ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ডিজিটাল শিল্প বিপ্লব বিদ্যমান শিক্ষাব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। বর্তমানে মানবসভ্যতা একটি নতুন যুগে প্রবেশ করেছে। চতুর্থ নয় বরং পঞ্চম শিল্প বিপ্লবের উপযোগী শিক্ষা ব্যবস্থার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার, একাডেমিয়া ইন্ডাস্ট্রিজ ও প্রযুক্তিবিদদের সমন্বিত উদ্যোগে এগিয়ে আসতে হবে।
মঙ্গলবার (১৫ নভেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে ‘অ্যাসোসিয়েশন অব ইউনিভার্সিটিজ অব এশিয়া প্যাসিফিকের (এইউএপি) ১৫তম সাধারণ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লব যুগে তথ্য প্রযুক্তি এবং গুণগত শিক্ষার মধ্যে সমন্বয়’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলসহ বিশ্বের ১০টি দেশের ৩২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাবিদরা এই সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, বিশ্বে লাগসই শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলতে সংশ্লিষ্টদের অগ্রণী ভূমিকা গ্রহণ করতে হবে। ইউরোপিয়ানরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের কথা বলে। সেটি একটি যান্ত্রিক বিপ্লব। তাদের জনবল নেই, তাই তারা যন্ত্র দিয়ে জনবলের অভাব পূরণ করতে চায়। আমরা যন্ত্র চাই, তবে মানুষকে বাদ দিয়ে নয়। আমরা তাই পঞ্চম শিল্প বিপ্লবের পথে হাঁটছি।
তিনি বলেন, আগামী দিনের পৃথিবীর জন্য উপযোগী শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলতে বিশ্বের শিক্ষানেতাদের ভূমিকা অপরিসীম। এই অঞ্চলের মানুষের মেধা ও উদ্ভাবনী শক্তি তুলনাহীন। তাদের যথাযথ পরিচর্যা করতে পারলে প্রযুক্তির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সহজ হবে। ড্রাইভারবিহীন গাড়ি ও কর্মী ছাড়া গার্মেন্টস পরিচালনা করা পশ্চিমা দুনিয়ার জন্য আবশ্যক মনে হতে পারে। কিন্তু আমাদের এই অঞ্চলের মানুষের জন্য হবে অমানবিক। ২০১৮ সালের পর পঞ্চম শিল্প বিপ্লব ধারণাটি বিশ্বে সমাদৃত হয়ে উঠেছে। যেখানে জাপানের সোস্যাইটি ফাইভ পয়েন্ট জিরো যন্ত্র ও মানুষের সমন্বয়ে সমন্বিত হওয়ায় সেটা মানবিক বলে বিবেচিত হচ্ছে।
তিনি মোস্তাফা জব্বার বলেন, ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ধারণাটি প্রকাশের ৮ বছর আগে ডিজিটাল বাংলাদেশের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত এ কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ আজ বিশ্বে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। করোনাকালে প্রত্যন্ত গ্রামে বসেও শিক্ষার্থীরা অনলাইনে শিক্ষাগ্রহণ করেছে। ডিজিটাল কর্মসূচির মাধ্যমে মানুষের অচল জীবনযাত্রা সচল রাখা সম্ভব। শিক্ষায় ডিজিটাল রূপান্তরে গৃহীত ব্ল্যান্ডিং এডুকেশনসহ দেশে পঞ্চম শিল্পযুগের উপযোগী শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলতে সরকার কাজ করছে।
এইউএপির সভাপতি ড. পিটার লি লওরেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তা প্রদান করেন শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন ভারতের কলিঙ্গ ইনস্টিটিউট অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল সায়েন্সের প্রতিষ্ঠাতা ও ভারতীয় লোকসভার সদস্য প্রফেসর ড. অচৎ সামন্ত, এইউএপির প্রথম সহ-সভাপতি ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান ও এইউএপির মহাসচিব প্রফেসর ড. রিকার্ডো পি পামাসহ আরও অনেকে। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েসন অব ইউনিভার্সিটি প্রেসিডেন্টস ড. ফার্নান্দো লিয়েন গ্রেসিয়া।