ঢাকা ০১:২৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ফরিদগঞ্জে হাসপাতালের আড়ালে চলছে অনৈতিক কাজ শেখ হাসিনা ও রেহানাসহ ১৬৫ জনের বিরুদ্ধে আদাবর থানায় হত্যা মামলা ভারতে মহানবী (সা.) কে নিয়ে কটুক্তির প্রতিবাদে ভোলায় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ আল-আরাফাহ ঘিরে নতুন পাঁয়তারা রাজবাড়ী পৌরসভার সাবেক মেয়র তিতু গ্রেফতার আঙুল ফুলে কলাগাছ গোয়াইনঘাটের বুঙ্গড়ী আজিজুল-মাসুক! দুদক উপপরিচালক আবু বকর সিদ্দিকের অবৈধ সম্পদের পাহাড়  আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকে ঘনিষ্ঠ দু’জনকে অতিরিক্ত এমডি পদে নিয়োগের আয়োজন ১১৭০ টাকার নামজারির খরচ, ভূমি কর্মকর্তা নেন ৮-১৫ হাজার! পটুয়াখালী জেলা পরিষদের সার্ভেয়ার হাসানুজ্জামানের দুর্নীতির স্বর্গ রাজ্যে যেন আলাউদ্দিনের চেরাগ।

রাশিয়া-মার্কিন দূতাবাসের ‘লড়াইয়ের’ মধ্যেই কেন ঢাকায় চীনা গ্যাং?

আফ্রিকা সফরে যাওয়ার সময় কয়েক ঘণ্টার জন্য ঢাকায় যাত্রাবিরতি করেছেন চীনের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিন গ্যাং। সোমবার (৯ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ২টার দিকে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহনকারী উড়োজাহাজটি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। প্রায় ঘণ্টা দুয়েকের যাত্রাবিরতি শেষে তিনি আবার আফ্রিকা যাত্রা শুরু করেন। 

চীনা মন্ত্রীর ঢাকায় নামা কোন আনুষ্ঠানিক সফর ছিল না। একইসঙ্গে আফ্রিকা যেতে হলে বাংলাদেশ হয়ে না গেলেও চলে। মূলকথা এটি আসলে আফ্রিকা যাওয়ার রুট নয়। বাংলাদেশে রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের ঠাণ্ডা লড়াইয়ের সময় চীনা গ্যাংয়ের এমন ঢাকা সফরকে ঘিরে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। রুট নেই, তবুও আফ্রিকা যাত্রায় কেন ঢাকায় নামলেন চীনা গ্যাং?

এ নিয়ে বিশেষজ্ঞরা নানা মত দিচ্ছেন। কেউ বলছেন, বাংলাদেশের প্রয়োজন খেয়াল রাখতে ঢাকায় যাত্রাবিরতি করেছেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আবার কেউ বলছেন, চীনের কাছে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠার আভাস দিচ্ছে এ সফর।

এদিকে সোমবার রাতের যাত্রাবিরতির মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ এবং ঘণ্টাখানেকের একটি বৈঠকও করেছেন। চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে মোমেন বলেন, আমরা করোনার টিকার জন্য ওনাদের ধন্যবাদ দিয়েছি। আমরা ৮০০ মিলিয়নের জিনিস বিক্রি করি। আর ১৩ বিলিয়নের জিনিস কিনি। এটা একপেশে হয়ে যাচ্ছে। বাণিজ্য বাড়ানোর জন্য ৯৮ পারসেন্ট প্রোডাক্টে ডিউটি ফ্রি, কোটা ফ্রি এক্সেস দেবেন বলে ঘোষণা দিয়েছে চীন। কিন্তু গেজেটটা হয়নি বলে আমাদের ব্যবসায়ীরা সেই সুবিধা পাচ্ছেন না। আমি চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছি, এ বিষয়ে ঘোষণা দিতে, এতে আমাদের সুবিধা হয়।

২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের বাংলাদেশ সফরের সময় সই করা অর্থ সহায়তা বিষয়ক কয়েকটি চুক্তি বাস্তবায়নের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মোমেন। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এমন এক সময়ে বাংলাদেশে যাত্রাবিরতি করলেন, যখন বাংলাদেশের নানা ইস্যু নিয়ে রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের প্রকাশে বিরোধে জড়ানো নিয়ে নানা খবর আসছে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে।

এ বিষয়ে চীনা দূতাবাসের মুখপাত্র বলেন, চীন এবং আফ্রিকার সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রী চিন গ্যাং তার দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম রাষ্ট্রীয় সফরেই আফ্রিকা যাচ্ছেন। এটা টানা ৩৩তম বছর যখন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বার্ষিক বিদেশ সফরের প্রথম গন্তব্য আফ্রিকা। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা বলছেন, এরকম গুরুত্বপূর্ণ সফরের মধ্যে ঢাকায় যাত্রাবিরতি আসলে চীনের কাছে বাংলাদেশেরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠাকেই বোঝায়।

কেন বাংলাদেশ হয়েই আফ্রিকা যাচ্ছেন গ্যাং?

