থানায় সাধারণ ডায়েরি

রাশিয়া-চীনের সঙ্গে যৌথ মহড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকা

আপডেট সময় ০১:২২:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৩

রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে যৌথ মহড়ায় যোগ দিচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকা। যৌথ এই সামরিক মহড়া হবে আগামী ১৭ থেকে ২৭ ফেব্রুয়ারি। এই নৌ-মহড়ার মধ্যেই পড়বে রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের প্রথম বার্ষিকী। গত বছর ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন আক্রমণ করেছিল রুশ বাহিনী।

দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে মস্কোর বাণিজ্যের পরিমাণ খুব বেশি নয়। কিন্তু যেটা গুরুত্বপূর্ণ তা হলো, দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম থেকেই ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়া ও চীনের অবস্থানকে সমর্থন করছে। গত তিন দশক ধরে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্ষমতাসীন আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস (এএনসি) রাশিয়াকে সমর্থন করে আসছে। এর আগে রাশিয়া বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বরাবরই এএনসিকে সমর্থন ও সাহায্য করেছে।

তবে দক্ষিণ আফ্রিকা ঘোষিত অবস্থান হলো, তারা নিরপেক্ষ। কিন্তু পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে ভূ-রাজনৈতিক কারণে দক্ষিণ আফ্রিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দেশ। আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করার জন্য তারা দক্ষিণ আফ্রিকাকে পাশে পেতে চায়। আর এ কারণে রাশিয়া ও চীনের সঙ্গে যৌথ মহড়ায় অংশ নেওয়ায় দক্ষিণ আফ্রিকার সমালোচনা শুরু হয়েছে। আফ্রিকার এই দেশটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক মন্ত্রী নালেদি পান্ডোর বলেছেন, বন্ধুদের সঙ্গে যৌথ সামরিক মহড়া দক্ষিণ আফ্রিকা করেই থাকে। এটা নতুন কিছু নয়।

জোহানেসবার্গের সংগঠন ডেমোক্রেসি ওয়ার্কস ফাউন্ডেশনের এক্সিকিউটিভ চেয়ারপার্সন উইলিয়াম গুমেড জানিয়েছেন, দক্ষিণ আফ্রিকা যে অবস্থান নিয়েছে তা মানা যায় না। কারণ সংবিধানে বলা আছে, সরকারকে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে মানবাধিকারের বিষয়টি সমর্থন করতে হবে। এই পরিস্থিতিতে রাশিয়া-আফ্রিকার দেশগুলোর শীর্ষ-সম্মেলনের আগে ছয় মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বার সাউথ আফ্রিকা সফর করছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। এই শীর্ষ বৈঠক আগামী জুলাইতে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

এদিকে দক্ষিণ আফ্রিকায় নিযুক্ত ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত বলেছেন, তারা যেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির দশ দফা শান্তি প্রস্তাব সমর্থন করে। গত নভেম্বরে জি-২০ বৈঠকে এই শান্তিপ্রস্তাব দিয়েছিলেন জেলেনস্কি। জেলেনস্কি ইউক্রেনের সঙ্গে আফ্রিকার দেশগুলোর সম্পর্ক জোরদার করতে চাইছেন, কিন্তু এখনও কোনও সাফল্য পাননি। আফ্রিকার অধিকাংশ দেশ এই বিরোধে কারও পক্ষ নিতে দ্বিধাবোধ করছে। মানবাধিকার কাউন্সিলে রাশিয়ার সদস্যপদ খারিজ করা নিয়ে ভোটাভুটিতে আফ্রিকার ৫৪টি দেশের মধ্যে মাত্র ১০টি দেশ অংশ নিয়েছিল। নয়টি দেশ বিরোধিতা করে এবং বাকিরা ভোটে অংশ নেয়নি।

২০১৬ সাল থেকে ২০২০ সালের মধ্যে আফ্রিকার দেশগুলো যত অস্ত্র কিনেছে, তার মধ্যে ১৮ শতাংশ এসেছে রাশিয়া থেকে। স্টকহোমের ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ফাউন্ডেশনের বার্ষিক পর্য়ালোচনায় এই তথ্য সামনে এসেছে।