ঢাকা ০৭:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
কাজাখস্তানে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ভিডিও চট্টগ্রাম বন্দরের টেন্ডারবিহীন চুক্তি বাতিল চেয়ে আইনি নোটিশ নাটোরের জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন বড়দিন উপলক্ষে জোনাইল পারর্বণী মিশন পরিদর্শন করেন। কর্মঘণ্টা বাড়তে পারে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জাতীয় পতাকা খামচে ধরেছে, সেই পুরনো শকুন জামায়াত-শিবির, রংপুরে অধ্যক্ষ চুনারুঘাটে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে কৃষি জমির মাটি কাটার মহোৎসব জিন্নাতুন নেছা দারুন জান্নাত মহিলা ক্বাওমি মাদ্রাসায় হিফজের ছবক প্রদান অনুষ্ঠান। গোয়াইনঘাটে ইউএনও’র উদ্যোগে পরিবেশ রক্ষায় দেয়ালে দেয়ালে শোভা পাচ্ছে প্রকৃতির দৃশ্য সি আই পি মর্যাদা পেলেন প্রবাসী রেমিট্যান্স যুদ্ধা মোঃ আনসারুল হক (আনসার) যুগপৎ আন্দোলনের ইঙ্গিত বিএনপির

২০ বছরের সাধনায় বিশাল অনুর্বর ভূমিকে বানালেন বন

মানুষ চাইলে কিনা পারে? এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ ভারতের মণিপুর রাজ্যের ইম্ফলের ৪৭ বছর বয়সী বাসিন্দা মইরাংথেম লইয়া। যিনি নিজের প্রবল ইচ্ছাশক্তির মাধ্যমে বিস্তৃত অনুর্বর জমির একটি অংশকে পরিণত করেছেন ৩০০ একরের বিশালাকৃতির এক বনে।

তবে দুই-একদিনে নয়। ৩০০ একরের বন তৈরি করতে তার সময় লেগেছে দীর্ঘ ২০ বছর। এ সময়টায় নির্দিষ্ট ওই জমিতে বিভিন্ন জাতের গাছ লাগিয়েছেন মইরাংথেম লইয়া নামের সেই প্রকৃতিপ্রেমী। তার বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি এখনো চলমান আছে।

ছোটকাল থেকেই প্রকৃতির প্রতি আলাদা ভালোবাসা ছিল মইরাংথেমের। অনুর্বর জমিতে গাছ লাগানোর শুরুর গল্পটা তিনি শুনিয়েছেন সংবাদসংস্থা পিটিআইকে। তিনি বলেন, ‘২০০০ সালের শুরুতে, চেন্নাই থেকে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে আমি কাউব্রু পাহাড়ে যাই। বন উজাড়ের মাত্রা এবং গাছপালার পরিমাণ কম দেখে আমি স্তম্ভিত হয়ে যাই। তখন প্রকৃতিকে কিছু ফিরিয়ে দিতে নিজের ভেতর একটি শক্তিশালী অনুভুতি অনুভব করি।’

এই অনুভব থেকেই রাজধানী ইম্ফলের বন মারু লাংগোলে যান তিনি। সেখানেই খুঁজে পান সেই অনুর্বর জমি। তিনি বলেন, ‘পাহাড়ে চড়ার সময় হঠাৎ করে স্থানটির সন্ধান পাই, যেটি অনুর্বর ছিল এবং তাৎক্ষণিকভাবে আমার মনে হয় বৃক্ষরোপণ, ধৈর্য্য এবং পরিশ্রমের মাধ্যমে এ স্থানটিকে সবুজ ও ঘন বনে পরিণত করা সম্ভব।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই স্থানটি ছয় বছরের জন্য আমার বাড়ি ছিল। আমি একটি কুঁড়ে ঘরে একাকি থেকেছি। আমি বাঁশ, ওক, কাঁঠাল গাছ ও সেগুন গাছ রোপন করি।’

এদিকে মইরাংথেম লইয়ার এ কার্যক্রমকে সহায়তা দিয়ে আসছেন বনকর্মকর্তারা। তারা জানিয়েছেন, মইরাংথেমের তৈরি করা বনে ১০০ প্রজাতির গাছ আছে। যার মধ্যে বাঁশেরই আছে ২৫টি ভিন্ন প্রজাতি। তার এ বনে বাস করে হরিণ, সজারু এবং সাপের মতো প্রাণীগুলো।

