ভারতের সরকারি মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর কয়েক দশকের আধিপত্যের অবসান ঘটিয়ে মহাকাশে পাড়ি দিল দেশটির প্রথম বেসরকারিভাবে নির্মিত রকেট বিক্রম-এস। শুক্রবার সকালের দিকে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র থেকে সফলভাবে উড্ডয়ন করেছে এই রকেট।
দেশটির সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বলেছে, ভারতের মহাকাশ ব্যবস্থাপনায় বেসরকারি খাতের অগ্রযাত্রার সূচনা হলো এই রকেট উৎক্ষেপণের মাধ্যমে। গত কয়েক দশক ধরে ভারতের রাষ্ট্রীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর আধিপত্য ছিল এই খাতে।
হায়দরাবাদের চার বছর বয়সী বেসরকারি স্টার্টআপ সংস্থা স্কাইরুট অ্যারোস্পেস তৈরি করেছে রকেট বিক্রম-এস। ইসরো এবং ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল স্পেস প্রমোশন অ্যান্ড অথোরাইজেশন সেন্টারের (ইন-স্পেস ই) সহায়তায় রকেটটি উৎক্ষেপণ করা হয়েছে।
ইসরো এবং ইন-স্পেস ইকে অভিনন্দন জানিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, বিক্রম-এসের উৎক্ষেপণ ভারতের বেসরকারি মহাকাশ শিল্পের যাত্রায় এক ‘গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক’।
রকেটটি অন্ধ্র প্রদেশভিত্তিক এন স্পেস টেক ইন্ডিয়া, চেন্নাইয়ের স্টার্টআপ স্পেস কিডস এবং আর্মেনীয় বাজুমকিউ স্পেস রিসার্চ ল্যাবের নির্মিত তিনটি পেলোড নিয়ে গেছে।
স্কাইরুট অ্যারোস্পেস ফ্লাইটের একটি ইউটিউব লিঙ্ক যুক্ত করে বলেছে, উৎক্ষেপণের পর ৮৯ দশমিক ৫ কিলোমিটার উচ্চতায় পৌঁছায় বিক্রম-এস এবং মহাকাশ যাত্রার সব মানদণ্ড পূরণ করেছে।
স্কাইরুট অ্যারোস্পেসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা পবন কুমার চন্দনা বলেছেন, ‘আমরা আজ ভারতের প্রথম বেসরকারি রকেট উৎক্ষেপণের মাধ্যমে ইতিহাস রচনা করেছি। এটি নতুন ভারতের প্রতীক এবং মহান এক ভবিষ্যতের সূচনা মাত্র।’
বেসরকারি উদ্যোগের এই উৎক্ষেপণ ভবিষ্যতে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে উল্লেখ করে সংস্থাটির আরেক সহ-প্রতিষ্ঠাতা ভরথ ডাকা বলেছেন, প্রথম উৎক্ষেপণ আমাদের প্রযুক্তি প্রমাণ করেছে। এবারের উৎক্ষেপণের মূল বিষয় ছিল মানদণ্ড পূরণ। আমরা বিনিয়োগকারীদের কাছে আমাদের সক্ষমতা প্রমাণ করতে সক্ষম হব।
দুই বছরের রেকর্ড সময়ের মধ্যে ২০০ ইঞ্জিনিয়ারের একটি দল তৈরি করেছে রকেট বিক্রম-এস। ৫৪৫ কেজি ওজন আর ৬ মিটার দৈর্ঘ্য ও শূন্য দশমিক ৩৭৫ মিটার ব্যাসের বিক্রম-এস বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটেও সবচেয়ে সাশ্রয়ী মূল্যের রকেটগুলোর একটি।
ইন-স্পেস ইর চেয়ারম্যান পবন গোয়েনকা এনডিটিভিকে বলেছেন, দেশের অন্তত দেড়শ’ স্টার্ট-আপ মহাকাশ খাতে আগ্রহ দেখিয়েছে। ১৫০টি স্টার্ট-আপ মহাকাশ অভিযানের জন্য আবেদনপত্র পাঠিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত আমরা পাঁচটি স্টার্ট-আপকে অনুমোদন দিয়েছি।