ঢাকা ০৮:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বাংলাদেশে অভ্যুত্থানের পর আমেরিকা প্রকাশ্যে এসে বড় ঘোষণা চট্টগ্রাম মহাসড়কের ছোট দারোগার হাট বাজার এলাকায় উল্টো পথে আসা ট্রাকের সঙ্গে বাসের সংঘর্ষ বোরহানউদ্দিনে পৌর বিএনপির সদস্য সচিব আবু জাফর মৃধা’র বসতবাড়িতে হামলা। বনানীর আবাসিক হোটেলে মিলল ৯৮৪ বোতল বিদেশি মদ গাজীপুর কাস্টমসের পিওন কাওসারের কোটি টাকার সম্পত্তি পিলখানা হত্যাকাণ্ডকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ আখ্যায়িত করার দাবি বাকেরগঞ্জের বিরঙ্গল দারুসুন্নাত নেছারিয়া দাখিল মাদ্রাসাটির বিভিন্ন অনিয়ম রয়েছে গোপালগঞ্জের সোহাগ একসঙ্গে দুই সরকারি চাকরি করেন বেরোবিতে স্বৈরাচারী দোসর ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ষড়যন্ত্রকারী এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের প্রতিবাদে মানববন্ধন

বাবার কবরের খোঁজে…

দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়ায় ১৯৬৭ সালে মারা যান কে রামসুন্দরাম নামে এক ভারতীয় স্কুল শিক্ষক। মারা যাওয়ার সময় থিরুমারান নামে ছয় মাস বয়সী এক ছেলে ও স্ত্রীকে রেখে যান তিনি।

মৃত বাবার হারিয়ে যাওয়া কবর খুঁজে বের করতে ভারত থেকে মালয়েশিয়ায় দীর্ঘ এক পথ পাড়ি দিয়েছেন সেই সময়কার ছয় মাস ও বর্তমান ৫৫ বছর বয়সী থিরুমারান।

প্রভুরাও আনন্দ নামে তামিল নাড়ুর এক সাংবাদিক ‘বাবার কবরের খোঁজে মালয়েশিয়ায়’ যাওয়া থিরুমারানকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন।

সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৬০ এর দশকে মালয়েশিয়ায় স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে বসবাস করতেন রামসুন্দরাম। কিন্তু ১৯৬৭ সালে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান।  তাকে সমাহিত করে ছয় মাসের ছেলেকে নিয়ে সে বছরই ভারতের তামিল নাড়ুতে নিজ বাড়িতে চলে আসেন তার স্ত্রী। এরপর মালয়েশিয়ায় অবহেলায় পড়ে থাকে রামসুন্দরের কবর। কিন্তু বাবার শেষ স্মৃতি চিহ্নটুকু খুঁজে বের করতে ব্যাকুল ছিলেন ছেলে থিরুমারান। অবশেষে দীর্ঘ প্রায় ৫৫ বছর তার সেই ইচ্ছা পূরণ হয় তার।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, থিরুমারান তার মায়ের কাছ থেকে জানতে পেরেছিলেন তার বাবা তাদের নিয়ে মালয়েশিয়ার কার্লিংয়ে বসবাস করতেন। তিনি থোট্টা থেসাইয়া ভাকাই তামিল পল্লি নামক একটি স্কুলে ইংরেজি পড়াতেন।

মায়ের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গুগলে মালয়েশিয়ার সেই স্থানটির খোঁজ পান থিরুমারান। সঙ্গে পুরোনো স্কুলটির সন্ধানও পান। যদিও ওই স্কুলটির স্থান পরিবর্তন করা হয়, কিন্তু তবুও তিনি সেটির প্রিন্সিপালের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সক্ষম হন। সেই প্রিন্সিপালই ওই স্কুলের সাবেক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে থিরুমারানের যোগাযোগ করিয়ে দেন।

সেই সব সাবেক শিক্ষার্থীরা তার বাবার কবরের খোঁজ করে দেন। অবশষে চলতি বছরের ৮ নভেম্বর মালয়েশিয়ায় যান থিরুমারান। এরপর কুয়াশাচ্ছন্ন এক সকালে পৌঁছান পুরোনো সেই সমাধিস্থলে।

অবশ্য সেখানে গিয়ে তিনি দেখতে পান অযত্নে-অবহেলায় পড়ে থাকা কবরটি প্রায় হারিয়েই যাচ্ছিল। এর ওপরে বেড়ে ওঠেছিল গাছপালা ও আগাছা। এমনকি এটি যে তার বাবার কবর সেটিও বোঝার উপায় ছিল না। ফলে তখন এটি পরিস্কার করার উদ্যোগ নেন তিনি। কবরটি পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করার পর সেটিতে থাকা সমাধিস্তম্ভে রামসুন্দরামের নাম, জন্ম ও মৃত্যু তারিখ এবং একটি ছোট ছবি ভেসে ওঠে। এর মাধ্যমে জীবনে প্রথমবারের মতো তিনি তার বাবার ছবি দেখতে পেয়েছিলেন।

পুরো ভ্রমণের অভিজ্ঞতা জানিয়ে থিরুমারান জানিয়েছেন, মায়ের কাছ থেকে বাবার কবরের কথা জানার পরই সেখানে যাওয়ার ইচ্ছা হয় তার। তিনি মায়ের মুখে জানতে পারেন তাদের নিয়ে কার্লিংয়ে থাকতেন রামসুন্দরাম। কিন্তু এর চেয়ে বেশি তথ্য ছিল না তার কাছে। তবুও গুগল ও অন্যান্যদের সহায়তায় তিনি কবরটির সন্ধান পান।

