ঢাকা ০৩:০০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

চুনারুঘাটে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে কৃষি জমির মাটি কাটার মহোৎসব

হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলা প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে উবাহাটা ইউনিয়নে হাতুরাকান্দি এলাকায় রাত ভর কৃষি জমির মাটি কাটার মহোৎসব চলছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চুনারুঘাট উপজেলার উবাহাটা ইউনিয়নে যাওয়ার প্রবেশ পথে হাতুরাকান্দি এলাকায় পরিবেশ আইন অমান্য করে প্রতিদিন রাত ভর কৃষি জমি উপরিভাগের মাটি কেটে সরবরাহ করে বিক্রি করছে উপজেলা সহ পার্শবর্তী উপজেলা শায়েস্তাগঞ্জ, বাহুবল ও মাধবপুর উপজেলায় ইঁট ভাটা, হাট বাজারে দোকানপাঠ, বাসা-বাড়ি ও শিল্প কারখানায়। ফলে কৃষি জমির উর্বরতা শক্তি নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্য ও হুমকির মুখে পড়েছে।

পরিবেশ আইন অনুযায়ী কৃষি জমি মাটি কাটা দন্ডনীয় অপরাধ। কৃষিবিদদের মতে, জমির উপরিভাগের চার থেকে ছয় ইঞ্চি গভীর মাটিতেই মূল পুষ্টি গুণ থাকে। মাটির এইস্তর কেটে নেয়ায় জমির উর্বরতা শক্তি নষ্ট হচ্ছে। এ জন্য অতিরিক্ত সার প্রয়োগ করে ও কাঙ্খিত ফলন পাওয়া যাবে না। এতে সারের পেছনে কৃষকের অতিরিক্ত খরচ করতে হবে। জেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জামাল উদ্দিন আহাম্মেদ বলেন, সাধারণত একখানি জমিতে প্রায় ৩৫ কেজি ইউরিয়া সার দিতে হয়।

কিন্তু টপ সয়েল কেটে নেওয়া জমিতে এর দ্বিগুণ সার দিতে হয়। ফলন ও স্বাভাবিক চেয়ে কম হবে। এ ভাবে মাটি কাটা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে কৃষি জমি চাষাবাদের অনুপযোগী হয়ে পড়বে। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চুনারুঘাট উপজেলার উবাহাটা ইউনিয়নে হাতুরাকান্দি এলাকায় রাত ভর ফসলি জমি থেকে এক্সকেভেটর (ভেকু) দিয়ে গভীর করে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে ভূমি দস্যুরা। তাদের পেছনে কোনো অদৃশ্য শক্তি রয়েছে বলে এলাকায় চলছে নানা সমালোচনা। উবাহাটা ইউনিয়নের এক অটোরিকশা চালক মোঃ কামাল মিয়া বলেন, ড্রাম ট্রাক, ডায়ানা ট্রাক, পাওয়ার ট্রলি, ট্রাক্টর দিয়ে মাটি বহনের ফলে পথচারী গ্রামীণ সড়ক সহ চুনারুঘাট হতে শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রীজ পাকা সড়ক গুলো অনেক ক্ষতি হচ্ছে। অত্র ইউনিয়নের সচেতন লোক জন নিষেধ করলেও ভূমি দস্যুরা এসব কথা কর্ণপাত করে না।

চলতি ইট উৎপাদন মৌসুমে দেদার সরবরাহ করা হচ্ছে ইঁট ভাটা, শিল্প কারখানা, হাট-বাজার দোকান পাঠ ও বাসাবাড়ি বিট বরাট চলছে। স্থানীয় এলাকার নাম প্রকাশ্যে অনু ইচ্ছুক নিরীহ লোক, চুনারুঘাট উপজেলা প্রশাসনকে মুঠোফোনে অভিযোগ করে ও কোনো লাভ হয়নি। প্রশাসনের নাকের ডগায় এসব ঘটলেও দেখার কেউ নেই। এনিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ থাকলেও প্রভাবশালীদের হুমকি ধামকি ভয় দেখিয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। দুই ফসলি কৃষি জমি ও বিভিন্ন তরিতরকারি ফসল উৎপাদন হলেও জমির মালিকের নানা প্রলোভন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে মাটি কেটে নিচ্ছে ভূমি দস্যুরা।

পএিকা লিখে লাভ কি? প্রশাসন চাইলে অবৈধ ভাবে মাটি কাটা বন্ধ করতে পারে। কিন্তু তারা এ গুলো বন্ধ করতে ইচ্ছুক নয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রুবিন মিয়া বলেন, এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। উক্ত এলাকা থেকে মুঠোফোনে কথা হয়, এলাকার কোনো লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Tag :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ

চুনারুঘাটে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে কৃষি জমির মাটি কাটার মহোৎসব

