শীর্ষ চোরাকারবারি, ওসি-ইউএনও এর চাঁদার টাকায় প্রেসক্লাবে ঝুলছে এসি। তাও আবার জৈন্তাপুর প্রেসক্লাব অফিসে। সম্প্রতি বিভিন্ন মহলে এনিয়ে চলছে গুঞ্জন। একজন কথিত সংবাদকর্মী নুরুলের তত্তাবধানে চোরাকারবারীদের সুযোগ করে দিতে এই সমারোহ আয়োজন। এর আগেও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে মসজিদ কমিটিরি টাকা আত্মসাতের।বিষয়টি মোকদ্দমা পর্যন্ত্য দাঁড়ায়। এতে মুলধারার সাংবাদিকরা চরম বিপাকে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চোরাকারবারি সিন্ডিকেট এর সাথে গভীর সখ্যতা গড়ে তোলেছেন এই হলুদ সাংবাদিক নুরুল। সেই সুবাধে দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্ন ধরণের অনৈতিক সুবিধা হাতিয়ে নিয়ে নিজেকে বিশাল তবিয়তে রেখেছেন।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, ৫নং ফতেহপুর ইউনিয়নের গোয়েন্দা তালিকাভুক্ত একজন শীর্ষ চোরাকারবারীর সঙ্গে গোপনে আঁতাত করেন নুরুল। তিনি শর্ত দেন কোন ধরণের চোরাকারবারি সংক্রান্ত সংবাদ পত্র-পত্রিকায় প্রকাশ করবেন না। সেই শর্তে আবদ্ধ হয়ে এসি লাগানোর কথা বলে প্রেসক্লাবের নাম ভাঙ্গিয়ে হাতিয়ে নেন প্রায় ৮০ হাজার টাকা। একপর্যায় সেখান থেকে ৪০ হাজার টাকা নিজ পকেটে রেখে বাকি টাকা যোগার করতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে। এতে যুক্ত হোন জৈন্তাপুর মডেল থানার সাবেক চাঁদাবাজ ওসি তাজুল ইসলাম ও ৩৪ বিসিএস ক্যাডার ইউএনও উম্মে সালিক রুমাইয়া। সিদ্ধান্ত নেয়া হয় কিস্তিতে সেই এসি’র টাকা পরিশোধ করার। কিন্তু ওসি তাজুল বদলির পরে কিস্তি পরিশোধের দায়িত্ব নেন নবাগত ওসি আবুল বাসার মোহাম্মদ বদরুজ্জামান। একই শর্ত মেনে চোরাকারবারীদের সাহস যুগিয়ে তাল মিলিয়ে একযোগে কাজ করছেন তারা। তাদের সঙ্গ ছাড়া কেউ সংবাদ প্রকাশ করতে গেলে হামলা-মামালার শিকার হন। উল্টো সংবাদকর্মীদের হয়রানি করতে কোন বিশেষ বাহিনী দ্বারা কখনও চোরাই মালামাল আটকের সোর্স, মাদক দিয়ে চালান ও ডিজিটাল তথ্য প্রযুক্তি আইন প্রয়োগ করে জিম্মি রাখার অপচেষ্টা করা হয়। অনেক সময় চোরাকারবারীদের দিয়ে সাংবাদিকদের অপহরণ করিয়ে নিয়ে শারিরীক-মানসিক নির্যাতন করা হয়। ৫ আগষ্টের পরে এসেও যেই লাউ সেই কদু নীতিতে অটল এই সিন্ডিকেট গোষ্টি।
এদিকে অনুসন্ধানে জানা গেছে, জৈন্তাপুর উপজেলা প্রেসক্লাবে একটি গুরুত্বপুর্ন পদ ভাগিয়ে নিয়ে নিজেকে বিশাল তবিয়তে রেখেছেন নুরুল ইসলাম। কোন সংবাদকর্মীর উপরে হামলা-মামলা হলে তিনি সঠিক কোন তদারকি করার দুরের কথা নিজেকে আরও আড়াল করে রাখেন। গোপনে চেষ্টা চালান নিষ্পত্তির। এতে অন্যান্য সহযোগী সংবাদকর্মীরাও চরম বিপাকে।
সরেজমিন অনুসন্ধানকালে জানা যায়, জৈন্তাপুর উপজেলার ভেতরে চোরাকারবারি, বালু-পাথর খেকো চক্রের প্রত্যেক স্থান থেকেই প্রকার ভেদ অনুযায়ী দৈনিক, সাপ্তাহিক ও মাসোহারা চাঁদা হাতিয়ে নেয় এই হলুদ চক্রটি। উপজেলা প্রশাসন লোক দেখানো অভিযান চালালেও দিন-রাত সিলেট-তামাবিল হাইওয়ে রোড ব্যস্থ থাকে এসব পণ্য পাচারে। যদিও সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশ ডিবি এনিয়ে কাজ করলেও অদৃশ্য কারনে টনক নড়ছেনা জেলা পুলিশের আওতায় থাকা জৈন্তাপুর মডেল থানা পুলিশের। বরং এসকল পাচার হওয়া মালামাল প্রতিনিয়ত আটকা পড়ছে শাহপরাণ (রহঃ) থানা পুলিশ ও মেট্রোপলিটন গেয়েন্দা পুলিশ ডিবি’র হাতে। কখনও আবার সেনাবাহিনীর অভিযানের কবলে আটকা পড়তে দেখা যাচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জৈন্তাপুর উপজেলায় কর্মরত একাধিক সংবাদকর্মী প্রতিবেদক’কে জানিয়েছেন, প্রায় রাতেই গোপন বৈঠক ছাড়েন ওসি আবুল বাসার ও নুরুল। এছাড়া সবচেয়ে বেশি চাঁদা উত্তোলন করেন ভারতীয় গরু-মহিষ থেকে। সাংবাদিক পরিচয়ে গাড়ি প্রতি হাতিয়ে নেন দুই হাজার টাকা ও পুলিশ হাতিয়ে নেয় ৫ হাজার টাকা। এর ঘাটি হিসেবে ব্যবহার করা হয় জৈন্তাপুর বাজার।
সূত্রটি আরও জানায়, সাংবাদিক নাজমুল হুমকির সম্মূখিন হলে কলম বিরতি সভা পন্ড করতে ওসি আবুল বাসার চাঁদাবাজদের পক্ষ নিয়ে বারকি শ্রমিকদের উস্কানি দিয়ে তাদের ব্যবহার করে উল্টো একটি মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের অপচেষ্টা চালায়। পরবর্তীতে পরিস্থিতি ঘোলাটে হলে সে পিছপা হয়।
এবিষয়ে জানতে নুরুল ইসলামের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ফোন রিসিভ করে প্রতিবেদকের প্রশ্নের জবাব না দিয়ে বলেন, পরে কথা বলছি বলেই সংযোগ কেটে দেন। ওসি আবুল বাসারের মুঠোফোনে আলাপের চেষ্টা করলে তার মুঠোফোন রিসিভ হয়নি।
উপরোক্ত ব্যাপারে ইউএনও উম্মে সালিক রুমাইয়ার সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, এবিষয়ে আমি কিছু জানিনা। তবে তিনি বদলির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।