তিনি আরও জানিয়েছেন, তার বয়স যখন মাত্র ২২ বছর ছিল তখন তার মাও মারা যান। তিনি বাবার কবর দেখতে আসার আগে মায়ের কবরের কিছু মাটি নিয়ে এসেছিলেন। সেই মাটিগুলো বাবার কবরের মাটিতে মিশিয়ে দেন তিনি।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলাদেশে অভ্যুত্থানের পর আমেরিকা প্রকাশ্যে এসে বড় ঘোষণা

বাবার কবরের খোঁজে…

আপডেট সময় ০৫:১১:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২২

দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়ায় ১৯৬৭ সালে মারা যান কে রামসুন্দরাম নামে এক ভারতীয় স্কুল শিক্ষক। মারা যাওয়ার সময় থিরুমারান নামে ছয় মাস বয়সী এক ছেলে ও স্ত্রীকে রেখে যান তিনি।

মৃত বাবার হারিয়ে যাওয়া কবর খুঁজে বের করতে ভারত থেকে মালয়েশিয়ায় দীর্ঘ এক পথ পাড়ি দিয়েছেন সেই সময়কার ছয় মাস ও বর্তমান ৫৫ বছর বয়সী থিরুমারান।

প্রভুরাও আনন্দ নামে তামিল নাড়ুর এক সাংবাদিক ‘বাবার কবরের খোঁজে মালয়েশিয়ায়’ যাওয়া থিরুমারানকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছেন।

সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৬০ এর দশকে মালয়েশিয়ায় স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে বসবাস করতেন রামসুন্দরাম। কিন্তু ১৯৬৭ সালে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান।  তাকে সমাহিত করে ছয় মাসের ছেলেকে নিয়ে সে বছরই ভারতের তামিল নাড়ুতে নিজ বাড়িতে চলে আসেন তার স্ত্রী। এরপর মালয়েশিয়ায় অবহেলায় পড়ে থাকে রামসুন্দরের কবর। কিন্তু বাবার শেষ স্মৃতি চিহ্নটুকু খুঁজে বের করতে ব্যাকুল ছিলেন ছেলে থিরুমারান। অবশেষে দীর্ঘ প্রায় ৫৫ বছর তার সেই ইচ্ছা পূরণ হয় তার।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, থিরুমারান তার মায়ের কাছ থেকে জানতে পেরেছিলেন তার বাবা তাদের নিয়ে মালয়েশিয়ার কার্লিংয়ে বসবাস করতেন। তিনি থোট্টা থেসাইয়া ভাকাই তামিল পল্লি নামক একটি স্কুলে ইংরেজি পড়াতেন।

মায়ের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গুগলে মালয়েশিয়ার সেই স্থানটির খোঁজ পান থিরুমারান। সঙ্গে পুরোনো স্কুলটির সন্ধানও পান। যদিও ওই স্কুলটির স্থান পরিবর্তন করা হয়, কিন্তু তবুও তিনি সেটির প্রিন্সিপালের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সক্ষম হন। সেই প্রিন্সিপালই ওই স্কুলের সাবেক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে থিরুমারানের যোগাযোগ করিয়ে দেন।

সেই সব সাবেক শিক্ষার্থীরা তার বাবার কবরের খোঁজ করে দেন। অবশষে চলতি বছরের ৮ নভেম্বর মালয়েশিয়ায় যান থিরুমারান। এরপর কুয়াশাচ্ছন্ন এক সকালে পৌঁছান পুরোনো সেই সমাধিস্থলে।

অবশ্য সেখানে গিয়ে তিনি দেখতে পান অযত্নে-অবহেলায় পড়ে থাকা কবরটি প্রায় হারিয়েই যাচ্ছিল। এর ওপরে বেড়ে ওঠেছিল গাছপালা ও আগাছা। এমনকি এটি যে তার বাবার কবর সেটিও বোঝার উপায় ছিল না। ফলে তখন এটি পরিস্কার করার উদ্যোগ নেন তিনি। কবরটি পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করার পর সেটিতে থাকা সমাধিস্তম্ভে রামসুন্দরামের নাম, জন্ম ও মৃত্যু তারিখ এবং একটি ছোট ছবি ভেসে ওঠে। এর মাধ্যমে জীবনে প্রথমবারের মতো তিনি তার বাবার ছবি দেখতে পেয়েছিলেন।

পুরো ভ্রমণের অভিজ্ঞতা জানিয়ে থিরুমারান জানিয়েছেন, মায়ের কাছ থেকে বাবার কবরের কথা জানার পরই সেখানে যাওয়ার ইচ্ছা হয় তার। তিনি মায়ের মুখে জানতে পারেন তাদের নিয়ে কার্লিংয়ে থাকতেন রামসুন্দরাম। কিন্তু এর চেয়ে বেশি তথ্য ছিল না তার কাছে। তবুও গুগল ও অন্যান্যদের সহায়তায় তিনি কবরটির সন্ধান পান।

তিনি আরও জানিয়েছেন, তার বয়স যখন মাত্র ২২ বছর ছিল তখন তার মাও মারা যান। তিনি বাবার কবর দেখতে আসার আগে মায়ের কবরের কিছু মাটি নিয়ে এসেছিলেন। সেই মাটিগুলো বাবার কবরের মাটিতে মিশিয়ে দেন তিনি।