এ বিষয়ে চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমেদ বিবিসিকে বলেন, এই যাত্রাবিরতি আলাদা করে বার্তা দেয় বিষয়টি সেরকম না হলেও একটা প্রশ্ন হতে পারে যে, অন্য পথ দিয়ে না গিয়ে তিনি কেন বাংলাদেশ হয়েই আফ্রিকা যাচ্ছেন।

তার মতে, বাংলাদেশের সাথে বিভিন্ন বিষয় আছে যেগুলো তারা গুরুত্ব সহকারে দেখে এটা তারই একটা প্রকাশ। বাংলাদেশকে চীন গুরুত্ব দেয় বলেই একদিনের সুযোগের সদ্ব্যবহার করেছে তারা।

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সহযোগি চীন উল্লেখ করে সাবেক রাষ্ট্রদূত বলেন, তার সাথে সব সময়ই বাংলাদেশের নানা কাজ থাকে এবং সেগুলোকে এগিয়ে নিতে সব ধরণের সুযোগ ব্যবহার করা উচিত এবং চীন সেটাই করেছে।

এই যাত্রাবিরতি নিয়ে অন্য কোন পরিস্থিতি বা অন্য কোন দেশের সাথে সম্পর্কের বিষয়ে জড়িয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই বলেও মনে করেন তিনি।

বাংলাদেশের ‘নিড’ খেয়াল রাখছে চীন

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক ড. লাইলুফার ইয়াসমিন বিবিসিকে বলেন, কিছুদিন আগে সংবাদ মাধ্যমে যেমন বলা হয়েছিল যে, বাংলাদেশ রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের ঠান্ডা লড়াইয়ের জায়গা, সেরকমই চীনের কাছে বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্বটা অনেক বেশি। যেটা বাংলাদেশে যথাযথভাবে ব্যবহার করতে পারছে না।

সংগৃহীত

তিনি বলেন, চীনের বাংলাদেশের প্রতি যে গুরুত্ব আছে তা বারবার বিভিন্নভাবেই বোঝাচ্ছে দেশটি। বাংলাদেশের যেসব জায়গায় দরকার সেগুলোতে গুরুত্ব দেয়ার চেষ্টা করছে চীন।

তার ভাষায়, চীন বাংলাদেশের ‘নিড’ বা প্রয়োজনগুলোর দিকে খেয়াল রাখছে।

তিনি এও মনে করেন, এই যাত্রাবিরতির একটা কৌশলগত গুরুত্ব আছে এবং এই বার্তাটা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয় বরং বাকি বিশ্বকেও ইঙ্গিত দেয়া হচ্ছে “বাংলাদেশ ইজ ইম্পরট্যান্ট টু চায়না।”

সাউথ এশিয়ার ইকুয়েশনে বাংলাদেশের গুরুত্ব

এ বিষয়ে ড. ইয়াসমিন বিবিসিকে বলেন, কুটনীতি এখন অনেক দ্রুতগতি সম্পন্ন হয়েছে। আর এ কারণেই গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলোতে এ ধরণের সংক্ষিপ্ত সফর করে থাকেন রাষ্ট্রনেতারা। কোন একটি গন্তব্যে যাত্রা করলে যদি পথিমধ্যে এমন কোন দেশ থাকে যাকে একটি বার্তা দেয়ার দরকার হয় তখন এ ধরণের যাত্রাবিরতি হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক বলেন, “উনি (চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী) কিন্তু দায়িত্ব নেবার পরেই বাংলাদেশকে এই গুরুত্বটা দিয়েছেন। বোঝা যায়, চীনের সাউথ এশিয়ার ইকুয়েশনে বাংলাদেশের গুরুত্ব কতখানি, এবং এই যাত্রাবিরতি সেটার একটা নজির হিসেবেই দেখা যেতে পারে।”

আনুষ্ঠানিক সফরের বাইরে একটা “মোবাইল ডিপলোমেসি” বা দ্রুতগতির কুটনীতি যে সারা বিশ্বে শুরু হয়েছে সেটাতে চীন পারদর্শী বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

রাষ্ট্রনেতাদের সংক্ষিপ্ত সফর

তবে কোন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বা প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশের বিমানবন্দরে যাত্রাবিরতির ঘটনা এটাই প্রথম নয়। এর আগে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে চীনের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই আফ্রিকা সফরের সময় ঢাকায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক ঘণ্টার যাত্রা বিরতি করেছিলেন।