সবুজ ও গাছপালার প্রতি তীব্র ভালোবাসা থাকা মইরাংথেম জানিয়েছেন, বনের প্রসার ঘটানো এবং এর রক্ষণাবেক্ষণ করা তার আজীবনের লক্ষ্য। যদিও পরিবার ও নিজের ভরণ-পোষণের জন্য এখন একটি ফার্মেসীতে কাজ করতে হয় তাকে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

কাজাখস্তানে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ভিডিও

২০ বছরের সাধনায় বিশাল অনুর্বর ভূমিকে বানালেন বন

আপডেট সময় ০৬:৩৯:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২২

মানুষ চাইলে কিনা পারে? এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ ভারতের মণিপুর রাজ্যের ইম্ফলের ৪৭ বছর বয়সী বাসিন্দা মইরাংথেম লইয়া। যিনি নিজের প্রবল ইচ্ছাশক্তির মাধ্যমে বিস্তৃত অনুর্বর জমির একটি অংশকে পরিণত করেছেন ৩০০ একরের বিশালাকৃতির এক বনে।

তবে দুই-একদিনে নয়। ৩০০ একরের বন তৈরি করতে তার সময় লেগেছে দীর্ঘ ২০ বছর। এ সময়টায় নির্দিষ্ট ওই জমিতে বিভিন্ন জাতের গাছ লাগিয়েছেন মইরাংথেম লইয়া নামের সেই প্রকৃতিপ্রেমী। তার বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি এখনো চলমান আছে।

ছোটকাল থেকেই প্রকৃতির প্রতি আলাদা ভালোবাসা ছিল মইরাংথেমের। অনুর্বর জমিতে গাছ লাগানোর শুরুর গল্পটা তিনি শুনিয়েছেন সংবাদসংস্থা পিটিআইকে। তিনি বলেন, ‘২০০০ সালের শুরুতে, চেন্নাই থেকে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে আমি কাউব্রু পাহাড়ে যাই। বন উজাড়ের মাত্রা এবং গাছপালার পরিমাণ কম দেখে আমি স্তম্ভিত হয়ে যাই। তখন প্রকৃতিকে কিছু ফিরিয়ে দিতে নিজের ভেতর একটি শক্তিশালী অনুভুতি অনুভব করি।’

এই অনুভব থেকেই রাজধানী ইম্ফলের বন মারু লাংগোলে যান তিনি। সেখানেই খুঁজে পান সেই অনুর্বর জমি। তিনি বলেন, ‘পাহাড়ে চড়ার সময় হঠাৎ করে স্থানটির সন্ধান পাই, যেটি অনুর্বর ছিল এবং তাৎক্ষণিকভাবে আমার মনে হয় বৃক্ষরোপণ, ধৈর্য্য এবং পরিশ্রমের মাধ্যমে এ স্থানটিকে সবুজ ও ঘন বনে পরিণত করা সম্ভব।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই স্থানটি ছয় বছরের জন্য আমার বাড়ি ছিল। আমি একটি কুঁড়ে ঘরে একাকি থেকেছি। আমি বাঁশ, ওক, কাঁঠাল গাছ ও সেগুন গাছ রোপন করি।’

এদিকে মইরাংথেম লইয়ার এ কার্যক্রমকে সহায়তা দিয়ে আসছেন বনকর্মকর্তারা। তারা জানিয়েছেন, মইরাংথেমের তৈরি করা বনে ১০০ প্রজাতির গাছ আছে। যার মধ্যে বাঁশেরই আছে ২৫টি ভিন্ন প্রজাতি। তার এ বনে বাস করে হরিণ, সজারু এবং সাপের মতো প্রাণীগুলো।

সবুজ ও গাছপালার প্রতি তীব্র ভালোবাসা থাকা মইরাংথেম জানিয়েছেন, বনের প্রসার ঘটানো এবং এর রক্ষণাবেক্ষণ করা তার আজীবনের লক্ষ্য। যদিও পরিবার ও নিজের ভরণ-পোষণের জন্য এখন একটি ফার্মেসীতে কাজ করতে হয় তাকে।