ঢাকা ০৮:২০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
রংপুর হতে ১৯৬ বোতল ফেন্সিডিলসহ ২ নারী মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার র‌্যাব-১৩ হাতে “ধলাঁচান গানে প্রথম দেখা যাবে একঝাক ভেড়ার পাল” বিস্ফোরক ও নাশকতা মামলায় নাটোরের বড়াইগ্রাম প্রায় ৩৬ আসামি কেস খারিজ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘেরাও জবি শিক্ষার্থীদের যুবদল নেতা হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানো হলো শাজাহান মেনন ও গোলাপকে চাটমোহরে জাসাস’র উদ্যোগে ভিডিও প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা বাহার ও মেয়ে সূচনাসহ ৪ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চন্দনাইশ উপজেলাধীন সাতবাড়ীয়া ইউনিয়নের যতরকূল গ্রামের ছৈয়দ আহমদ চৌধুরী মাষ্টার বাড়ীর আধ্যাত্নিক ধর্মভীরু ইয়াছিন মোঃ মহসিন চৌধুরীর ১৪ তম মৃত্যুবার্ষিকী আজারবাইজানের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ফ্রিজ খুলতেই দেখেন স্ত্রীর হাত-পা বাঁধা লাশ

হাকালুকি হাওরে চলছে অবাধে অতিথি পাখি শিকার; কর্তৃপক্ষ নিরব

এশিয়ার সর্ববৃহৎ হাকালুকি হাওরে কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবে অবাধে চলছে পাখি শিকার। পাখি শিকারিরা সবসময় তৎপর থাকলেও যথাযথ কর্তৃপক্ষ রয়েছে অন্ধকারে। পাখি শিকার বন্ধে বন বিভাগ সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কার্যকর উদ্যোগ না থাকায় কোনভাবেই থামছেনা পাখি শিকার। পরিবেশ ও পাখিপ্রেমীসহ স্থানীয়রা পাখি শিকার বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন।

হাওর পাড়ে বসবাসকারী স্থানীয়দের সাথে আলাপকালে জানা যায়, শীতকে সামনে রেখে ইতিমধ্যেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে আসতে শুরু করেছে অতিথি পাখিরা। এসব অতিথি পাখির কলরবে মুখরিত বিলগুলো। হাকালুকি হাওরে অসাধু শিকারিরা বিষটোপ আর ফাঁদ পেতে পাখি শিকার করায় দিন দিন অতিথি পাখির আগমন কমে যাচ্ছে। বিশেষ করে শীতে হাওরে অতিথি পাখি আসার সাথে সাথে পাখি শিকারিরা তৎপর হয়ে উঠেছে। স্থানীয়রা আরোও জানান, প্রতি বছর  শীতপ্রধান দেশ থেকে হাকালুকি হাওরে নানা প্রজাতির পাখি যেমন: গুটি ইগল, বালিহাঁস, ভুতিহাঁস, গিরিয়াহাঁস, ল্যাঞ্জাহাঁস, কাস্তেচরা, কুড়া ইগল, সরালি, পানভুলানি, কালিম, সাদা বক, কানি বক, পানকৌড়ি আসে। বিদেশি পাখির  পাশাপাশি  দেশীয় প্রজাতির নানা জাতের পাখি রয়েছে এ হাকালুকি হাওরে।

সরজমিনে, রোববার (৪ ডিসেম্বর) হাকালুকি হাওরের তুরলবিলে গেলে বিলের পাশের মনিষ রাখাল বেলাগাও গ্রামের মুজিবুর রহমানের বাসায় বস্তা বন্দী বেশ কিছু পাখি পাওয়া যায়। তখন রাখাল মুজিব বাসায় ছিল না। তাকে ডেকে নিয়ে এসে জিজ্ঞেস করলে সে জানায় উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের নয়াগ্রামের নজু মিয়ার ছেলে হোসেন মিয়া বিষটোপ দিয়ে পাখিগুলো ধরে জবাই করে তার বাসায় রাখে। সে আরো জানায়, নাগুরা বিলের ইজারাদার ফয়াজ মিয়া সকালে আরো বেশ কিছু জীবিত পাখি শিকারীর হাত থেকে উদ্ধার করে বিলে ছেড়ে দেয়। পরে সত্যতা যাচাইয়ের জন্য পাখি শিকারি হোসেনের মোবাইলে যোগাযোগ করলে সে পাখি শিকারের বিষয়টি স্বীকার করে। পরে বস্তার ভিতরে থাকা পাখিগুলো স্থানীয় কয়েকজন সহ সাংবাদিকরা মিলে বিলের পাড়ে মাটি চাপা দেন।

পরিবেশকর্মী খোরশেদ আলম বলেন,অবাধে পাখি শিকারের কারণে হাওরে পাখির সংখ্যা দিনে দিনে কমছে। পাখি রক্ষায় জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। পাখি শিকার বন্ধে বনবিভাগের লোকবল সংকটে রয়েছে। অবিলম্বে বনবিভাগের লোকবল সংকটে নিরসন করে শিকার রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।