এছাড়া ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকার বিমানবন্দরে যাত্রাবিরতি করেছিলেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। এর আগে ২০১০ সালেও একাধিকবার যাত্রাবিরতি করেছিলেন তিনি। ফিলিস্তিনের সাবেক প্রেসিডেন্ট ইয়াসির আরাফাতও ঢাকার বিমানবন্দরে একাধিকবার যাত্রাবিরতি করেছেন।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ফরিদগঞ্জে হাসপাতালের আড়ালে চলছে অনৈতিক কাজ

রাশিয়া-মার্কিন দূতাবাসের ‘লড়াইয়ের’ মধ্যেই কেন ঢাকায় চীনা গ্যাং?

আপডেট সময় ০৬:৪০:৩১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৩

আফ্রিকা সফরে যাওয়ার সময় কয়েক ঘণ্টার জন্য ঢাকায় যাত্রাবিরতি করেছেন চীনের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিন গ্যাং। সোমবার (৯ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ২টার দিকে চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বহনকারী উড়োজাহাজটি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন। প্রায় ঘণ্টা দুয়েকের যাত্রাবিরতি শেষে তিনি আবার আফ্রিকা যাত্রা শুরু করেন। 

চীনা মন্ত্রীর ঢাকায় নামা কোন আনুষ্ঠানিক সফর ছিল না। একইসঙ্গে আফ্রিকা যেতে হলে বাংলাদেশ হয়ে না গেলেও চলে। মূলকথা এটি আসলে আফ্রিকা যাওয়ার রুট নয়। বাংলাদেশে রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের ঠাণ্ডা লড়াইয়ের সময় চীনা গ্যাংয়ের এমন ঢাকা সফরকে ঘিরে দেখা দিয়েছে নানা প্রশ্ন। রুট নেই, তবুও আফ্রিকা যাত্রায় কেন ঢাকায় নামলেন চীনা গ্যাং?

এ নিয়ে বিশেষজ্ঞরা নানা মত দিচ্ছেন। কেউ বলছেন, বাংলাদেশের প্রয়োজন খেয়াল রাখতে ঢাকায় যাত্রাবিরতি করেছেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আবার কেউ বলছেন, চীনের কাছে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠার আভাস দিচ্ছে এ সফর।

এদিকে সোমবার রাতের যাত্রাবিরতির মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ এবং ঘণ্টাখানেকের একটি বৈঠকও করেছেন। চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে মোমেন বলেন, আমরা করোনার টিকার জন্য ওনাদের ধন্যবাদ দিয়েছি। আমরা ৮০০ মিলিয়নের জিনিস বিক্রি করি। আর ১৩ বিলিয়নের জিনিস কিনি। এটা একপেশে হয়ে যাচ্ছে। বাণিজ্য বাড়ানোর জন্য ৯৮ পারসেন্ট প্রোডাক্টে ডিউটি ফ্রি, কোটা ফ্রি এক্সেস দেবেন বলে ঘোষণা দিয়েছে চীন। কিন্তু গেজেটটা হয়নি বলে আমাদের ব্যবসায়ীরা সেই সুবিধা পাচ্ছেন না। আমি চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেছি, এ বিষয়ে ঘোষণা দিতে, এতে আমাদের সুবিধা হয়।

২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের বাংলাদেশ সফরের সময় সই করা অর্থ সহায়তা বিষয়ক কয়েকটি চুক্তি বাস্তবায়নের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মোমেন। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এমন এক সময়ে বাংলাদেশে যাত্রাবিরতি করলেন, যখন বাংলাদেশের নানা ইস্যু নিয়ে রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের প্রকাশে বিরোধে জড়ানো নিয়ে নানা খবর আসছে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে।

এ বিষয়ে চীনা দূতাবাসের মুখপাত্র বলেন, চীন এবং আফ্রিকার সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রী চিন গ্যাং তার দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম রাষ্ট্রীয় সফরেই আফ্রিকা যাচ্ছেন। এটা টানা ৩৩তম বছর যখন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বার্ষিক বিদেশ সফরের প্রথম গন্তব্য আফ্রিকা। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা বলছেন, এরকম গুরুত্বপূর্ণ সফরের মধ্যে ঢাকায় যাত্রাবিরতি আসলে চীনের কাছে বাংলাদেশেরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠাকেই বোঝায়।

কেন বাংলাদেশ হয়েই আফ্রিকা যাচ্ছেন গ্যাং?

