বহু বছর ধরে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের অজুহাতে সিরিয়ায় সামরিক উপস্থিতি বজায় রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে মার্কিন সরকার বিরতিহীনভাবে দেশটির বিভিন্ন সম্পদ লুট করে চলেছে বলে অভিযোগ করেছে ইরান। সেই সঙ্গে সিরিয়া থেকে শিগগিরই মার্কিন সেনাদের কোনো শর্ত ছাড়াই প্রত্যাহারের ওপর জোর দিয়েছে দেশটি।
জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের স্থায়ী প্রতিনিধি আমির সায়িদ ইরাভানি মঙ্গলবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের এক অধিবেশনে সিরিয়া থেকে শিগগিরই ও বিনাশর্তে সব মার্কিন সেনা সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। সিরিয়ায় শান্তি প্রতিষ্ঠা ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য বিষয়টি জরুরি বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
ইরাভানি বলেছেন, মার্কিনিরা সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে লড়াইয়ের পরিবর্তে ‘জিবহাতুন নুসরার’ মতো সন্ত্রাসী গ্রুপগুলোকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে এবং সিরিয়ার জনগণের তেল ও অন্যান্য সম্পদ লুট করছে।
যুক্তরাষ্ট্র সরকারসহ কোনো কোনো পশ্চিমা সরকার সিরিয়ায় সংঘাতগুলো দীর্ঘ করার জন্য দায়ী মন্তব্য করে ইরানের এই কূটনীতিক বলেছেন, কারণ এই সরকারগুলো সিরিয়ার জনগণের ওপর তাদের ইচ্ছা চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে।
তিনি সিরিয়ার সার্বভৌমত্ব, রাজনৈতিক স্বাধীনতা, ঐক্য ও ভৌগলিক অখণ্ডতা রক্ষা করাকে সবার দায়িত্ব হিসেবে জোর দিয়ে বলেছেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই, বিদেশিদের দখলদারিত্ব এবং অবৈধ নিষেধাজ্ঞা থেকে উদ্ভূত অর্থনৈতিক সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামে সিরিয়ার জনগণকে পরিত্যাগ করা আন্তর্জাতিক সমাজের উচিত নয়।
সিরিয়ায় অবৈধভাবে অবস্থানরত সব বিদেশি সেনার দেশটির ভূখণ্ড থেকে প্রত্যাহারের ওপর জোর দিয়ে ইরাভানি বলেছেন, ইরান সিরিয়ার সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে ইসরাইলের অব্যাহত আগ্রাসন এবং সেখানকার বেসামরিক জনগণের ওপর ও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোগুলোর ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে। ইরান সিরিয়ার সংকটের রাজনৈতিক সমাধানের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের স্থায়ী দূত আরও বলেছেন, রাজনৈতিক প্রক্রিয়া ছাড়াও সিরিয়ার পুনর্গঠন ও বিদেশ থেকে সিরিয় শরণার্থীদের নিরাপদে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন এবং ঘরোয়া পর্যায়ে শরণার্থী হওয়া সিরিয়দের নিজ নিজ অঞ্চলে পুনর্বাসনের মতো ক্ষেত্রগুলোতে আন্তর্জাতিক সহায়তার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকা জরুরি।