ঢাকা ০৭:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ২৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ বরিশাল সাংবাদিক কল্যাণ পরিষদের মঠবাড়িয়া উপজেলা শাখার সম্মেলন অনুষ্ঠিত পলিথিনে না দিলে ‘কিসে দিমু’ কুমিল্লায় র‌্যাব ১১ সিপিসি২ এর অভিযানে ১০ কেজি গাঁজা সহ ১ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার গোয়াইনঘাটে কিন্ডারগার্টেন শিক্ষকদের দু’দিনব্যাপী প্রশিক্ষনের উদ্বোধনঃ বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএমইউজে) চট্টগ্রাম জেলা শাখা কমিটি গঠন। হাড়িয়ে যাওয়া পিতাকে ফিরে পেতে সন্তানের আকুতি নাটোরে দুর্গাপূজার মণ্ডপ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে পৌর প্রশাসকের মতবিনিময় ট্রপিকাল হোমস লিমিটেডের ডিএমডি নুরুল হুদা শাহীনগংদের বিরুদ্ধে পুলিশ কমিশনার সহ ৪ দপ্তরে অভিযোগ ‘পোশাক কারখানার পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক’

গৃহযুদ্ধে জর্জরিত মিয়ানমারের ভবিষ্যৎ নিয়ে চীন-মার্কিন দ্বন্দ্ব

গত কয়েকবছর ধরে গৃহযুদ্ধের জালে আক্রান্ত মিয়ানমার। জান্তা সরকারের সঙ্গে সশস্ত্রযুদ্ধে জড়িয়েছে বিদ্রোহীগোষ্ঠীগুলো। বর্তমানে এই যুদ্ধের ব্যপ্তি বেড়েছে আগের যে কোনো সময়ের বেশি। এমন পরিস্থিতিতে মিয়ারমার ইস্যুতে পরাশক্তিগুলোর দ্বন্দ্ব সামনে আসছে।

মিয়ানমারে বরাবরই চীনের প্রভাব রয়েছে। তবে সেখানে বাগড়া দিতে চায় মার্কিন প্রশাসন। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে চীনের প্রভাব কমাতে যুক্তরাষ্ট্র মরিয়া। সম্প্রতি মিয়ানমারে অভ্যন্তরীন পরিস্থিতিতে বাইরের হস্তক্ষেপ হচ্ছে বলে সতর্ক করেছে চীন। এতে দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক সংঘাতের মাঝখানে পড়ে গেছে বেইজিং ও ওয়াশিংটন।

মিয়ানমারের রাজনীতিতে গণতন্ত্রপন্থিরা কোনঠাসা। আর গৃহযুদ্ধের ডামাডোলে মার্কিনিরা গণতন্ত্রপন্থিদের সঙ্গে সম্পৃক্ততরা বৃদ্ধি করছে। ফলে বেইজিং শিবিরে মার্কিন উপস্থিতি উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মিয়ানমারে ওয়াশিংটনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে গভীর সংশয় রয়েছে।

গত ১৬ আগস্ট, একটি অনানুষ্ঠানিক বৈঠকের বসেন লাওস, থাইল্যান্ড ও মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। যেখানে চীন জোর দিয়ে বলে আসছে মিয়ানমারে ‘বহির্দেশীয় হস্তক্ষপের’ অর্থ হচ্ছে সীমালঙ্ঘন করা। যদিও দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের নাম উল্লেখ করেননি। তবে তার মন্তব্য ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে জবাব বলেই মনে হয়েছে।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু কর্মকর্তা ও মিয়ানমারের বিরোধীদলের শীর্ষনেতাদের সঙ্গে একটি ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন। যেখানে ওয়াশিংটন অসামরিক সরকারে প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে তাদের সমর্থন পূনর্ব্যক্ত করে। এতে পরিষ্কার এই ধারনা প্রকাশ পাচ্ছে, সামরিক জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহীদের একত্রিত লড়াইকে সমর্থন করছে যুক্তরাষ্ট্র।

মিয়ানমারে চীনের কৌশলগত স্বার্থের পেছনে রয়েছে তার প্রচুর অর্থনৈতিক বিনিয়োগ। এছাড়া ভারত মহাসাগরের নাগালের মধ্যে যাওয়ার লক্ষ্যে চীনের যে পরিকল্পনা তার জন্য মিয়ানমার খুব গুরুত্বপূর্ণ। আর চীনের শক্তি যত খর্ব করা যায় ততই যুক্তরাষ্ট্রের মঙ্গল।

চীনের ভাষ্য, বাইরের শক্তি দ্বারা মিয়ানমারের অভ্যন্তরীন বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা যাবে না। তবে চীন-যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই চায়, গৃহযুদ্ধের অবসান এবং একটি স্থিতিশীল, সমৃদ্ধ মিয়ানমার। তবে সামরিক সরকারের স্বৈরাচারি মনোভাব বজায় থাকলে আদৌ সেটা সম্ভব হবে কি না, তা সহজে বলা কঠিন।

