ঢাকা ০৭:০৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বেরোবিতে স্বৈরাচারী দোসর ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ষড়যন্ত্রকারী এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদে মানববন্ধন বিটিভির সংবাদ বেসরকারি টেলিভিশনে সম্প্রচারের প্রয়োজন নেই : নাহিদ শুক্রবারও চলবে মেট্রোরেল চাঁপাইনবাবগঞ্জ র‍্যাব ক্যাম্পের অভিযানে দু’কোটি টাকার হেরোইন উদ্ধার, আটক-১ অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত হলেই ভাসতে থাকে প্রথম শ্রেণীর জাজিরা পৌরসভা। চট্টগ্রামে সাবেক সাংসদ বাদলের কবরে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ আবরার ফাহাদের মৃত্যুবার্ষিকীতে মুক্তি পাচ্ছে ‘রুম নম্বর ২০১১’ গণতন্ত্র ও বিএনপি সমান্তরাল : মির্জা ফখরুল আ.লীগ দেশকে পরনির্ভরশীল রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল : তারেক রহমান

কমলার বাক্যবাণে খেই হারালেন ট্রাম্প

প্রথমবারের মতো সরাসরি বিতর্কে মুখোমুখি হয়েই বাজিমাত করলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। বিতর্কের শুরু থেকেই সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চেপে ধরেন তিনি। একের পর এক যুক্তির বাণে ট্রাম্পের প্রায় প্রতিটি কথার তথ্যনির্ভর জবাব দেন। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় রাত ৯টায় এবিসি নিউজের আয়োজনে এ বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়।

বিতর্ক মঞ্চে প্রবেশ করেই ট্রাম্পের দিকে এগিয়ে গিয়ে হাত বাড়িয়ে দেন কমলা। দুজনের করমর্দন শেষে কমলার বক্তব্য দিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। এদিন উভয় নেতা গাজা যুদ্ধ, অর্থনীতি, কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্যসেবা, মূল্যস্ফীতি, অভিবাসন নীতি ও গর্ভপাতসহ নানা বিষয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেছেন। তবে কমলার সামনে পাত্তাই পাননি সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। শেষমেশ একপর্যায়ে কমলাকে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে বর্ণনা করেন তিনি।

বিতর্কের প্রথম প্রশ্নই ছিল অর্থনৈতিক পরিকল্পনা ও মূল্যস্ফীতি নিয়ে। এই ইস্যুতে কমলা বলেন, তিনি মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে এসেছেন। তাই, তিনি তাদের কষ্ট বোঝেন। এজন্য মধ্যবিত্তদের জন্য কর কর্তনের পরিকল্পনার কথা জানান কমলা। আর ট্রাম্প ক্ষমতায় গেলে ধনীদের কর কর্তন করা হবে বলে উল্লেখ করেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট। জবাবে ট্রাম্প বলেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে দেশটির ইতিহাসের সেরা অর্থনীতি বানিয়েছিলেন। আর মূল্যস্ফীতির জন্য বাইডেন প্রশাসনকেই দায়ী করেন তিনি।

ক্ষমতায় যেতে দুই নেতাই ইসরায়েলকে তোষণ করেছে। ট্রাম্প অভিযোগ করে বলেন, কমলা ইসরায়েলকে ঘৃণা করেন। তিনি আরব জনগণকেও ঘৃণা করেন বলে দাবি করেন ট্রাম্প। গাজা যুদ্ধ নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট থাকলে এ যুদ্ধ হতোই না। এই যুদ্ধের সমাপ্তি হওয়া উচিত উল্লেখ করে কমলা বলেন, ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে, তবে এটি কীভাবে করছে তা গুরুত্বপূর্ণ।

বিতর্কে বাইডেনকে অস্তিত্বহীন প্রেসিডেন্ট বলে কমলার তোপের মুখে পড়েন ট্রাম্প। ওই মন্তব্যের জের ধরে কমলা বলেন, নির্বাচনে আপনি বাইডেনের বিরুদ্ধে লড়ছেন না, আপনি লড়ছেন আমার বিরুদ্ধে। একপর্যায়ে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত প্রসঙ্গে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে বলেন, আপনি এখন আর প্রেসিডেন্ট নেই- এতে আমাদের ন্যাটো মিত্ররা খুবই কৃতজ্ঞ। পুতিন ট্রাম্পকে সহজেই কবজা করে ফেলতেন বলেও উল্লেখ করেন কমলা।

অবৈধ অভিবাসীদের ঠেকাতে বাইডেন প্রশাসনে নিজের ভূমিকার কথা তুলে ধরেন কমলা। তিনি বলেন, কংগ্রেসে এ নিয়ে একটি বিল উত্থাপন করা হয়েছিল, সেটিতে সমর্থন জানিয়েছিলাম। এর মাধ্যমে সীমান্তে আরও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে, যা সীমান্ত এলাকা সুরক্ষা দেবে। তবে ট্রাম্প কড়া ভাষায় বাইডেন প্রশাসনের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, দেশটির সীমান্ত দাগি অপরাধীদের জন্য খুলে দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন।