এ বিষয়ে চীনে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমেদ বিবিসিকে বলেন, এই যাত্রাবিরতি আলাদা করে বার্তা দেয় বিষয়টি সেরকম না হলেও একটা প্রশ্ন হতে পারে যে, অন্য পথ দিয়ে না গিয়ে তিনি কেন বাংলাদেশ হয়েই আফ্রিকা যাচ্ছেন।

তার মতে, বাংলাদেশের সাথে বিভিন্ন বিষয় আছে যেগুলো তারা গুরুত্ব সহকারে দেখে এটা তারই একটা প্রকাশ। বাংলাদেশকে চীন গুরুত্ব দেয় বলেই একদিনের সুযোগের সদ্ব্যবহার করেছে তারা।

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক সহযোগি চীন উল্লেখ করে সাবেক রাষ্ট্রদূত বলেন, তার সাথে সব সময়ই বাংলাদেশের নানা কাজ থাকে এবং সেগুলোকে এগিয়ে নিতে সব ধরণের সুযোগ ব্যবহার করা উচিত এবং চীন সেটাই করেছে।

এই যাত্রাবিরতি নিয়ে অন্য কোন পরিস্থিতি বা অন্য কোন দেশের সাথে সম্পর্কের বিষয়ে জড়িয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই বলেও মনে করেন তিনি।

বাংলাদেশের ‘নিড’ খেয়াল রাখছে চীন

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক ড. লাইলুফার ইয়াসমিন বিবিসিকে বলেন, কিছুদিন আগে সংবাদ মাধ্যমে যেমন বলা হয়েছিল যে, বাংলাদেশ রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের ঠান্ডা লড়াইয়ের জায়গা, সেরকমই চীনের কাছে বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্বটা অনেক বেশি। যেটা বাংলাদেশে যথাযথভাবে ব্যবহার করতে পারছে না।

সংগৃহীত

তিনি বলেন, চীনের বাংলাদেশের প্রতি যে গুরুত্ব আছে তা বারবার বিভিন্নভাবেই বোঝাচ্ছে দেশটি। বাংলাদেশের যেসব জায়গায় দরকার সেগুলোতে গুরুত্ব দেয়ার চেষ্টা করছে চীন।

তার ভাষায়, চীন বাংলাদেশের ‘নিড’ বা প্রয়োজনগুলোর দিকে খেয়াল রাখছে।

তিনি এও মনে করেন, এই যাত্রাবিরতির একটা কৌশলগত গুরুত্ব আছে এবং এই বার্তাটা শুধু বাংলাদেশের জন্য নয় বরং বাকি বিশ্বকেও ইঙ্গিত দেয়া হচ্ছে “বাংলাদেশ ইজ ইম্পরট্যান্ট টু চায়না।”

সাউথ এশিয়ার ইকুয়েশনে বাংলাদেশের গুরুত্ব

এ বিষয়ে ড. ইয়াসমিন বিবিসিকে বলেন, কুটনীতি এখন অনেক দ্রুতগতি সম্পন্ন হয়েছে। আর এ কারণেই গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলোতে এ ধরণের সংক্ষিপ্ত সফর করে থাকেন রাষ্ট্রনেতারা। কোন একটি গন্তব্যে যাত্রা করলে যদি পথিমধ্যে এমন কোন দেশ থাকে যাকে একটি বার্তা দেয়ার দরকার হয় তখন এ ধরণের যাত্রাবিরতি হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষক বলেন, “উনি (চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী) কিন্তু দায়িত্ব নেবার পরেই বাংলাদেশকে এই গুরুত্বটা দিয়েছেন। বোঝা যায়, চীনের সাউথ এশিয়ার ইকুয়েশনে বাংলাদেশের গুরুত্ব কতখানি, এবং এই যাত্রাবিরতি সেটার একটা নজির হিসেবেই দেখা যেতে পারে।”

আনুষ্ঠানিক সফরের বাইরে একটা “মোবাইল ডিপলোমেসি” বা দ্রুতগতির কুটনীতি যে সারা বিশ্বে শুরু হয়েছে সেটাতে চীন পারদর্শী বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

রাষ্ট্রনেতাদের সংক্ষিপ্ত সফর

তবে কোন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বা প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশের বিমানবন্দরে যাত্রাবিরতির ঘটনা এটাই প্রথম নয়। এর আগে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে চীনের সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই আফ্রিকা সফরের সময় ঢাকায় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক ঘণ্টার যাত্রা বিরতি করেছিলেন।

এছাড়া ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাকার বিমানবন্দরে যাত্রাবিরতি করেছিলেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। এর আগে ২০১০ সালেও একাধিকবার যাত্রাবিরতি করেছিলেন তিনি। ফিলিস্তিনের সাবেক প্রেসিডেন্ট ইয়াসির আরাফাতও ঢাকার বিমানবন্দরে একাধিকবার যাত্রাবিরতি করেছেন।