চন্দনাইশ উপজেলার সাতবাড়ীয়া ইউনিয়নের যতরকূল গ্রামের মরহুম ছৈয়দ আহমদ চৌধুরী মাষ্টার বাড়ীর মরহুম ছৈয়দ আহমদ চৌধুরী মাষ্টারের মেজ সন্তান মরহুম ইয়াছিন মোঃ মহসিন চৌধুরী। আজ তাঁর ১৪ তম মৃত্যুবার্ষিকী। এ উপলক্ষ্যে মরহুমের বাড়ীতে মিলাদ,কোরান খতম,দোয়া মাহফিল ও তবরুক বিতরণের আয়োজন করা হয়। মরহুম ইয়াছিন মোঃ মহসিন চৌধুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। তিনি প্রচন্ড ধর্মীয় অনুরাগী।
প্রধান শিক্ষক থাকা অবস্থায় ধর্মীয় আকর্ষণে বায়াত গ্রহণ করেন ঢাকা আজিমপুর দায়রা শরীফের গদীনশীন পীর সাহেব শাহসুফি আলহাজ্ব মাওলানা দায়েম উল্লাহ( রঃ) এর হাতে। তাঁহার পীরের সারা বাংলাদেশে ১০০ টির অধিক মাদ্রাসা, মসজিদ,এতিমখানা ও হেফজখানা রয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো দায়েমী কমপ্লেক্সের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। দায়েমী কমপ্লেক্স জাতিসংঘের অধিভূক্ত একটি প্রতিষ্ঠান। বায়াত গ্রহণের পর ইয়াছিন মোঃ মহসিন চৌধুরী ধর্মের প্রতি আরো অনুরাগী হন চাকুরী জীবনের পাশাপাশি স্বীয় পীর সাহেবের সানিধ্য লাভের চেষ্টায় নিজেকে নিয়োজিত রাখেন।
চাকুরী থেকে অবসর গ্রহণের পর স্বীয় পীরের ধর্মীয় শিক্ষা অর্জনের জন্য অনেকটা সাংসারিক জীবনের মায়া মমতা ত্যাগ করে ঢাকায় নিজ পীরের কাছে চলে যান। নিজ পীরের খেদমতে একটানা চৌদ্দ বৎসর নিজেকে নিয়োজিত ধর্মীয় আধ্যাত্নিক শিক্ষার পাশাপাশি নিজ পীরের বিভিন্ন মাদ্রাসা, মসজিদ,এতিমখানা ও হেফজখানা দেখাশোনার দায়িত্ব পালন করেন। এরই মধ্যে চন্দনাইশের সাতবাড়ীয়ায়, মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, মরহুম ছৈয়দ আহমদ চেয়ারম্যান,মরহুম জালাল উদ্দিন, মরহুম মফজল আহমদ,সাদল বড়ুয়া,অধ্যক্ষ নাছির উদ্দীন সহ সাতবাড়ীয়াবাসীকে সাথে নিয়ে সাতবাড়ীয়ায় প্রতিষ্ঠা করেন নিজ পীরের নামে সাতবাড়ীয়া বৈলতলী দায়েমীয়া কলেজ।
পরে অবশ্য এটি ড,কর্ণেল (অবঃ) অলি আহমদ বীর বিক্রম কলেজে রুপান্তরিত হয়। যা এই নামে এখনো বিদ্যমান। নিজ পীরের একান্তে সানিধ্যে চৌদ্দ বছর ধর্মীয় তালিম শেষ করে চাঁন্দগাও বাহির সিগন্যাল বারীয়া দরবার পীর সাহেব শাহসুফী হযরত হাফেজ মাওলানা আবদুল বারেক (রঃ) প্রকাশ বারী শাহ( রঃ) এর ইচ্ছা অনুযায়ী নিজ পীরের এজাজত নিয়ে ধর্মীয় আরো তালিম নেওয়ার মানসে হযরত বারী শাহ (রঃ) খেদমতে নিজেকে নিয়োজিত করেন। হযরত বারী শাহ (রঃ) এর কাছ থেকে একটানা ১০ বৎসর ধর্মীয় তালিম শেষ করে ধর্মীয় আধ্যাত্নিক জগতে নিজেকে নিয়োজিত করেন। তিনি নিজ এলাকা ছাড়া ও শেরপুর, কুমিল্লা,নিমসার,গুনবতী চৌদ্দগ্রাম,কনখৈপাত,লামা
আলীকদম, নাইক্ষ্যংছড়ি,বান্দরবান সহ বিভিন্ন জায়গায় মসজিদ,মাদ্রাসা, এতিমখানা ও হেফজখানা নির্মাণে নিজেকে নিয়োজিত রাখেন। এমনকি তিনি পটিয়া হযরত শাহচান্দ আউলিয়া এতিমখানা ও হেফজখানা নির্মাণে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেন। তাঁহার অনেক ভক্ত, মুরিদান বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে। এমন জনশ্রুতি রয়েছে তাঁহার চাকুরীজীবনের অবসরকালীন সরকার থেকে প্রাপ্ত সমুদয় টাকা তিনি দেশের বিভিন্ন জায়গায় ধর্মীয় মসজিদ , মাদ্রাসা নির্মাণে অকাতরে দান করে দিয়ছেন। তিনি তিন পুত্র ও এক কন্যা সন্তানের জনক। তাঁহার পুৃত্রদ্বয় ও কন্যা আজ স্ব- স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত।
এই নিভৃতচাড়ী ধর্নীয় আধ্যাত্নিক সাধক মরহুম ইয়াছিন মোঃ মহসিন চৌধুরীর ১৪ তম মৃত্যুবার্ষিকীতে মরহুম কে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি। হে মহান আল্লাহ পাক এই নিভৃতচারী মরহুম ইয়াছিন মোঃ মহসিন চৌধুরীর সমস্ত গুনাহ মাফ করে দিয়ে তাঁকে জান্নাতুল ফেরদৌসের সর্বোচ্চ মাকাম দান করুন আমিন।