পাখি শিকারের বিষয়টি স্বীকার করে জুড়ী রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ আলাউদ্দিন  বলেন, লোকবল সংকটে অনেক সময় পাখি শিকারিদের ধরতে আমাদের বেগ পেতে হয়। তবে এ ব্যাপারে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, পাখি শিকার বন্ধে আমাদের প্রধান অন্তরায় লোকবল সংকট। মাঝেমধ্যে আমরা বন্দুক দিয়ে পাখি শিকারের খবর পাই। এ ব্যাপারে  জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি। এরপরও যদি কেউ পাখি শিকার করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

রংপুর হতে ১৯৬ বোতল ফেন্সিডিলসহ ২ নারী মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার র‌্যাব-১৩ হাতে

হাকালুকি হাওরে চলছে অবাধে অতিথি পাখি শিকার; কর্তৃপক্ষ নিরব

আপডেট সময় ১০:৩০:৩৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২২

এশিয়ার সর্ববৃহৎ হাকালুকি হাওরে কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবে অবাধে চলছে পাখি শিকার। পাখি শিকারিরা সবসময় তৎপর থাকলেও যথাযথ কর্তৃপক্ষ রয়েছে অন্ধকারে। পাখি শিকার বন্ধে বন বিভাগ সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কার্যকর উদ্যোগ না থাকায় কোনভাবেই থামছেনা পাখি শিকার। পরিবেশ ও পাখিপ্রেমীসহ স্থানীয়রা পাখি শিকার বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন।

হাওর পাড়ে বসবাসকারী স্থানীয়দের সাথে আলাপকালে জানা যায়, শীতকে সামনে রেখে ইতিমধ্যেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে আসতে শুরু করেছে অতিথি পাখিরা। এসব অতিথি পাখির কলরবে মুখরিত বিলগুলো। হাকালুকি হাওরে অসাধু শিকারিরা বিষটোপ আর ফাঁদ পেতে পাখি শিকার করায় দিন দিন অতিথি পাখির আগমন কমে যাচ্ছে। বিশেষ করে শীতে হাওরে অতিথি পাখি আসার সাথে সাথে পাখি শিকারিরা তৎপর হয়ে উঠেছে। স্থানীয়রা আরোও জানান, প্রতি বছর  শীতপ্রধান দেশ থেকে হাকালুকি হাওরে নানা প্রজাতির পাখি যেমন: গুটি ইগল, বালিহাঁস, ভুতিহাঁস, গিরিয়াহাঁস, ল্যাঞ্জাহাঁস, কাস্তেচরা, কুড়া ইগল, সরালি, পানভুলানি, কালিম, সাদা বক, কানি বক, পানকৌড়ি আসে। বিদেশি পাখির  পাশাপাশি  দেশীয় প্রজাতির নানা জাতের পাখি রয়েছে এ হাকালুকি হাওরে।

সরজমিনে, রোববার (৪ ডিসেম্বর) হাকালুকি হাওরের তুরলবিলে গেলে বিলের পাশের মনিষ রাখাল বেলাগাও গ্রামের মুজিবুর রহমানের বাসায় বস্তা বন্দী বেশ কিছু পাখি পাওয়া যায়। তখন রাখাল মুজিব বাসায় ছিল না। তাকে ডেকে নিয়ে এসে জিজ্ঞেস করলে সে জানায় উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের নয়াগ্রামের নজু মিয়ার ছেলে হোসেন মিয়া বিষটোপ দিয়ে পাখিগুলো ধরে জবাই করে তার বাসায় রাখে। সে আরো জানায়, নাগুরা বিলের ইজারাদার ফয়াজ মিয়া সকালে আরো বেশ কিছু জীবিত পাখি শিকারীর হাত থেকে উদ্ধার করে বিলে ছেড়ে দেয়। পরে সত্যতা যাচাইয়ের জন্য পাখি শিকারি হোসেনের মোবাইলে যোগাযোগ করলে সে পাখি শিকারের বিষয়টি স্বীকার করে। পরে বস্তার ভিতরে থাকা পাখিগুলো স্থানীয় কয়েকজন সহ সাংবাদিকরা মিলে বিলের পাড়ে মাটি চাপা দেন।

পরিবেশকর্মী খোরশেদ আলম বলেন,অবাধে পাখি শিকারের কারণে হাওরে পাখির সংখ্যা দিনে দিনে কমছে। পাখি রক্ষায় জনসাধারণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। পাখি শিকার বন্ধে বনবিভাগের লোকবল সংকটে রয়েছে। অবিলম্বে বনবিভাগের লোকবল সংকটে নিরসন করে শিকার রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।

পাখি শিকারের বিষয়টি স্বীকার করে জুড়ী রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ আলাউদ্দিন  বলেন, লোকবল সংকটে অনেক সময় পাখি শিকারিদের ধরতে আমাদের বেগ পেতে হয়। তবে এ ব্যাপারে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, পাখি শিকার বন্ধে আমাদের প্রধান অন্তরায় লোকবল সংকট। মাঝেমধ্যে আমরা বন্দুক দিয়ে পাখি শিকারের খবর পাই। এ ব্যাপারে  জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছি। এরপরও যদি কেউ পাখি শিকার করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।