ঢাকা ০৬:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জুলাই আন্দোলনে চোখ হারানো সাইদুলকে তালাক দিয়ে চলে গেছেন স্ত্রী

জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলির স্প্লিন্টারে চোখ হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন পটুয়াখালীর দশমিনার যুবক মো. সাইদুল ইসলাম। তিনি উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া গ্রামের মোহাম্মদ মৃধার ছেলে। চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে সাইদুল সবার বড়। এদিকে আন্দোলনে আহত মানবেতর জীবনযাপন করা সাইদুলকে দুদিন আগে তালাক দিয়ে চলে গেছেন স্ত্রী। শরীরে অসংখ্য স্প্লিন্টার আর চোখ হারিয়ে চিকিৎসাবিহীন দিন কাটছে বর্তমান বেকার যুবক সাইদুলের। অভাব-অনটন পিছু ছাড়ছে না এই যুবকের।

শনিবার দুপুরে সাইদুল যুগান্তরকে জানান, তিনি অনেক কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। তার এই খারাপ মুহুর্তে দুদিন আগে তার স্ত্রী পান্না আক্তার তাকে তালাক দিয়ে দেড় বছরের একমাত্র মেয়ে সুমাইয়াকে নিয়ে চলে গেছেন। বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করার পরেও এখন পর্যন্ত তিনি কোনো আর্থিক সহায়তা পাননি।

অভাবের সংসারে বেশিদূর পড়াশোনা না করতে পারা সাইদুল ঢাকায় ব্যাটারিচালত অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। সরকারি সহায়তার দাবি করে তিনি জানান, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতন আন্দোলনে সামিল হন তিনি। ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে অবস্থানের সময় চোখে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে প্রায় অর্ধশতাধিক স্প্লিন্টার বিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। ওই সময় আন্দোলনে উপস্থিত শিক্ষার্থী ও জনতা তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। ঢাকা মেডিকেলে এক সপ্তাহ ভর্তি থাকার সময় তার চোখে ও শরীরের বিভিন্ন জায়গা থেকে স্প্লিন্টার বের করা হয়।

তিনি আরও জানান, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালেও ভর্তি হয়ে এক সপ্তাহ চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখানে তার চোখে অপারেশন করা হয়। স্প্লিন্টারের আঘাতে তার বাম চোখ সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে।

সাইদুল ইসলাম জানান, এখনো তিনি চোখে দুটি ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে স্প্লিন্টার বহন করে চলছেন। মা-বাবা সঙ্গে বর্তমানে বেকার অবস্থায় মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন।

ইউএনও ইরতিজা হাসান বলেন, সাইদুল আবেদন করলে সমাজসেবার মাধ্যমে সহায়তা করা হবে। এছাড়া জেলা প্রশাসকের মাধ্যমেও সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

জুলাই আন্দোলনে চোখ হারানো সাইদুলকে তালাক দিয়ে চলে গেছেন স্ত্রী

আপডেট সময় ০৪:০৭:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪

জুলাইয়ের ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলির স্প্লিন্টারে চোখ হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন পটুয়াখালীর দশমিনার যুবক মো. সাইদুল ইসলাম। তিনি উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া গ্রামের মোহাম্মদ মৃধার ছেলে। চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে সাইদুল সবার বড়। এদিকে আন্দোলনে আহত মানবেতর জীবনযাপন করা সাইদুলকে দুদিন আগে তালাক দিয়ে চলে গেছেন স্ত্রী। শরীরে অসংখ্য স্প্লিন্টার আর চোখ হারিয়ে চিকিৎসাবিহীন দিন কাটছে বর্তমান বেকার যুবক সাইদুলের। অভাব-অনটন পিছু ছাড়ছে না এই যুবকের।

শনিবার দুপুরে সাইদুল যুগান্তরকে জানান, তিনি অনেক কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। তার এই খারাপ মুহুর্তে দুদিন আগে তার স্ত্রী পান্না আক্তার তাকে তালাক দিয়ে দেড় বছরের একমাত্র মেয়ে সুমাইয়াকে নিয়ে চলে গেছেন। বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করার পরেও এখন পর্যন্ত তিনি কোনো আর্থিক সহায়তা পাননি।

অভাবের সংসারে বেশিদূর পড়াশোনা না করতে পারা সাইদুল ঢাকায় ব্যাটারিচালত অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। সরকারি সহায়তার দাবি করে তিনি জানান, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতন আন্দোলনে সামিল হন তিনি। ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে অবস্থানের সময় চোখে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে প্রায় অর্ধশতাধিক স্প্লিন্টার বিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। ওই সময় আন্দোলনে উপস্থিত শিক্ষার্থী ও জনতা তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। ঢাকা মেডিকেলে এক সপ্তাহ ভর্তি থাকার সময় তার চোখে ও শরীরের বিভিন্ন জায়গা থেকে স্প্লিন্টার বের করা হয়।

তিনি আরও জানান, জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালেও ভর্তি হয়ে এক সপ্তাহ চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখানে তার চোখে অপারেশন করা হয়। স্প্লিন্টারের আঘাতে তার বাম চোখ সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে।

সাইদুল ইসলাম জানান, এখনো তিনি চোখে দুটি ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে স্প্লিন্টার বহন করে চলছেন। মা-বাবা সঙ্গে বর্তমানে বেকার অবস্থায় মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন।

ইউএনও ইরতিজা হাসান বলেন, সাইদুল আবেদন করলে সমাজসেবার মাধ্যমে সহায়তা করা হবে। এছাড়া জেলা প্রশাসকের মাধ্যমেও সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।