বিদেশী পিস্তল ও ৭ রাউন্ড গুলিসহ হত্যা, ডাকাতি, মাদক ও ধর্ষণসহ ২৭ মামলার আসামী জাকির হাওলাদারকে (৩৫) স্থানীয়রা গণ ধোলাই দিয়ে আটক করেছে।
এ সময় সন্ত্রাসী জাকির হাওলাদার তার ফুফাতো ভাই সগির হাওলাদারকে (২৮) গুলি করেছে। এতে তার শরীরে দুটি গুলি বিদ্ধ হয়েছে।আহত সগিরকে স্বজনরা উদ্ধার করে তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। খবর পেয়ে তালতলী থানার ওসি মোঃ কালাম খাঁন তাকে গ্রেপ্তার করেছেন।
ঘটনা ঘটেছে সোমবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে তালতলী উপজেলার বড়পাড়া গ্রামে। জানাগেছে, তালতলী উপজেলার পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়নের বড়পাড়া গ্রামের ময়জদ্দিন হাওলাদারের ছেলে জাকির হাওলাদার দীর্ঘদিন ঢাকায় বসবাস করছিল। ঢাকায় হত্যা, ডাকাতি, মাদক ও ধর্ষণসহ নানাবিধ অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পরেন তিনি। তার বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতি, মাদক ও ধর্ষণসহ ২৭ টি মামলা রয়েছে। গত ৫ আগষ্ট শেষ হাসিনার পতনের পর জাকির হাওলাদার এলাকায় ফিরে আসে।
স্থানীয়দের অভিযোগ জাকির এলাকায় এসে মাদক ব্যবসা শুরু করে। এ নিয়ে স্থানীয়রা বেশ কয়েকবার প্রতিবাদ করলে সন্ত্রাসী জাকির তাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয় এবং প্রকাশ্যে পিস্তল উচিয়ে হত্যার হুমকি দেয় এমন অভিযোগ কবির হাওলাদারসহ এলাকার একাধিক মানুষের।
সোমবার সকালে সন্ত্রাসী জাকির হাওলাদার বড়পাড়া গ্রামে মাদক বিক্রি করছিল। এমন সময় তার ফুফুতো ভাই সগির হাওলাদার তাকে বাঁধা দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সন্ত্রাসী জাকির হাওলাদার তার ওপর পিস্তল দিয়ে গুলি চালায়। এতে সগির হাওলাদারের রানে ও পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়।
পরে স্থানীয়রা সন্ত্রাসী জাকিরকে গণধোলাই দিয়ে আটক করে। খবর পেয়ে তালতলী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে সন্ত্রাসী জাকির হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করে। পরে তার সঙ্গে থাকা বিদেশী পিস্তল ও সাত রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। আহত সগির হাওলাদারকে স্বজনরা উদ্ধার করে তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। অপর দিকে আহত সন্ত্রাসী জাকির হাওলাদারকে পুলিশ হেফাজতে তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়।
ওই হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরন করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন বলেন, জাকির হাওলাদার এলাকায় এসে মাদক বিক্রি করছিল। তাকে বাঁধা দেয়ায় তিনি প্রকাশ্যে পিস্তল উচিয়ে এলাকাবাসীকে ভয়ভীতি প্রদর্শণ করে। তার অব্যাহত হুমকিতে এলাকাবাসি অতিষ্ঠ ছিল। সন্ত্রাসী জাকিরের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি দাবী করেছেন তারা।
আহত সগির হাওলাদার বলেন, হত্যা, ডাকাতি, ধর্ষণ ও মাদকসহ একাধিক মামলার আসামী জাকির হাওলাদার গত ৫ আগষ্টের পরে এলাকায় এসে মাদক ব্যবসা শুরু করে। এতে এলাকাবাসী বাঁধা দেয়। এতে সন্ত্রাসী জাকির ক্ষিপ্ত হয়ে এলাকাবাসীকে প্রকাশ্যে পিস্তল দিয়ে গুলির হুমকি দেয়। সোমবার সকালে জাকির প্রকাশ্যে রাস্তায় মাদক বিক্রি করছিল। এমন সময় আমি তাকে বাঁধা দেই।
এতে আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে পিস্তল দিয়ে গুলি চালায়। দুটি গুলি আমার রানে ও পায়ে বিদ্ধ হয়। পরে স্থানীয় জনতা তাকে গণধোলাই দিয়ে আটক করে। তিনি আরো বলেন, জাকির এলাকায় প্রকাশ্যে পিস্তল নিয়ে চলাফেরা করতো।
তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ একেএম মনিরুল ইসলাম বলেন, আহত দুইজনকে যথাযথ চিকিৎসা দিয়েছি। এর মধ্যে জাকির নামের একজনকে পুলিশ হেফাজতে উন্নতচিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
তালতলী থানার ওসি মোঃ ইমরান আলম বলেন,খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে জনতার হাতে ধৃত সন্ত্রাসী জাকির হাওলাদারকে বিদেশী পিস্তল, সাত রাউন্ড গুলিসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, সন্ত্রাসী জাকিরের বিরুদ্ধে ঢাকায় হত্যা, ডাকাতি, মাদক ও ধর্ষণসহ ২৭ টি মামলা রয়েছে। তাকে পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।