দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়েশিয়ার সংসদের সাধারণ নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি কোনো জোট। এতে ঝুলে গেল সংসদের ভাগ্য। দেশটিতে এখন কোন দল বা জোট সরকার গঠন করবে সেটি জানতে সাধারণ ভোটারদের আরও কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে। খবর রয়টার্সের।
মালয়েশিয়ার ইতিহাসে এর আগে কখনো সংসদ নির্বাচনের ভাগ্য ঝুলে যায়নি। মূলত একটি ইসলামিক দলের উত্থানের কারণে বড় জোটগুলো একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারেনি।
দীর্ঘ দিনের বিরোধী দলীয় নেতা আনোয়ার ইব্রাহিমের নেতৃত্বাধীন প্রধান বিরোধী দলীয় জোট পাকাতান হারাপান শনিবারের নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছে। অন্যদিকে নির্বাচনে সবচেয়ে বড় চমক দেখিয়েছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী মুহিউদ্দিন ইয়াসিনের জোট পেরিকাতান ন্যাশনাল ব্লক। তার জোটের নির্বাচনী প্রার্থীরা বর্তমান সরকারের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত কয়েকটি আসনে জয় তুলে নিয়েছেন।
মুহিউদ্দিন ইয়াসিনের জোটে রয়েছে একটি মালয়-কেন্দ্রীক রক্ষণশীল দল এবং একটি ইসলামিক দল। এ দলটি মালয়েশিয়ায় শরিয়া আইন চালুর দাবিতে কাজ করে থাকে। মালয়েশিয়ায় মুসলিম জাতিগত-মালয়দের সংখ্যা বেশি। অন্যদিকে জাতিগত চাইনিজ এবং ভারতীয়রা সংখ্যালঘু।
মালয়েশিয়ার নির্বাচন কমিশনের দেওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী এবার ২২২টি আসনের মধ্যে ২২০টি আসনে ভোট হয়েছে। এরমধ্যে আনোয়ারের জোট সর্বোচ্চ ৮২টি আসন পেয়েছে। অন্যদিকে মুহিউদ্দিনের জোট পেয়েছে ৭৩ আসন। আর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ইসমাইল ইয়াকুবের জোট বারিসন পেয়েছে মাত্র ৩০ আসন। মালয়েশিয়ার স্বাধীনতার পর ৬০ বছর সরকার পরিচালনা করা দলটির জন্য যা বড় ধরনের ধাক্কা।
এদিকে নির্বাচনে কোনো জোট এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ার বিষয়টি মালয়েশিয়ার বর্তমান ধীরগতির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির আরও ক্ষতি এবং মুদ্রাস্ফীতি আরও বৃদ্ধি করবে।
এখন বড় জোটগুলো একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় তাদের নিজেদের মধ্যে জোট গঠন করে সরকার গঠন করতে হবে। এছাড়া মালয়েশিয়ার রাজাও হস্তক্ষেপ করতে পারেন। যে কোনো আইনপ্রণেতাকে প্রধানমন্ত্রী বানানোর এখতিয়ার রাজার আছে।
শনিবারের নির্বাচনে রেকর্ড সংখ্যক ভোটার ভোট প্রদান করেন। বিশেষজ্ঞদের মতে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা থেকে মুক্তি পাওয়ার আকাঙ্খা থেকে ভোটার উপস্থিতি বেশি ছিল।