চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিজিবিতে কর্মরত এক সদস্য ও শিক্ষক পরিবারকে ঘিরে মাদকের সংশ্লিষ্টতার তথ্য প্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ করেছে সেই পরিবার। বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে সদর উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের চাটাইডুবি এলাকায় নিজ বাড়িতে এই সংবাদ সম্মেলন করেন বিজিবি সদস্যের পরিবার।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিজিবি সদস্য শহিদুল ইসলাম সুমনের স্ত্রী রহিমা ইয়াসমিন। তিনি বলেন, আমার স্বামী শহিদুল ইসলাম সুমন দীর্ঘদিন ধরে সে সুনামের সাথে সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে বিজিবিতে চাকুরি করছেন। আমার শশুর গ্রাম্য ডাক্তার আলহাজ্ব মো. মেরাজুল ইসলাম মাস্টার স্কুলশিক্ষক হওয়ায় পারিবারিকভাবেও সুনাম রয়েছে। পাশাপাশি সুমনের অন্য ভাইয়েরাও সুনামের সাথে প্রতিষ্ঠিত ও যে যার পেশায় নিয়োজিত রয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এই পরিবারকে ঘিরে শুরু হয়েছে নানারকম ষড়যন্ত্র।
তিনি আরও বলেন, ৪-৫টি মাদক মামলার আসামী চাঁপাইনবাবগঞ্জের চরবাগডাঙ্গা এলাকার মিজানুর রহমান মিজানের সাথে পারিবারিক বিরোধের জের ধরে কিছু অসাধু ব্যক্তিকে দিয়ে বিজিবি সদস্য শহিদুল ইসলাম সুমনের নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মাদক সংশ্লিষ্টতার তথ্য প্রচার করছে। দু:খের বিষয় হলেও স্যতি যে, মাদক ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান মিজান আমার বোনের স্বামী। তারা মাদক ব্যবসায় সুবিধার জন্য আমাদের পাশাপাশি থাকা বাসায় যাতায়াতের রাস্তা চাই। তা না দিতে চাইলে বিরোধের জের ধরেই আমাদেরকে হয়রানি করছে।
রহিমা ইয়াসমিন বলেন, গত কয়েকদিন আগে “মাদক ব্যবসায়ীর থেকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তার উপহার গ্রহণের ছবি ভাইরাল” শীর্ষক একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদটিতে যে ছবিগুলো ভাইরাল হয়েছে, সেই ছবি আমার স্বামী সরবরাহ করেছে এমন সন্দেহ পোষন করেছে তারা। অথচ আমার পরিবার বা স্বামী এই ঘটনার কিছুই জানি না। এরই জের ধরে কিছু অসাধু ভুয়া সাংবাদিক দিয়ে গত পরশু দিন রাতে আমার বাড়িতে পাঠিয়ে হয়রানী শুরু করে। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমার স্বামী ও পরিবারকে নিয়ে নানারকম মাদক সংশ্লিষ্টতার মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগ তোলা হয়। যা সম্পূর্ণভাবে উদ্দেশ্য প্রনোদিত।
আমরা মনে করি, পারিবারিকভাবে আমাদের সুনাম ক্ষুন্ন করতে ও মাদক ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান মিজান তার অপকর্ম ঢাকতে এসব করেছে। আমি ও আমার পরিবার চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি, মাদকের কোন কর্মকান্ডে আমাদের সংশ্লিষ্টতা নেই। এমন কোন প্রমান করতে পারলে আমরা স্বেচ্ছায় শাস্তিবরণ করব। পাশাপাশি দেশের সকল সাংবাদিক সমাজ, আইন-শৃঙ্খলা ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের প্রতি অনুরোধ, এর সত্য উদঘাটনে তদন্ত করার।
সংবাদ সম্মেলনে অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক মেরাজুল ইসলাম মাস্টার বলেন, পারিবারিক বিরোধের জের ধরে আমাদেরকে ভুয়া সাংবাদিক, ভুয়া সিআইডি দিয়ে আমাদেরকে নানারকম ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে মাদক ব্যবসায়ী মিজান। আমাদের পুরো পরিবার এনিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এনিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়ে এসব ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত ও বিচার দাবি করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, বিজিবি সদস্য শহিদুল ইসলাম সুমনের স্ত্রী রহিমা ইয়াসমিন, বাবা আলহাজ্ব মো. মেরাজুল ইসলাম মাস্টার, ভাই আবুল কালাম আজাদ, স্থানীয় ইউপি সদস্য মনিরুল ইসলামসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা।
এনিয়ে বক্তব্য নিতে একাধিক মাদক মামলার আসামী মিজানুর রহমান মিজানের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। বক্তব্য নিতে তার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ও বাসায় গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রইস উদ্দীন জানান, এনিয় অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।