আপডেট সময় ০৫:০৬:৪৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪

হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলা প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে উবাহাটা ইউনিয়নে হাতুরাকান্দি এলাকায় রাত ভর কৃষি জমির মাটি কাটার মহোৎসব চলছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চুনারুঘাট উপজেলার উবাহাটা ইউনিয়নে যাওয়ার প্রবেশ পথে হাতুরাকান্দি এলাকায় পরিবেশ আইন অমান্য করে প্রতিদিন রাত ভর কৃষি জমি উপরিভাগের মাটি কেটে সরবরাহ করে বিক্রি করছে উপজেলা সহ পার্শবর্তী উপজেলা শায়েস্তাগঞ্জ, বাহুবল ও মাধবপুর উপজেলায় ইঁট ভাটা, হাট বাজারে দোকানপাঠ, বাসা-বাড়ি ও শিল্প কারখানায়। ফলে কৃষি জমির উর্বরতা শক্তি নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্য ও হুমকির মুখে পড়েছে।

পরিবেশ আইন অনুযায়ী কৃষি জমি মাটি কাটা দন্ডনীয় অপরাধ। কৃষিবিদদের মতে, জমির উপরিভাগের চার থেকে ছয় ইঞ্চি গভীর মাটিতেই মূল পুষ্টি গুণ থাকে। মাটির এইস্তর কেটে নেয়ায় জমির উর্বরতা শক্তি নষ্ট হচ্ছে। এ জন্য অতিরিক্ত সার প্রয়োগ করে ও কাঙ্খিত ফলন পাওয়া যাবে না। এতে সারের পেছনে কৃষকের অতিরিক্ত খরচ করতে হবে। জেলা কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জামাল উদ্দিন আহাম্মেদ বলেন, সাধারণত একখানি জমিতে প্রায় ৩৫ কেজি ইউরিয়া সার দিতে হয়।

কিন্তু টপ সয়েল কেটে নেওয়া জমিতে এর দ্বিগুণ সার দিতে হয়। ফলন ও স্বাভাবিক চেয়ে কম হবে। এ ভাবে মাটি কাটা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে কৃষি জমি চাষাবাদের অনুপযোগী হয়ে পড়বে। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চুনারুঘাট উপজেলার উবাহাটা ইউনিয়নে হাতুরাকান্দি এলাকায় রাত ভর ফসলি জমি থেকে এক্সকেভেটর (ভেকু) দিয়ে গভীর করে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে ভূমি দস্যুরা। তাদের পেছনে কোনো অদৃশ্য শক্তি রয়েছে বলে এলাকায় চলছে নানা সমালোচনা। উবাহাটা ইউনিয়নের এক অটোরিকশা চালক মোঃ কামাল মিয়া বলেন, ড্রাম ট্রাক, ডায়ানা ট্রাক, পাওয়ার ট্রলি, ট্রাক্টর দিয়ে মাটি বহনের ফলে পথচারী গ্রামীণ সড়ক সহ চুনারুঘাট হতে শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রীজ পাকা সড়ক গুলো অনেক ক্ষতি হচ্ছে। অত্র ইউনিয়নের সচেতন লোক জন নিষেধ করলেও ভূমি দস্যুরা এসব কথা কর্ণপাত করে না।

চলতি ইট উৎপাদন মৌসুমে দেদার সরবরাহ করা হচ্ছে ইঁট ভাটা, শিল্প কারখানা, হাট-বাজার দোকান পাঠ ও বাসাবাড়ি বিট বরাট চলছে। স্থানীয় এলাকার নাম প্রকাশ্যে অনু ইচ্ছুক নিরীহ লোক, চুনারুঘাট উপজেলা প্রশাসনকে মুঠোফোনে অভিযোগ করে ও কোনো লাভ হয়নি। প্রশাসনের নাকের ডগায় এসব ঘটলেও দেখার কেউ নেই। এনিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ থাকলেও প্রভাবশালীদের হুমকি ধামকি ভয় দেখিয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। দুই ফসলি কৃষি জমি ও বিভিন্ন তরিতরকারি ফসল উৎপাদন হলেও জমির মালিকের নানা প্রলোভন ও ভয়ভীতি দেখিয়ে মাটি কেটে নিচ্ছে ভূমি দস্যুরা।

পএিকা লিখে লাভ কি? প্রশাসন চাইলে অবৈধ ভাবে মাটি কাটা বন্ধ করতে পারে। কিন্তু তারা এ গুলো বন্ধ করতে ইচ্ছুক নয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রুবিন মিয়া বলেন, এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। উক্ত এলাকা থেকে মুঠোফোনে কথা হয়, এলাকার কোনো লিখিত অভিযোগ দিলে আইনগত ভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।