আফগানিস্তানে তালেবানদের সঙ্গে ট্রাম্পের আলোচনা, গর্ভপাত, ট্রাম্পের বিতর্কিত বিভিন্ন মন্তব্য নিয়েও প্রশ্ন করা হয় বিতর্কে। এসব প্রশ্নের কোনো কোনোটির ক্ষেত্রে ক্রেডিট নিয়েছেন ট্রাম্প। কিছু প্রশ্নের ক্ষেত্রে উত্তর দেওয়া এড়িয়ে গেছেন তিনি। বিতর্ক শেষে কমলা শিবিরের ধারণা এতে জয়ী হয়েছেন। ট্রাম্প শিবিরও একই ধরনের দাবি করলেও বিশ্লেষকরা বলছেন, কমলাই বিতর্কে এগিয়ে ছিলেন।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

বেরোবিতে স্বৈরাচারী দোসর ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ষড়যন্ত্রকারী এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে

কমলার বাক্যবাণে খেই হারালেন ট্রাম্প

আপডেট সময় ১২:১৬:১৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

প্রথমবারের মতো সরাসরি বিতর্কে মুখোমুখি হয়েই বাজিমাত করলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। বিতর্কের শুরু থেকেই সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চেপে ধরেন তিনি। একের পর এক যুক্তির বাণে ট্রাম্পের প্রায় প্রতিটি কথার তথ্যনির্ভর জবাব দেন। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় রাত ৯টায় এবিসি নিউজের আয়োজনে এ বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়।

বিতর্ক মঞ্চে প্রবেশ করেই ট্রাম্পের দিকে এগিয়ে গিয়ে হাত বাড়িয়ে দেন কমলা। দুজনের করমর্দন শেষে কমলার বক্তব্য দিয়ে শুরু হয় বিতর্ক। এদিন উভয় নেতা গাজা যুদ্ধ, অর্থনীতি, কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্যসেবা, মূল্যস্ফীতি, অভিবাসন নীতি ও গর্ভপাতসহ নানা বিষয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেছেন। তবে কমলার সামনে পাত্তাই পাননি সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। শেষমেশ একপর্যায়ে কমলাকে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে বর্ণনা করেন তিনি।

বিতর্কের প্রথম প্রশ্নই ছিল অর্থনৈতিক পরিকল্পনা ও মূল্যস্ফীতি নিয়ে। এই ইস্যুতে কমলা বলেন, তিনি মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে এসেছেন। তাই, তিনি তাদের কষ্ট বোঝেন। এজন্য মধ্যবিত্তদের জন্য কর কর্তনের পরিকল্পনার কথা জানান কমলা। আর ট্রাম্প ক্ষমতায় গেলে ধনীদের কর কর্তন করা হবে বলে উল্লেখ করেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট। জবাবে ট্রাম্প বলেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে দেশটির ইতিহাসের সেরা অর্থনীতি বানিয়েছিলেন। আর মূল্যস্ফীতির জন্য বাইডেন প্রশাসনকেই দায়ী করেন তিনি।

ক্ষমতায় যেতে দুই নেতাই ইসরায়েলকে তোষণ করেছে। ট্রাম্প অভিযোগ করে বলেন, কমলা ইসরায়েলকে ঘৃণা করেন। তিনি আরব জনগণকেও ঘৃণা করেন বলে দাবি করেন ট্রাম্প। গাজা যুদ্ধ নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট থাকলে এ যুদ্ধ হতোই না। এই যুদ্ধের সমাপ্তি হওয়া উচিত উল্লেখ করে কমলা বলেন, ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে, তবে এটি কীভাবে করছে তা গুরুত্বপূর্ণ।

বিতর্কে বাইডেনকে অস্তিত্বহীন প্রেসিডেন্ট বলে কমলার তোপের মুখে পড়েন ট্রাম্প। ওই মন্তব্যের জের ধরে কমলা বলেন, নির্বাচনে আপনি বাইডেনের বিরুদ্ধে লড়ছেন না, আপনি লড়ছেন আমার বিরুদ্ধে। একপর্যায়ে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত প্রসঙ্গে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে বলেন, আপনি এখন আর প্রেসিডেন্ট নেই- এতে আমাদের ন্যাটো মিত্ররা খুবই কৃতজ্ঞ। পুতিন ট্রাম্পকে সহজেই কবজা করে ফেলতেন বলেও উল্লেখ করেন কমলা।

অবৈধ অভিবাসীদের ঠেকাতে বাইডেন প্রশাসনে নিজের ভূমিকার কথা তুলে ধরেন কমলা। তিনি বলেন, কংগ্রেসে এ নিয়ে একটি বিল উত্থাপন করা হয়েছিল, সেটিতে সমর্থন জানিয়েছিলাম। এর মাধ্যমে সীমান্তে আরও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে, যা সীমান্ত এলাকা সুরক্ষা দেবে। তবে ট্রাম্প কড়া ভাষায় বাইডেন প্রশাসনের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, দেশটির সীমান্ত দাগি অপরাধীদের জন্য খুলে দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন।

আফগানিস্তানে তালেবানদের সঙ্গে ট্রাম্পের আলোচনা, গর্ভপাত, ট্রাম্পের বিতর্কিত বিভিন্ন মন্তব্য নিয়েও প্রশ্ন করা হয় বিতর্কে। এসব প্রশ্নের কোনো কোনোটির ক্ষেত্রে ক্রেডিট নিয়েছেন ট্রাম্প। কিছু প্রশ্নের ক্ষেত্রে উত্তর দেওয়া এড়িয়ে গেছেন তিনি। বিতর্ক শেষে কমলা শিবিরের ধারণা এতে জয়ী হয়েছেন। ট্রাম্প শিবিরও একই ধরনের দাবি করলেও বিশ্লেষকরা বলছেন, কমলাই বিতর্কে এগিয়ে ছিলেন।