কারণ, সামরিক সরকারের উপর চীনের সমর্থন পুরোনো। আর পশ্চিমা রাষ্ট্র এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলোর আপত্তির মুখেও চীনের ক্রবর্ধমান আধিপত্য বহাল রয়েছে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ

গৃহযুদ্ধে জর্জরিত মিয়ানমারের ভবিষ্যৎ নিয়ে চীন-মার্কিন দ্বন্দ্ব

আপডেট সময় ০৫:০২:৩০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

গত কয়েকবছর ধরে গৃহযুদ্ধের জালে আক্রান্ত মিয়ানমার। জান্তা সরকারের সঙ্গে সশস্ত্রযুদ্ধে জড়িয়েছে বিদ্রোহীগোষ্ঠীগুলো। বর্তমানে এই যুদ্ধের ব্যপ্তি বেড়েছে আগের যে কোনো সময়ের বেশি। এমন পরিস্থিতিতে মিয়ারমার ইস্যুতে পরাশক্তিগুলোর দ্বন্দ্ব সামনে আসছে।

মিয়ানমারে বরাবরই চীনের প্রভাব রয়েছে। তবে সেখানে বাগড়া দিতে চায় মার্কিন প্রশাসন। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে চীনের প্রভাব কমাতে যুক্তরাষ্ট্র মরিয়া। সম্প্রতি মিয়ানমারে অভ্যন্তরীন পরিস্থিতিতে বাইরের হস্তক্ষেপ হচ্ছে বলে সতর্ক করেছে চীন। এতে দক্ষিণ এশিয়ার ভূ-রাজনৈতিক সংঘাতের মাঝখানে পড়ে গেছে বেইজিং ও ওয়াশিংটন।

মিয়ানমারের রাজনীতিতে গণতন্ত্রপন্থিরা কোনঠাসা। আর গৃহযুদ্ধের ডামাডোলে মার্কিনিরা গণতন্ত্রপন্থিদের সঙ্গে সম্পৃক্ততরা বৃদ্ধি করছে। ফলে বেইজিং শিবিরে মার্কিন উপস্থিতি উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মিয়ানমারে ওয়াশিংটনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে গভীর সংশয় রয়েছে।

গত ১৬ আগস্ট, একটি অনানুষ্ঠানিক বৈঠকের বসেন লাওস, থাইল্যান্ড ও মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। যেখানে চীন জোর দিয়ে বলে আসছে মিয়ানমারে ‘বহির্দেশীয় হস্তক্ষপের’ অর্থ হচ্ছে সীমালঙ্ঘন করা। যদিও দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের নাম উল্লেখ করেননি। তবে তার মন্তব্য ওয়াশিংটনের বিরুদ্ধে জবাব বলেই মনে হয়েছে।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু কর্মকর্তা ও মিয়ানমারের বিরোধীদলের শীর্ষনেতাদের সঙ্গে একটি ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন। যেখানে ওয়াশিংটন অসামরিক সরকারে প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে তাদের সমর্থন পূনর্ব্যক্ত করে। এতে পরিষ্কার এই ধারনা প্রকাশ পাচ্ছে, সামরিক জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহীদের একত্রিত লড়াইকে সমর্থন করছে যুক্তরাষ্ট্র।

মিয়ানমারে চীনের কৌশলগত স্বার্থের পেছনে রয়েছে তার প্রচুর অর্থনৈতিক বিনিয়োগ। এছাড়া ভারত মহাসাগরের নাগালের মধ্যে যাওয়ার লক্ষ্যে চীনের যে পরিকল্পনা তার জন্য মিয়ানমার খুব গুরুত্বপূর্ণ। আর চীনের শক্তি যত খর্ব করা যায় ততই যুক্তরাষ্ট্রের মঙ্গল।

চীনের ভাষ্য, বাইরের শক্তি দ্বারা মিয়ানমারের অভ্যন্তরীন বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা যাবে না। তবে চীন-যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই চায়, গৃহযুদ্ধের অবসান এবং একটি স্থিতিশীল, সমৃদ্ধ মিয়ানমার। তবে সামরিক সরকারের স্বৈরাচারি মনোভাব বজায় থাকলে আদৌ সেটা সম্ভব হবে কি না, তা সহজে বলা কঠিন।

কারণ, সামরিক সরকারের উপর চীনের সমর্থন পুরোনো। আর পশ্চিমা রাষ্ট্র এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলোর আপত্তির মুখেও চীনের ক্রবর্ধমান আধিপত্য বহাল রয়েছে।