ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরে ২ ফিলিস্তিনি ভাইকে গাড়ি চাপা দিয়ে হত্যা করেছে এক ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারী। নিহত ওই দুই ফিলিস্তিনি একে অপরের ভাই। শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) অধিকৃত পশ্চিম তীরের একটি চেকপয়েন্টের কাছে এই ঘটনা ঘটে।
ফিলিস্তিনের ওয়াফা নিউজ এজেন্সির বরাত দিয়ে রোববার (১৮ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অধিকৃত পশ্চিম তীরের নাবলুসের দক্ষিণে জাতারা চেকপয়েন্টে ফিলিস্তিনি ওই দুই ভাইকে ‘ইচ্ছাকৃতভাবে’ গাড়ি চাপা দিয়ে হত্যা করা হয় বলে ফিলিস্তিনি এই বার্তাসংস্থাটি শনিবার জানিয়েছে। নিহত ফিলিস্তিনি ওই দুই ভাইয়ের নাম মোহাম্মদ এবং মুহান্নাদ মুতাইর।
এক প্রেস বিবৃতিতে কালান্দিয়ার জেরুজালেম গভর্নরেট অফিসের পরিচালক জাকারিয়া ফায়ালা বলেছেন, মোহাম্মদের মৃতদেহ নাবলুসের একটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। অন্যদিকে মুহান্নাদকে মৃত ঘোষণার আগে হাদাসাহ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল।
ফায়ালার মতে, নিহত ওই দুই ভাই তাদের অন্য তিন ভাইবোনের সঙ্গে সেখানে অবস্থান করছিলেন। আগামী শুক্রবার তাদের বোনের বিয়ের কথা রয়েছে এবং এজন্যই কাজে যাচ্ছিলেন তারা। এসময় তাদের বহনকারী গাড়িটি নষ্ট হয়ে যায়।
পরে তারা নষ্ট হয়ে যাওয়া টায়ার ঠিক করার জন্য গাড়িটি টেনে নেওয়ার চেষ্টাকালে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীর দ্রুতগামী গাড়ি ‘ইচ্ছাকৃতভাবে’ তাদেরকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারায় মোহাম্মদ।
ফায়ালা বলেন, ঘটনার পরপরই অভিযুক্ত বসতি স্থাপনকারী ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। বার্তাসংস্থা মান জানিয়েছে, গাড়ি চাপায় মুহান্নাদের পা তার শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং গুরুতর অবস্থায় হাদাসাহ হাসপাতালে পৌঁছানোর কিছুক্ষণ পরই তিনি মারা যান।
ভুক্তভোগী এই ফিলিস্তিনি ভাইয়েরা কালান্দিয়ায় বসবাস করেন। শনিবারের ওই ঘটনার জেরে রোববার সেখানে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে।
এদিকে প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের বৃহত্তম উপদল ফাতাহ-এর একজন মুখপাত্র এই ঘটনাটিকে ‘ফ্যাসিবাদের মাধ্যমে সংঘটিত নতুন জঘন্য অপরাধ’ বলে বর্ণনা করেছেন। মুনথার আল-হায়েক এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘ইসরায়েলিরা দখলদারিত্বসহ অপরাধ করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, এবং আমাদের জনগণ সেটির জবাব দিতে ও আত্মরক্ষা করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’
এর আগে গত মাসে জাওয়াদ এবং ধফর রিমাউই নামে দুই ফিলিস্তিনি ভাই তাদের পার্শ্ববর্তী গ্রামে ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছিলেন।
জাতিসংঘের মতে, ২০০৬ সালের পর থেকে ২০২২ সালটিই ফিলিস্তিনিদের জন্য সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী বছর।